• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

চট্টগ্রামে ৪২ নিখোঁজের ব্যাপারে তৎপর পুলিশ

জয়নুল আবেদীন, চট্টগ্রাম

  ২৩ মার্চ ২০১৭, ১৫:০৬

মিরশরাই ও সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানা সন্ধান পাওয়ার পর চট্টগ্রামে নিখোঁজদের ব্যাপারে বিশেষভাবে তৎপর হয়ে উঠেছে নগর ও জেলা পুলিশ। নগর পুলিশের তালিকায় ৬০ থেকে ৬৫ জনের নিখোঁজ থাকলেও মূলত ১৪/১৫ জনের ব্যাপারে তৎপর হয়ে উঠেছে পুলিশ। আর জেলায় ১৭৬ জন নিখোঁজের তালিকায় থাকলেও মূলত ২৭ জনের ব্যাপারে বিশেষ খোঁজ নিচ্ছে জেলা পুলিশ।

চলতি মাসের ৭ তারিখে কুমিল্লায় গ্রেপ্তার দু’জঙ্গি হাসান ও জসিমের স্বীকারোক্তিতে মিরশরাইয়ের গোভানিয়া এলাকায় জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় জেলা পুলিশ। এই জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ২৯টি ছোটবড় গ্রেনেড, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ। এ দু’অভিযানে জসিম, হাসান ও নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় আস্তানার বাড়ির মালিককেও।

এর কিছুদিন পার হতে না হতেই সীতাকুণ্ডে বড় দু’জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। ১৫ মার্চ সীতাকুণ্ডের নামারবাজার এলাকায় সাধন কুঠিরে বাড়ির মালিক ও তার এক সহযোগীর সহায়তায় জহিরুল হক ওরফে জসিম ও রাজিয়া সুলতানা ওরফে আর্জিনা নামের দু’জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অবশ্য এর আগে এই বাড়ি থেকে আরো দু’জঙ্গি পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তার দু’জনের স্বীকারোক্তিতে সীতাকুণ্ডের প্রেমতলায় ছাড়ানীড় নামে বাড়িতে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ।

সারারাত ঘেরাও করে রাখার পর ১৬ মার্চ সোয়াত ও পুলিশের চূড়ান্ত অভিযানে আত্মঘাতী বোমায় দু’জনসহ ৪ জঙ্গি নিহত হয়। আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় এক শিশুর মরদেহ। নিহত দু’জঙ্গি কামাল হোসেন ও তার স্ত্রী জোবায়দার পরিচয় পাওয়া যায়। নিহত শিশুটি এই দম্পতির বলে জানায় পুলিশ। ওই বাড়িতে নিহত অপর দুই যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা এই দু’যুবক মিরপুর থেকে নিখোঁজ ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্র আয়াত আল হাসান এবং রাফিদ আল হাসান। তারা দুজনই সম্পর্কে খালাতো ভাই।

সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানায় নিখোঁজ দু’জন নিহত হবার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে নগর ও জেলা পুলিশ। চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ আরটিভি অনলাইনকে জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১শ’ ৬ জন নিখোঁজের তালিকা আমাদের কাছে আছে। রাজধানীর রায়েরবাজার পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত গুলশান হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড নুরুল ইসলাম মার্জানের নামও রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

১০৬ জনের মধ্যে ৬০ জনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া গেছে তবে বাকিদের ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নিখোঁজদের মধ্যে অনেকেই এক বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ রয়েছে। এ ৬০ জনের কেউই জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত নয় বলে জানান তিনি ।

সীতাকুণ্ডে কুমিরায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭১ জন নিখোঁজ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এদের মধ্যে ৪০ জনের পূর্নাঙ্গ তথ্য পাওয়া গেছে। এই চল্লিশ জনের কেউ জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়। নিখোঁজ অন্যান্যদের ব্যাপারে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তাছাড়া নিখোঁজরা আগে কাদের সঙ্গে চলাফেরা করতো তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষে জেলায় মোট ২৭ জনের ব্যাপারে বিশেষভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল বাহার জানান, নগরীর নিখোঁজদের ব্যাপারে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। মূলত নগরীতে নিখোঁজের তালিকায় ৬০ থেকে ৬৫ জনের নাম রয়েছে। এদের সবাই জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়। তবে এদের মধ্যে ১৪ থেকে ১৫ জনের ব্যাপারে বিশেষভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

এরই মধ্যে ২০ মার্চ নগরীর আকবর শাহ থানাধীন কাট্টলী এলাকায় দুটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান চালায় পুলিশ। আড়াই ঘণ্টা অভিযান শেষে ওই দু’বাড়ি থেকে কিছু পাওয়া যায়নি এবং কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

তাছাড়া ১৮ মার্চ নগরী লালখান বাজার হেফাজত নেতা মুফতি ইজহারের মাদ্রাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এই মাদ্রাসা থেকেও কাউকে আটক করা হয়নি। অবশ্য পুলিশ জানিয়েছে সারাদেশে জঙ্গি অভিযানের অংশ হিসেবে এই দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh