• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাংলা-ভারত সম্পর্ক সর্বব্যাপী করে পাক নয়া মাত্রা

মনজুরুল আহসান বুলবুল

  ১৩ জুলাই ২০১৭, ১৮:২৩

গুয়াহাটি রাজ ভবনে আনুষ্ঠানিকতা শেষে নিচতলায় যখন নৈশভোজে মিলিত সবাই, কে একজন বললেন রাজ ভবনের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র।

ছুটে গিয়ে যে শৃঙ্খলিত ব্রহ্মপুত্র দেখা গেল তার সঙ্গে বাংলাদেশের বুক জুড়ে বর্ষার উন্মত্ত ব্রহ্মপুত্রকে মেলানো কঠিন।

একটু আগে দেয়া বক্তব্যে রাজ্যপাল বানওয়ারী লাল পুরোহিত বলছিলেন : বাংলাদেশ আর ভারত, বিশেষত ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সম্পর্ক এমন অসংখ্য নদীর পানি দিয়ে যেভাবে একাকার সে বন্ধন কোন বাঁধ বা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ভাগ করা অসম্ভব।

বাংলাদেশের গা-ঘেঁষা অসমের রাজধানীতে ২ জুলাই থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্ক নিয়ে মৈত্রী সংলাপের বিভিন্ন অধিবেশনে এই বিষয়টিই জোর দিয়ে আলোচিত হলো।

এর পাশাপাশি আলোচনায় অবশ্যই ছিল জঙ্গীবাদ, উগ্রবাদসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কৌশলও। এটি ছিল সংলাপের নবম আসর।

বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট আর স্টেট ইনোভেশন এ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন আয়োগ- সিটা; ছিল এই সংলাপের যৌথ আয়োজক।

সংলাপের উদ্বোধনী দিনেই পরবর্তী আলোচনার পথ রেখা নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি স্পষ্ট করেই বলেন : বাংলা - ভারত সম্পর্ক অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে এখন বিশাল উচ্চতায়। দুই প্রধানমন্ত্রীর সফরে তা আরও ব্যাপকভাবে দৃশ্যমান।

জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর সহমত প্রকাশ করে বলেন, একটা স্থিতিশীল ভারতের জন্য বিশেষত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। আর এজন্য বাংলাদেশের সহযোগিতার কোন বিকল্প নেই। তিনি দৃঢ়ভাবেই বলেন বাংলাদেশের বর্তমান সরকার এই সহযোগিতার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলা-ভারতের এই সম্পর্ক আরও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে দু’দেশের দুই নেতা শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদিকে আরও সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আরও সাহসী হতে হবে।

অসমের তরুণ মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়াল জোর দিলেন গৌহাটি আর ঢাকার সংযোগ আরও বাড়াতে। তিনি তুলে ধরলেন এই সংযোগ সম্প্রসারণে বাংলাদেশ ও ভারত কিভাবে লাভবান হতে পারে সেই চিত্রও।

পরে দু’দিনের আলোচনায় বৈশ্বিক নানা পালাবদলের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক আরও জোরদার করা আরও কেন জরুরি, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ কী এবং তা মোকাবেলার কৌশলগুলোই সামনে আসে।

ভারতের আকাঙ্খাগুলো যেমন তুলে ধরেন শ্রী রাধা দত্ত ও অধ্যাপক ননী গোপাল মোহান্ত, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে কথা বলেন : ড. দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। আলোচনায় যেমন আসে ট্রানজিট সুবিধা পেলে ভারত কীভাবে লাভবান হতে পারে, অন্যদিকে বাংলাদেশও তুলে ধরে ট্রানজিটের জন্য যৌক্তিক ফি এবং অবকাঠামো উন্নয়নের চাহিদার কথা। সংযোগ বাড়ানোর কথাতেই উঠে আসে ভিসা প্রসঙ্গ।

ভারত বাংলাদেশের জন্য বিপুল ভিসা দিচ্ছে, ভিসা পদ্ধতি সহজীকরণ করা হচ্ছে এ জন্য ধন্যবাদ জানিয়েই বলা হয় : বাংলাদেশের সাংবাদিকদের এখনও ভারতে যেতে হয় ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে, ঘরের পাশের দেশেও কোন খবর সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশী সাংবাদিকরা ভিসা পান না। ভিসা দিলেও সমস্যা হচ্ছে রুট নির্ধারণ নিয়ে, নির্ধারিত রুটের বাইরে দিয়ে ভ্রমণ করা যায় না। ভিসা যদি দেয়াই হয় তাহলে সব রুটে দিলে সমস্যা কোথায়, এ প্রশ্ন উঠে আসে।

প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে ভারতে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল দেখাতে হলে সরকারিভাবেই মাত্রারিক্ত ফি নির্ধারিত থাকার বিষয়টি। যুক্তিসঙ্গত সরকারি ফি দিয়ে ভারতের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যেভাবে বাংলাদেশে প্রদর্শনের সুবিধা পাচ্ছে, বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল ভারতে যাতে তেমন সুবিধাই পায় সে দাবি জানান হয় জোরেশোরে।

যৌথ অগ্রযাত্রার চিত্র তুলে ধরে বীণা সিক্রি যখন তার অভিজ্ঞতার ঝাঁপি খোলেন, সঙ্গত কারণেই প্রসঙ্গ নানা দিকে ডালপালা ছড়ায়। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত জোর দেন যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার ওপর। তিনি বলেন পানি বণ্টন, পানি ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা যখন কেন্দ্রীভূত থাকে তখন সম্পর্কটি কেবল দাঁড়ায় দেয়া না দেয়ার ক্ষেত্রে। কিন্তু যদি পানি ব্যবস্থাপনা বা নদী ব্যবস্থাপনার প্রসঙ্গটি আসে তখন পারস্পরিক দায়িত্ব ও করণীয় নির্ধারণ করা যায়। নদী ব্যবস্থাপনার এই প্রস্তাবনায় সহমত আসে অপরদিক থেকেও। বাংলাদেশের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মাহবুব আলী জোর দেন সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের চেয়ে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ওপর। পাচারের জন্য ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু যখন সীমান্তে নেয়া হয় তখন বাধা না দিয়ে শুধু সীমান্তে কঠোর হলে সমস্যার সমাধান হবে না, এ বিষয়টির দিকেও নজর দিতে বলা হয়।

বাংলাদেশের তরুণ অর্থনীতিবিদ ড. গোলাম মোয়াজ্জেম স্পষ্টভাবেই তুলে ধরেন দু’দেশের বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতার চিত্র। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটিকে শুধু রাজনীতির সূচকে না মেপে এর সঙ্গে অর্থনীতির চিত্রটিকেও মনে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। পৃথক আলোচনায় ড. দেলোয়ার বলেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতকে একরৈখিকভাবে সব দেখলে চলবে না, অন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে বন্ধুত্বের দৃষ্টিতেই দেখতে হবে।

সংযোগের বহুমাত্রিকতাকে নতুনভাবে সামনে আনার তাগিদ দেন বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রাষ্ট্রদূত পিনাক চক্রবর্তী। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী তুলে ধরেন সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সার্বিক চিত্র। তার বক্তব্যে সড়ক, বিমান, রেল ও নৌপথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে দু’দেশের অনুপুঙ্খ বিবরণ উঠে আসে। ভিসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতীয়দের জন্য বাংলাদেশে ভ্রমণে ভিসা সহজতর পর্যায়ে রয়েছে। ভারতীয় সাংবাদিকদের ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রেও কোন জটিলতা নেই। তিনি ভারতের কাছ থেকে তেমন সহযোগিতাই প্রত্যাশা করেন।

দু’দিনের আলোচনার নানা পর্বে কাঠামোবদ্ধ আলোচনার বাইরে স্পর্শকাতর নানা বিষয় নিয়েও কথা হয়। অসমের বন্ধুরা বারবার বলেন অসমে অবৈধ বাংলাদেশীদের কথা। তবে বাংলাদেশ স্পষ্টই জানায় : এ ধরনের কোন অবৈধ বাংলাদেশীর তথ্য বাংলাদেশ সরকারের হাতে নেই। অথচ অসমের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এটি একটি বড় ইস্যু। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত কথাটি বললেন অসমের রাজ্য রাজনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী কুশীলব, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলে এ বিষয়ে রাজ্য সরকার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে একটি কৌশলপত্র তৈরি করে কেন্দ্র সরকারকে দেবে, পরে কেন্দ্র এ বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে।

আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টিও। বাংলাদেশের তরুণ সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ খুব পরিষ্কারভাবেই বলেন : বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা নেই। তবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং তাদের আন্তর্জাতিক মিত্র বাংলা-ভারত সম্পর্ককে জটিল করতে কখনও কখনও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে, কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারের নীতি হচ্ছে ‘জিরো টলারেন্স।’ এক্ষেত্রে প্রগতিশীল সামাজিক শক্তির ভূমিকার প্রশংসাও করেন তিনি।

দু’দেশের দুই নেতার সাহসী ভূমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন তথ্য জানিয়ে বলা হয় : সাহসের কথাই যদি বলা হয় তাহলে স্বীকার করতে হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস আকাশ সমান। তিনি যেমন সাহসের সঙ্গে রক্তচক্ষু মোকাবেলা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করেছেন, তেমনি সব অপশক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে নিজ সম্পদে পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন।

আলোচনার শেষ পর্যায়ে ভারতের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কণ্ঠস্বরেও শুনতে পাই বাংলাদেশের বর্তমান ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দৃঢ় উচ্চারণ। সমাপনী অধিবেশনে বিজেপি থিঙ্কট্যাঙ্ক, ত্রিপুরার গবর্নর তথাগত রায় তিস্তার পানি প্রসঙ্গে বাংলাদেশের দাবিকে সমর্থন করেই বলেন : উজানে থাকা দেশকে ভাটির দেশের জন্য জল সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে হবে, এটাই আন্তর্জাতিক রীতি। তিস্তার জল নিয়ে সঙ্কট রয়েছে সত্যি। জলের মতো সঙ্কটও শেয়ার করতে হবে। এ জন্য আলোচনা অব্যাহত রাখার তাগিদ দেন তিনি। বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতি সমর্থন করে তিনি চুকনগর গণহত্যার বিচারের প্রতি বিশেষভাবে বাংলাদেশের প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

দীর্ঘ বক্তব্যে বারবার বঙ্গবন্ধুর নানা বক্তৃতার উদ্ধৃতি দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব। তিনি বলেন : বঙ্গবন্ধু যে রকম অসাম্প্রদায়িক, ন্যায়ভিত্তিক একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতও চায় বাংলাদেশ সেই ধারাতেই অগ্রসর হোক। তিনি শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দু’দেশের হাত ধরাধরি করে চলাকে আঞ্চলিক সহযোগিতার এক উজ্জ্বল অধ্যায় বলে মন্তব্য করেন। তিনি যে কথাটি বলে শেষ করেন তা হচ্ছে : ভারতের যে অগ্রযাত্রা নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে শুরু হয়েছে, আমরা জানি, ভারতের জনগণ চায় এই ধারা দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকুক। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশেও বর্তমান সরকার যে ধারায় দেশটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ আরও দীর্ঘদিন সেই ধারাকেই সমর্থন করবে। এক্ষেত্রে ভারতের শুভেচ্ছা এবং শুভ কামনা অবশ্যই থাকবে ।

আনুষ্ঠানিক বক্তব্য, অনানুষ্ঠানিক আলোচনা আর প্রশ্নোত্তরের নানা পর্বে উঠে এসেছে টক-ঝাল-মিষ্টি নানা প্রসঙ্গ। কিন্তু সবার মূল লক্ষ্যটি ছিল একটিই। তা’ হচ্ছে কিংবদন্তী শিল্পী ভূপেন হজারিকার সেই গানের প্রশ্নের জবাব খোঁজা: বিস্তীর্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হা হা কার শুনেও ও গঙ্গা তুমি বইছো কেন? সবাই এই বিষয়ে নিশ্চিত: বাংলা-ভারত সর্ম্পককে প্রকৃত মৈত্রীর রূপ দিতে দুই পারের সাধারণ মানুষের ছোট ছোট স্বপ্ন ও প্রত্যাশাগুলোকে দৃশ্যমান করতে হবে নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তে।

দু’দিনের আলোচনা শেষে গুহাটি ঘোষণায় উঠে আসে বাংলা-ভারত সম্পর্ককে আরও সর্বব্যাপী করে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রধান এ এস এম শামসুল আরেফিন আর ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের প্রধান ক্যাপ্টেন আলোক বনসাল দৃঢ় কন্ঠেই বলেন : ভূপেন হাজারিকার আসামে এই সিদ্ধান্তই হলো পদ্মা-গঙ্গার দুই চোখের জলের ধারাকে ধারন করেই অব্যাহত থাকবে আমাদের পথ চলা।

লেখক : সাংবাদিক

মন্তব্য করুন

daraz
  • নির্বাচিত কলাম এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
‘অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে বাংলাদেশের সম্পর্ককে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র’
সাবেক স্ত্রী তিন্নি সম্পর্কে হিল্লোলের মন্তব্য 
সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ-নেপালের বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্কে সন্তুষ্টি সচিবদের
X
Fresh