• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

পর্যটন শিল্পের নতুন দুয়ার খুলবে মেরিন ড্রাইভ (ভিডিও)

সাইফুর রহিম শাহীন, কক্সবাজার

  ০৪ মে ২০১৭, ১২:৫৭

পর্যটন শিল্পের নতুন দুয়ার খুলতে যাচ্ছে কক্সবাজারে। কলাতলী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ মে কক্সবাজার আসছেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর শেখ হাসিনার কক্সবাজারে এটি পঞ্চম সফর।

এ মেরিন ড্রাইভ সড়ক উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী টেকনাফ উপজেলার সাবরাংয়ে প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। তাই শেষ মুহূর্তে এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়ন ১৬ ইসিবি।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সরকারের সময়ে ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কটি নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।তখন প্রকল্পের প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০৩ কোটি ২১ লক্ষ টাকা। এ সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগ কক্সবাজার কলাতলী পয়েন্ট থেকে সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করে। সওজ বিভাগের ঠিকাদার কর্তৃক নির্মিত কলাতলী মোড় থেকে পাইওনিয়ার হ্যাচারী পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক সাগরের প্রবল ঢেউয়ের ধাক্কা সামলাতে না পেরে সাগরে বিলীন হয়ে যায়।

পরবর্তীতে মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয় সেনাবাহিনীর প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়নকে। বর্তমানে সড়কটি ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য থেকে বেড়ে ৮০ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা তিন ধাপে কাজ শুরু করেন। প্রথম ধাপের কাজ ২০০৮ জুনে শেষ করেন। দ্বিতয়ীয় ধাপে ২০০৮ জুন শুরু করে ২০১৬ সালে এসে কাজ শেষ করেন। তৃতীয় ধাপে ১ জুলাই ২০১৬ থেকে ৩০ জুন ১৮ সালের দিকে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেনাবাহিনীর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এক বছর এক মাস আগে কাজ শেষ করেছেন তারা।

১৬ ইসিবির প্রকল্প পরিচালক মেজর নাহিদুল ইসলাম জানান, কাজের গুণগতমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগের সদস্যরা মূল সড়ককে তিন ধাপে ভাগ করে। প্রথম ধাপে কলাতলী থেকে ইনানী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে ইনানী থেকে শিলখালী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার ও তৃতীয় ধাপে শীলখালী থেকে টেকনাফের সাবরাং পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ করেছে।

তিনি আরো জানান, পুরো মেরিন সড়কটি নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৪০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

সওজ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এই বড় বরাদ্ধে নির্মাণাধীন মেরিন ড্রাইভ সড়কের দুইপার্শ্বে থাকবে ওয়াক ওয়ে, পর্যটকদের সুবিধার্থে থাকবে সড়ক জুড়ে ফ্রেক্সিবল পেভম্যান, শেড, গাড়ি পার্কিং ও মহিলা পর্যটকদের চেঞ্জিং রুম। ৮০ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে তিনটি বড় আরসিসি সেতু, ৪২টি কালভার্ট, ৩ হাজার মিটার সার ড্রেন ও ৫০ হাজার মিটার সিসি ব্লক ও জিও ট্যাক্সটাইল থাকবে।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া জানান, মূল প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের পথে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাংসদ আব্দুর রহমান বদি বলেন, ‘কক্সবাজারবাসীর স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়কটি প্রথমে জেলা শহর থেকে উখিয়া উপজেলার ইনানী পর্যন্ত নির্মাণ করার পরিকল্পনা ছিল। আমি নবম জাতীয় সংসদে প্রস্তাব দেই, সড়কটি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সম্প্রসারণের জন্য।

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এক বছরেই মেরিন ড্রাইভ সড়ক ৪৮ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলোমিটারে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে সড়কটিতে চলছে শেষ মুহূর্তের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝেও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে উচ্ছ্বাস। বর্তমান সরকারের নানা পদক্ষেপ কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পসহ দেশের অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা।

জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh