বয়স্করা দর্শক, শিশুরাই পাঠক
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে গ্রন্থমেলার জন্য নির্ধারিত অংশের এক স্টল থেকে আরেক স্টলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেলো অমিয় ইসলাম অমিকে। বুয়েট ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে সে। ১৫শ’ টাকা নিয়ে বইমেলার উদ্দেশে বাসা থেকে একাই বের হয়েছে সে। ‘জ্ঞানকোষ’ নামের স্টল থেকে ‘ছোটদের বিজ্ঞান’ নামের বইটি কিনছিল।
বুধবার বিকেলে মেলার প্রাঙ্গণে ঢোকে সে। অমিয় তার বইমেলার আসার ব্যাপারে কথা বললো আরটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
সে জানায়, তাদের বাসা পলাশী সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারে। স্কুল থেকে বাসায় ফিরে টাকা নিয়ে একাই চলে আসে মেলায়।
ষষ্ঠ শ্রেণির এ শিক্ষার্থী জানায়, বই পড়তে তার খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ক বই। ২০টিরও বেশি বিজ্ঞান বিষয়ক বই রয়েছে তার। ক্লাসের পড়া শেষ হলেই এই বই পড়ে সে।
একা বইমেলায় আসতে দিতে আব্বু-আম্মু রাজি হয়েছিলেন কিনা তা জানতে চাইলে অমি বলে, আমার আবদারের কারণে তারা রাজি হন। যদিও প্রথমে মানা করেছিলেন। তাছাড়া আজতো ছুটির দিন না যে বেশি ভিড় হবে। তবে মাগরিবের আজানের আগেই বাড়ি ফিরতে হবে।
সে আরো জানায়, আব্বু-আম্মুর তাকে একা ছাড়ার আরেকটি কারণ হলো বইমেলাতে বই কিনতে দর কষাকষির দরকার নেই। বইতে যে দাম থাকে তা থেকে কমিশনের ভিত্তিতে বেচা হয়।
আব্বুর সঙ্গে মেলাতে এসেছে ৮ বছরের আর্নি। তার আব্বু একরামুল হক আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি শেষের দিনগুলোর কোনো একদিনে আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আর্নির জোরাজুরিতে আজ অফিস থেকেই বাসায় ফিরেই আসতে হলো।’
মেলাতে অমিয় ও আর্নির মতো শিশু-পাঠকের সংখ্যাই বেশি। বয়স্কদের বেশিরভাগই দর্শনার্থী। তারা বই কিনলেও সেগুলো তাদের সঙ্গে থাকা শিশুদের জন্যই কেনেন। তাছাড়া অনেকেই আসে কোনো একটি নির্দিষ্ট বই কিনতে।
এছাড়া এবারের মেলায় পাঠক সমাগম ও বই বিক্রিতে মোটামুটি সন্তুষ্ট স্টল মালিকরা বা প্রকাশকরা। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকায় ও মেলা পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার নিশ্চিত করায় গেলো বারের চেয়ে এবারের মেলা নিয়ে একটু বেশিই আশাবাদী তারা।
কথাগুলো বলছিলেন রূপ প্রকাশনের সত্ত্বাধিকারী কাজী আবদুল হক।
কে/জেএইচ
মন্তব্য করুন