• ঢাকা বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হাওরে নেই ঈদ আনন্দ

তানভীর হায়দার, কিশোরগঞ্জ

  ২৪ জুন ২০১৭, ২০:২৮

আগাম বন্যায় কিশোরগঞ্জের হাওরের কৃষকরা হারিয়েছেন তাদের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বোরো ফসল। তাই এবার ঈদের আনন্দ নেই হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারে। পুরো হাওরে যেন চলছে হাহাকার। আর কয়েকদিন পরেই ঈদ। কিন্তু অর্থাভাবে কৃষক পরিবারদের মুখে নেই হাসি। ফলে হাওরের ব্যবসা বাণিজ্যেও চলছে চরম মন্দাভাব।

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার কমলভোগ গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই ধার দেনা করে এবার চার একর বোরো জমি আবাদ করেছিলেন। ওই জমিতে যে ধান হতো তা দিয়ে আট সদস্যের পরিবার নিয়ে সারা বছর চলার কথা ছিল তার। কিন্তু আগাম বন্যায় তার পুরো জমিই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখন খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন আব্দুল হাইয়ের পরিবার।

কেবল কৃষক আব্দুল হাই নয়, হাওরের হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারে ঈদ আনন্দ নেই। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ফসল হারিয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন। অনেক কৃষক মহাজনী ও এনজিও ঋণের কিস্তির চাপেও রয়েছেন দিশেহারা। পরিবারের এমন অভাব দেখে শিশু-কিশোরও যেনো বড় হয়ে গেছে। ঈদের নতুন পোশাকের জন্য কোনো আবদার নেই তাদের।

ডুবি গ্রামের কৃষাণী লতিফা বেগম জানালেন, তার স্বামী কামরুল জামান এবার পত্তন নিয়ে ৩৩ কানি জমি করেছিলেন। ২ লাখ টাকা ঋণ আছে তাদের। ঈদে পরিবারের শিশুসন্তানদের জন্য নতুন জামা কিনবেন সেই সামর্থ্য নেই তাদের। খেয়ে না খেয়ে তারা এখন বেঁচে আছেন। সহযোগিতা করার কেউ নেই। যারা জাকাত-ফেতরা দিতো তাদের ঘরেও খাবার নেই। ঈদের দিন যে একটু ভালো খাবার খাব তার আশাও নেই।

জয়শিদ্ধি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুনির উদ্দিন জানান, অকাল বন্যায় ফসল ডুবে যাওয়ায় এবার হাওরের প্রায় শতভাগ কৃষকের ঘরে অভাব। তাদের ঘরে কোনো ঈদের আনন্দ নেই।

এদিকে কৃষকরা কেনাকাটা না করায় কাপড়সহ বিভিন্ন জাতের দোকানে ব্যবসায়ীরা ক্রেতা পাচ্ছেন না। এতে হাওরের বাজারগুলোতে ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, এরই মধ্যে ৬৫ হাজার পরিবারের মধ্যে ৩০ কেজি করে চাল ও ৫০০ টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। আর ঈদের আগেই জেলার ১৩টি উপজেলার ৮৩ হাজার ৮শ’ ৪৪টি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হবে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh