• ঢাকা রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাণিজ্যমেলায় খণ্ডকালীন, পরে স্থায়ী চাকরি

মিথুন চৌধুরী

  ১৪ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:০৬

যোগ্যতা-দক্ষতা প্রমাণের পরীক্ষাগার যেনো বাণিজ্য মেলা। এখানে কত কী লাভ বা ক্ষতি হলো, তাতে কিছু্ই যায় আসে না খণ্ডকালীন নিয়োগ পাওয়া বিক্রয়কর্মীদের। নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দেয়াই মূল টার্গেট। আর নিয়োগকর্তাদেরও আগ্রহ থাকে, মেলা শেষে যোগ্যদের স্থায়ী নিয়োগ দেয়ার।

পণ্যের কার্যকারিতা সম্পর্কে দর্শনার্থীকে জানাচ্ছিলেন আইভি রহমান। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী। আর খণ্ডকালীন কাজ করছেন ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায়। একটি ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানির প্যাভিলিয়নে তার সঙ্গে কাজ করছেন সুমাইয়া, রিনা, ইশিতা প্রমুখ। তাদের সবার বেশভূষা, সাজসজ্জা একই রকম। সবাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। একইরকম চিত্র মেলাজুড়েই।

আইভি বলেন, অভিজ্ঞতা নিতেই কাজ করছি। এই প্রতিষ্ঠান থেকে সার্টিফিকেট দেয়া হবে। তাছাড়া পরীক্ষা শেষে সময়টা কাজে লাগাতে পারছি, বাড়তি উপার্জনও হচ্ছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজেকে একটু ঝালাই করে নিতেই বাণিজ্য মেলায় কাজ করছেন ইডেন মহিলা কলেজের সামিয়া খানম।

সামিয়া জানান, প্রতিনিয়ত বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছি। নানা রকম ক্রেতা সামাল দিতে হচ্ছে। কাজের পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা হচ্ছে-এটা পেশাজীবনে কাজে আসবে। যদি দক্ষতা প্রমাণ ও টার্গেট পূরণ করতে পারি, চাকুরিও জুটে যাবে নিশ্চয়ই এখানে।

ঢাকা সিটি কলেজের মার্কেটিংয়ের শিক্ষার্থী শিমুল খান বলেন, বাণিজ্য মেলায় কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি উপার্জনের সুযোগ মিলছে। এটা আত্মনির্ভরশীল হতে প্রেরণা জোগাচ্ছে। তাছাড়া, কাজের ধরন সম্পর্কেও ধারণা হচ্ছে।

শাওন খন্দকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছেন। গেলোবারও বাণিজ্যমেলায় কাজ করেছেন তিনি। এবার ইউনিলিভারের প্যাভিলিয়নে অপারেশনাল সুপারভাইজর হিসেবে আছেন। তিনি মনে করেন, এভাবে খণ্ডকালীন কাজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ হয়, যা চাকরির কাজে আসে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী রেজাউল বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতাও জরুরি। ফলে এখানে কাজ করা আমার কাছে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো। অলস সময় কাটানোর চেয়ে কাজের মধ্যে থাকলে দক্ষতা বাড়ে। আর কাজ শেখার জন্য বাণিজ্যমেলার খণ্ডকালীন চাকরি উত্তম বটে।

বাণিজ্যমেলায় খণ্ডকালীন চাকরিরত শিক্ষার্থীদের কাজে সন্তুষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিরাও। নতুনেরা ভালো করছেন। তাদের উদ্যম আছে, পাশাপাশি কাজ শেখার প্রবল আগ্রহও আছে। এ কারণে সহজেই সমন্বয় করা যাচ্ছে-এ রকম তথ্যই জানা গেলো মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকদের কাছ থেকে। এদের মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্তারা জানালেন, সার্কুলার দিয়ে নিয়োগের চেয়ে বাস্তবতা দিয়ে অনেক সময় নিয়োগ সহজ হয়।মেলা থেকে প্রতিবার’ই আমরা মেধাবী ও যোগ্য লোককে চাকরিতে নিয়ে থাকি। যেহেতু তাদের আমরা পুরো মাসজুড়ে মনিটর করতে পারি, তাই ঠিকই বুঝতে পারি, মূলত এ কাজের যোগ্য কারা।

এবারের মেলায় ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৪৪৭ বর্গফুট জায়গার মধ্যে ৬ লাখ বর্গফুট এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ৫৮০টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। এর সঙ্গে অন্যান্য স্থাপনাও রয়েছে। অংশগ্রহণকারী এসব প্রতিষ্ঠানে গড়ে ২৮ জন করে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এ হিসাবে মেলায় মোট কাজ করছেন ১৭ হাজারের বেশি প্রতিনিধি। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ কোম্পানির স্থায়ী প্রতিনিধি রয়েছে। বাকি ৭০ শতাংশ খণ্ডকালীন। এদের সিংহভাগ ঢাকা, জগন্নাথ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। যাতায়াত সুবিধা, দুপুরের খাবার ও বিকেলের নাস্তা ছাড়া মাসে প্রতিজন পাবেন ১০ হাজার টাকা বা তারও বেশি সম্মানি।

১ জানুয়ারি শুরু হওয়া ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা চলবে আসছে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। মেলা চলে প্রতিদিন সকাল ১০টা-রাত ৮টা পর্যন্ত।মেলায় ঢুকতে টিকিটমূল্য বড়দের জন্য ২০ টাকা এবং ছোটদের জন্য ১০ টাকা। এছাড়া অনলাইনেও মেলে টিকিট।

এমসি/এসজেড

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh