• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

শিরিনের পরিবারে ঈদের আনন্দ বেদনায় রূপ নিলো

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট, চট্টগ্রাম

  ২০ জুন ২০১৭, ২১:০০

শিরিন আকতার চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা থেকে আত্মীয়ের বাড়ি মহানগরীর বেটারী গলিতে এসেছিলেন ঈদের কেনাকাটা করতে। কেবল নিজের নয়, ভাইবোনদের জন্যও কেনাকাটা করার দায়িত্ব ছিল তার।

পটিয়ার চক্রশালা গ্রামের মৃত ফজলুল করিমের কন্যা শিরিন কেনাকাটা শেষে বাড়ি ফিরে ভাইবোনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ-উল্লাসে মাতিয়ে তুলবে পুরো বাড়ি এমন প্রত্যাশাই করেছিলেন পরিবার ও আত্মীয়রা।

গেলো ১৩ মে বেটারী গলি থেকে রিকশায় আত্মীয়ের সঙ্গে কেনাকাটা করতে টেরিবাজার যাচ্ছিলেন শিরিন। জামালখান উদয়ন স্কুলের সামনেই মোটরসাইকেল আরোহী দু’ ছিনতাইকারী তার ভ্যানিটি ব্যাগে টান দেন।

ছিনতাইকারীরা ব্যাগ নিতে না পারলেও ভারসাম্য হারিয়ে রিকশা থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে যান শিরিন। এতে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। হৈচৈ শুরু হলে ছিনতাইকারীরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।

আহত শিরিনকে মাউন্ট হাসপাতালে নেয়া হলে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ-চসিক হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়। সিটি স্ক্যান করে তাকে আইসিউতে রাখতে বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

চসিক হাসপাতালের আইসিউতে সিট না থাকায় পাশের সিএসটিসি ক্লিনিকের আইসিউতে নেয়া হয় শিরিনকে। সেখানে ৪ দিনের বিশাল অংকের খরচ চালানোর অক্ষমতায় ফের তাকে নেয়া হয় চসিক’র আইসিউতে।

৩ দিন মৃত্যুযন্ত্রণায় ভুগে মঙ্গলবার পরিবার ও আত্মীয়দের ঈদের আনন্দকে বেদনার চাদরে ঢেকে দিয়ে ২৬ বছরের শিরিন চলে যান না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে পরিবার আত্মীয়দের মাঝে।

বেটারী গলিতে বসবাসরত শিরিনের আত্মীয়া নবুয়াত আরা সিদ্দিকা আরটিভি অনলাইনকে জানান, শিরিন প্রতিবছর রমজানে আসতেন ঈদের কেনাকাটা করতে। এবার এসে তিনি ফিরে গেলেন মরদেহ হয়ে।

তিনি জানান, ঈদের নতুন জামা পরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠতেন তিনি। এবার রঙিন পোশাকের বদলে সাদা কাফনে পারিবারের কাছে ফিরে গেলেন তিনি।

তিনি ক্ষোভের সঙ্গে জানান, এ ঘটনার পরও পুলিশের পক্ষ থেকে জামালখান এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়নি। প্রতিনিয়ত এ জায়গায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। অথচ প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

এ ঘটনায় মামলার পর গেলো ১৮ জুন সন্ধ্যায় ওই এলাকা থেকে দু’ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে চকবাজার থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত মোহাম্মদ ইউনুস প্রকাশ সুমন ও মোহাম্মদ মোস্তাফা এখন কারাগারে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চকবাজার থানার উপ পরিদর্শক মোহাম্মদ আতিক জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। শুনানি শেষে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে তারা এ ঘটনায় জড়িত কিনা?

তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত দু’জনই চিহ্নিত ভাসমান ছিনতাইকারী। মহানগরীর বিভিন্ন জায়গায় ছিনতাই কর্মকাণ্ড চালান। তারা বিভিন্ন ছিনতাই মামলার আসামি। এর আগে ধরা পড়ে কারাভোগও করেছেন তারা।

কে/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh