• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

আরেক ফাল্গুনে হুমায়ুন ফরীদি

পাভেল রহমান

  ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৭:৪৮
ছবি : সংগৃহীত

ফাগুনের এক মাতাল হাওয়ার দিনে প্রকৃতি যখন নবরূপে সাজার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন বাংলাদেশের শোবিজপাড়ায় উঠেছিল শোকের মাতম। গুণী অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি পাড়ি জমিয়েছিলেন না ফেরার দেশে। সেদিন হুমায়ুন ফরীদি দেহান্তর হলেও তিনি বেঁচে আছেন এখনও অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে।

আবারও এসেছে বসন্ত, ফাগুনের আগুন লাগা রঙে সাজবে প্রকৃতি। এমন বসন্তে হুমায়ুন ফরীদি নেই। তবে এবারের বসন্ত হুমায়ুন ফরীদির জন্য অন্যরকম। এবছর মরণোত্তর একুশে পদক পাচ্ছেন তিনি। কেউ কেউ মনে করেন আরও আগেই একুশে পদক পেতে পারতেন হুমায়ুন ফরীদি। জীবিত অবস্থায় তাকে সেই সম্মান না দেয়া হলেও মৃত্যুর ছয় বছর পর একুশে পদক পাচ্ছেন এই বরেণ্য অভিনেতা।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে উত্তাল যখন দেশ তখনই পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখেছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। জন্মের পর থেকেই বেশ ডানপিটে স্বভাবের ছিলেন। পরবর্তীতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নাট্যকার সেলিম আল দীন তাকে বলেন থিয়েটারে যোগ দিতে। দেশের অন্যতম নাট্য সংগঠন ঢাকা থিয়েটারে শুরু হয় হুমায়ুন ফরীদির থিয়েটারচর্চা।

মঞ্চে অভিনয় করেন কীত্তনখোলা, মুন্তাসির ফ্যান্টাসি, কেরামত মঙ্গল, ধূর্ত উই প্রভৃতি নাটকে। কেরামত মঙ্গল নাটকে কেরামত চরিত্রে হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় এখনও আলোচিত ঢাকার মঞ্চে।

টিভি নাটকে হুমায়ুন ফরীদি আলোচনায় আসেন শহিদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুন নির্মিত ‘সংশপ্তক’ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে। কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন ফরীদি। এরপর দীর্ঘসময় তিনি ছোটপর্দায় সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। ২০১২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টিভি নাটকে অভিনয় করে গেছেন। হুমায়ুন ফরীদি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন নব্বইয়ের দশকে।

২০০৪ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন হুমায়ুন ফরীদি। নাট্যাঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে সম্মাননা প্রদান করে। আর এবছর পেতে যাচ্ছেন দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক।

হুমায়ুন ফরীদির জন্ম ১৯৫২ সালে ঢাকার নারিন্দায়। তার বাবার নাম এটিএম নূরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে তার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। ইউনাইটেড ইসলামিয়া গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন তিনি। মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণের পর চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে চলে যান হুমায়ুন ফরীদি।

পিআর/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির প্রয়াণের এক যুগ
X
Fresh