• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

যৌথ প্রযোজনার নামে এখন স্মাগলিং হচ্ছে

আফজাল হোসেন

  ১৫ মার্চ ২০১৭, ১২:৪২

নায়করাজ রাজ্জাক। জীবনে পার করেছেন ছিয়াত্তর বসন্ত। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অবিসংবাদিত অভিনেতা বলতে একমাত্র এই কিংবদন্তিকে বোঝানো হয়। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে মহান নায়ক। তুলে ধরা হলো কিংবদন্তি নায়করাজের জীবনের কিছু কথা।

দীর্ঘ এই পথচলায় চাওয়া-পাওয়া ...

আসলে আমার এই জীবনে আর চাওয়া-পাওয়ার তেমন কিছুই নেই। ছোট্ট এই জীবনে চাইবার আগেই অনেক পেয়েছি। কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা আর দোয়া পেয়েছি। আর রাষ্ট্র আমাকে স্বাধীনতা পদক দিয়েছে, একাধিকবার জাতীয়ভাবে সম্মান দিয়েছে। এটাই অনেক পাওয়া। এর চেয়ে বেশি কিছু আর চাওয়ার নেই আমার।

নিজেকে কিভাবে বিশ্লেষণ করেন ...

আমি একজন সফল শিল্পী। অন্যদিকে একজন বাবা। আর সবশেষে একজন মানুষ। সৃষ্টিকর্তা আমাকে অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছেন। সেজন্য তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নিজেকে পরিপূর্ণ বাঙালি আর বাংলাদেশের শিল্পী ভাবতে খুবই গর্ব হয়। আমি আজ যে এই রাজ্জাক, সেটার পেছনে পরিবার, দেশ আর মানুষের ভালোবাসা যুক্ত রয়েছে। এ জীবন আমার ধন্য ও পরিপূর্ণ।

একজন নায়করাজের সংগ্রামী জীবন ...

১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উত্তাল সময়ে নতুন জীবন গড়তে স্ত্রী এবং সন্তান বাপ্পাকে নিয়ে ঢাকায় আসি। ঢাকা এসেছিলাম শূন্য হাতে। অমানুষিক জীবন সংগ্রাম করেছি। এরপর নায়করাজ উপাধি পেয়েছি। এটি অনেকের কাছে গল্প বলে মনে হতে পারে। অসীম মনোবল, অমানুষিক পরিশ্রম আর মমতার মাধ্যমে ঠিকই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে চেষ্টা করেছি।

নিয়মিত ক্যামেরার সামনে ...

ইচ্ছে আছে নিয়মিত ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবার। কিন্তু ভালো গল্প, চরিত্র আর ছবি কোথায়!

এই সময়ের চলচ্চিত্র জগৎ ...

গর্বের চলচ্চিত্র শিল্প নিয়ে বুকের ভেতর এখন শুধুই আহাজারির শব্দ। সব শেষ হয়ে গেলো। আর সহ্য হয় না! এই শিল্পের আর ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। ভালো ছবি পেলে দর্শক সিনেমা হলে অবশ্যই ছুটে যাবে। এর প্রমাণ ‘মনপুরা’, ‘আয়নাবাজি’সহ অনেক ছবি। নতুন প্রজন্মের যারা নির্মাণে আসছে তারা ভালো করছে। কিন্তু দুঃখ একটাই, তারা বিদেশি পুরস্কার আর উৎসবের জন্যই শুধু ছবি বানাতে চায়।

তাহলে এ সংকট থেকে উত্তরণের উপায় ...

নতুন চলচ্চিত্রকারদের বলব, তোমরা মেইনস্ট্রিমে আসো। চলচ্চিত্রকে বাঁচাও। ভিন্নধারা আর মূলধারা বলে কিছু নেই। এগিয়ে এলে যারা চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করতে মত্ত তারা পালাতে বাধ্য হবে।

ইদানীং তো যৌথ প্রযোজনা ...

যৌথ প্রযোজনার নামে এখন স্মাগলিং হচ্ছে। যৌথ নির্মাণে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু নিয়মনীতি না মেনে এদেশের মেয়েদের অশ্লীলভাবে পর্দায় উপস্থাপন করাটা তো বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না। তা না হলে দর্শক আজ দেশীয় ছবি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিত না।

জীবনের পূর্ণতা ...

এখন তো আর শক্তি নেই, বুদ্ধি দিয়ে যদি চলচ্চিত্র, সমাজ আর দেশের মানুষকে বাঁচাতে পারি তাহলেই আমার জীবন পূর্ণতা পাবে। আর সবার দোয়া চাই, যেন আমার আগামী দিনগুলো সুস্থতা আর সমৃদ্ধিতে ভরে থাকে।

চলচ্চিত্র নিয়ে নতুন কিছু করার ইচ্ছে ...

এ বছর নতুন ছবি নির্মাণের কাজ শুরু করবো। সমাজ সচেতনমূলক পারিবারিক গল্পের ছবি বানাবো। আমাদের দেশে সামাজিক সমস্যার অন্ত নেই। এগুলো ভাবলে আমি খুবই কষ্ট পাই। সেই একান্নবর্তী পরিবারও দেখি না। অন্যদিকে নারী নির্যাতন চলছেই। তাই মার্চ মাস থেকেই এসব নিয়ে জনসচেতনতামূলক ছবির নির্মাণ কাজ শুরু করবো আশা করছি।

আরকে/এএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh