• ঢাকা বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ

দু’পা গেলো বাবার, এখন মিলছে হুমকি

শিপলু জামান, ঝিনাইদহ

  ২২ নভেম্বর ২০১৬, ১৩:০৯

মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করতে গেলে বখাটেদের হামলায় দুই পা হারিয়ে নিঃস্ব বাবা শাহানূর বিশ্বাস। এখন বোনাস হিসেবে মিলছে বখাটেদের হুমকি। এরইমধ্যে এক আসামির ভাই কালীগঞ্জের নলভাঙ্গায় গিয়ে শাহানূরের বড় ভাই সামাউল বিশ্বাসকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।

১৬ অক্টোবর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার নলভাঙ্গা গ্রামে বখাটেরা শাহানূর বিশ্বাসকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। শাহানূরের পরিবারের অভিযোগ, ওই ঘটনায় প্রথমে মামলা নিতে চায়নি পুলিশ। পরে শাহানূরের আত্মীয় মো. ইয়াকুব আলী ইয়াকুব সাতজনকে আসামি করে প্রথম মামলা করেন এবং ১৬ জনকে আসামি করে দ্বিতীয় মামলাটি করেন তার ভাই মহিনূর। দুই আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও
বাকি আসামি ধরছে না পুলিশ।

শাহানূর বিশ্বাসের স্ত্রী আর্জিনা খাতুন বলেন, মামলার এক নম্বর আসামি মো. কামাল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। আসামিদের সবাই কামালের লোক।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, মামলার এক নম্বর আসামি মো. কামালকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কামালের ভাই আজাদ গ্রেপ্তার হয়েছেন।

এদিকে যুবলীগ নেতার এমন নৃশংসতায় জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে থানা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম জানান, ব্যক্তির দোষের দায় তো দল নেবে না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুবই তৎপর। কামালকে ধরা পড়তেই হবে। সে একটা জঘন্য কাজ করেছে। এমপিও খুব বকেছেন কামালের লোকজনকে।

আর্জিনা খাতুন জানান, এতদিন শাহানূর উপার্জনে পাঁচজনের সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চলত। এখন পা হারিয়ে সেই মানুষটা যদি ঘরে পড়ে থাকে তাহলে আমরা বাঁচবো কিভাবে। হামলাকারীরা আমার স্বামীর ডান পা চারভাগ ও বাম পা তিনভাগ করে ফেলে। গোড়ালির রগ কেটে দেয়। তাকে যশোর সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে দুই ব্যাগ রক্ত দিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। সেদিনই রাত ১০ টার দিকে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে আসি। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন হয় তার। এরপর গত ২৯ অক্টোবর বাম পায়ের অবস্থা খারাপ হওয়ায় দু’টি পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।

তিনি বলেন, এ ঘটনার পরও পুলিশ মামলা নিতে চায় নাই। পরে মিডিয়ার চাপে পড়ে তারা মামলা নিলেও আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না। উল্টো আমাদের বাড়ি গিয়েই অস্ত্র খুঁজছে।

আর্জিনা বলেন, সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া মেয়েটির স্কুলে যাওয়া পুরোপুরি বন্ধ। তার বড় মেয়ে যশোর মহিলা কলেজে সম্মান প্রথম বর্ষে পড়তেন। প্রায় ২৩ মাইল দূরে কলেজ। বখাটেদের উৎপাতে তিনি লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছেন।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh