• ঢাকা বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নতুন প্রজন্মের ভাবনা

‘নিজের সত্তাকে বেচে দেবেন না’

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৯:৫৯

স্বাধীনতার ৪৭ বছরে কতটা বদলেছে দেশ? জনগণের মৌলিক অধিকার কি নিশ্চিত হয়েছে? রাষ্ট্র নিয়ে কী ভাবছে তরুণ প্রজন্ম? দেশের তরুণ সমাজের কাছে জানতে হয়েছিল এমন সব প্রশ্ন।

উত্তরে নানা কথা বলেছেন, দেশের আগামী দিনের এই কর্ণধাররা। সংকট নিয়ে ক্ষোভের পাশাপাশি সমাধানও বলেছেন। জানিয়েছেন, দেশকে নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদের কথা। সেজন্যে সুযোগও চেয়েছেন এই তরুণ তুর্কিরা।

আরটিভি অনলাইনের সাপ্তাহিক আয়োজন 'নতুন প্রজন্মের কথা' বিভাগে তাদের মতামত তুলে ধরা হলো। ​

‘বিপ্লব এসেছে তাদের হাত ধরেই’

পৃথিবীর ইতিহাস বলে তরুণ সমাজ রাজনীতির মোড় ঘুরিয়েছে সবসময়। বিপ্লব এসেছে তাদের হাত ধরেই। কিন্তু বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক চিত্রবেশ খানিকটা আলাদা। আমাদের তরুণ প্রজন্মের ব্যাগে, ক্যাপে, নোটবুকে হরহামেশা দেখা যায় বিপ্লবী চে গুয়েভারা, ফিদেল ক্যাস্ট্রো, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে। কিন্তু সরাসরি রাজনীতির প্রতি আগ্রহ খুব কম এই সম্ভাবনাময়ী শিক্ষিত প্রজন্মের। যার কারণে স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষে ছেয়ে যাচ্ছে ছাত্র রাজনীতির বড় একটা অংশ। অবশ্য মন্দের ভাল হিসেবে যে কিছু মুষ্টিমেয় ভালো রাজনীতি বোঝা তরুণ নেতাকর্মী আসছেন না তাও কিন্তু নয়। এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্ধকার সময়ে এরাই অনেকটা হাতে মশাল নিয়ে আলোর দিকে নিয়ে যাচ্ছেন সবাইকে।

আমি নিজেও এই তরুণ প্রজন্মের একজন ক্ষুদ্র প্রতিনিধি। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া রোজ অন্যায় অবিচার গুলো চিন্তাশক্তিকে টলিয়ে দিয়ে যায়। আমি নিজেকে যখন এই সমাজের একজন দাবি করছি তখন এই সমাজের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা অবশ্যই আমার আছে। আমরা সুযোগ পাচ্ছি ইদানীং বেশ ভাল কিছু করার। আশেপাশে আছে অনেক ধরনের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যাদের মাধ্যমে আমরা পৌছতে পারি সুবিধাবঞ্চিত বা এমন মানুষদের কাছে যাদের সাহায্য প্রয়োজন। সরাসরি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ ও হতে পারে ভালো কিছু করতে পারার একটা মাধ্যম কারণ ইতিবাচক পরিবর্তনই পারে আমাদের দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীতে পরিচিতি দিতে।

রুকাইয়া আজমেরী খান অনামিকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়


‘যেমন বাংলাদেশ হবার কথা ছিল, আমরা তেমন বাংলাদেশে নেই’

দেশ, দেশের রাজনীতি নিয়ে ভাবতে গেলেই সংবাদ মাধ্যমের কিছু খবর চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ব্যাংকগুলো থেকে একেরপর এক বিশাল অংকের অর্থ লোপাট, প্রায় নিয়মিত মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর নষ্ট চোখ, হতাশায় আত্মহনন, মারমা দুই তরুণী যারা ধর্ষণের অভিযোগ করায় এক প্রচণ্ড ভয়ে কখনও নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে, পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এসব গাঢ় কালো পর্দার আড়ালে আমার দেশ, সমাজ তার রাজনীতি কতটা আশা-জাগরূক বা ইতিবাচক আমি এখনও বুঝে উঠতে পারি না। মনে হয়, যেমন বাংলাদেশ হবার কথা ছিল, যে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নতুন সমাজ গড়ার জন্য আমাদের পূর্বপুরুষেরা কয়েক প্রজন্ম আত্মদান করেছে, যে গভীর রোগ সারাতে নিজেদের ত্যাগ করেছে আমরা তেমন বাংলাদেশে নেই। সেই রোগ সারেনি, বরং আরও জটিল হয়েছে, নতুন ভিন্ন উপসর্গ নিয়ে হাজির হয়েছে।

মানুষের অধিকার, ন্যূনতম চাহিদা মেটাবার ব্যবস্থা, সামাজিক ন্যায়, মানবিক মর্যাদা এসবের জন্য ব্রিটিশ শাসন থেকে পাকিস্তানের শৃঙ্খল ভেঙে বাংলাদেশের জন্ম। কিন্তু সেখানেও কেবল খাবার, বাসস্থান, স্বাস্থ্য আর শিক্ষার সংস্থান করতে মানুষের নাভিশ্বাস যেমন বাড়ছে, অন্যদিকে মানুষের টাকা অকল্পনীয় উন্নয়ন ব্যয় ও দুর্নীতি, ব্যঙ্ক, শেয়ার কেলেঙ্কারি নানাভাবে লোপাট অব্যাহত। নারী, শিশু নির্যাতনের বিচার না হওয়াটাই যেন এদেশে স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাশীল ও দায়িত্বশীল পদে অবস্থানকারী লোকদের ব্যবহারে পুরনো সামন্তীয় দম্ভ ফুটে উঠছে। তরুণ প্রজন্মের অংশীদার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ঐতিহাসিক পরাম্পরায় এ দেশের তরুণরা যা করে এসেছে তা অব্যাহত রাখা; এই রোগ, স্বপ্নের বাংলাদেশ থেকে যে বিচ্যুতি তা চিন্তায়, কাজে, ঘরে, আড্ডা-অবসরে, রাজপথে প্রতিরোধ করা; নয়ত আমাদেরই হয়ত পচে যাওয়া একটা দেশ ও সমাজের ভার বইতে হবে।

সুবীর বৈরাগী
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা


‘রাজনীতিকে ঘৃণা নয় বরং রাজনৈতিক ইতিহাসকে ধারণ করা উচিত’

ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি তে সমুজ্জ্বল সম্ভাবনাময় একটি রাষ্ট্র বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৪৭ বছরে এদেশের সফলতা ও ব্যর্থতা দুটোই বেশ আলোচিত। রাষ্ট্রের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত রাজনীতি। বলা যায়, রাষ্টের ছোট থেকে বড় সব বিষয় রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত। অন্যদিকে বর্তমান বাঙালি তরুণ প্রজন্মের সামনে দেশের কিছু লজ্জাজনক সামাজিক সমস্যা সাম্প্রদায়িকতা, বৈষম্য, বেকারত্ব যা একবিংশ শতাব্দীর সভ্যতা, আধুনিকতার সম্পূর্ণ বিপরীতে। তরুণ প্রজন্মই পারে আধুনিক চিন্তা, মনন শক্তি দিয়ে কাজের প্রসার ঘটানো, বেকারত্ব ও গোঁড়ামি মুক্ত স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠন। আর তাই প্রয়োজন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা। ইতিহাস বলে, অসাম্প্রদায়িক বাঙালির মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন হয়েছিল মূর্খতা ও রাজনৈতিক অসচেতনতা থেকে।

সাম্প্রদায়িকতা আজ ছড়িয়ে গেছে শিক্ষা, চাকরি সকল ক্ষেত্রে। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা জন্ম দিয়েছে বেকারত্ব ও আরো অন্যান্য সামাজিক সহিংসতার। তাই তরুণ প্রজন্মের প্রথম দায়িত্ব দেশকে ভালোবেসে অস্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থায় রাজনীতিকে ঘৃণা নয় বরং রাজনৈতিক ইতিহাস, জ্ঞানকে ধারণ করা উচিত। এতে করে তরুণ প্রজন্ম আবারো জন্ম দিতে পারবে আদর্শ ছাত্র রাজনীতির। দেশের কাজ গ্রহণ করতে পারবে সঠিক পদক্ষেপ।তবেই তরুণ প্রজন্ম ক্ষমতার লোভে নয় বরং দেশের স্বার্থে যুক্ত হবে রাজনীতিতে।তবেই বদলে যাবে বাংলাদেশ।কারণ তরুণ প্রজন্মই যৌবনের দূত।

তাসনিম তাজিন
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)

‘নিজের সত্তাকে বেচে দেবেন না’

রাজনীতি শব্দটা আজকাল সকলের জন্য একটা লাভজনক ব্যবসার নাম হয়ে গেছে। এরকম হওয়ার কথা নয়। গণতান্ত্রিক দেশে রাজনীতি গণতন্ত্রের অস্ত্র হওয়ার কথা, কিন্তু এখানে মনে হচ্ছে রাজনীতি ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহারের অস্ত্র। স্বজনপ্রীতি আর ব্যক্তিস্বার্থ হচ্ছে বর্তমানের রাজনীতি। দেশে দুই শ্রেণির মানুষ বাস করে, রাজনৈতিক দলের সদস্য আর রাজনৈতিক দলের সদস্য নয়। দ্বিতীয় ভাগের মানুষের কাছে প্রথম ভাগ এক আতংকের নাম আর প্রথমের কাছে দ্বিতীয় দলের কারো অস্তিত্বও নাই। দুই সমান্তরাল রেখার মতন চলে এই দুইদল, অথচ এদের একই সরলরেখায় চলার কথা। মোট কথা ক্ষমতা যাদের হাতে তাদের সাথে জনগণের কোনোই সম্পর্ক নাই। আর এই গ্যাপ পুরণের প্রথম দলের কোনো ইচ্ছা বা প্রচেষ্টা নেই। কারণ রাজনীতি তাদের কাছে ব্যবসা।

জনগণের যাই হোক সেটা অস্বীকার করতেও তাদের বা পাত্তা না দেয়াই তাদের জন্য স্বাভাবিক। কারণ এই ব্যবসা যদি ক্ষমতাবান কারো দলের সাথে করা হয় সেক্ষেত্রে সাতখুন মাফ। প্রশ্ন ফাঁস, মানুষ খুন, পাহাড়ে ধর্ষণ, সমতলে ছাত্ররাজনীতির নামে খুন, ধর্ষণ সব কিছুকে চোখের সামনে দেখে অস্বীকার করা হয় নির্লজ্জভাবে, কারণ স্বীকার করে ব্যবসায় কোনো লাভ নাই। চোখে ঠুলি পড়ে না সাধারণ মানুষ, রাজনীতিবিদদের এটাও মনে রাখা উচিত। প্রতিটা ঘটনা রাজনীতিবিদেরা যেভাবে অস্বীকার করেছেন সেটার পরে তারা কিভাবে দলে বহাল থাকেন সেটাও একটা গুরুত্বপুূর্ণ প্রশ্ন। এই সরকারের শাসনামলের প্রায় ১০ বছরে সরকারিদলের কারো অপরাধের বিচার হয়েছে বলে জানা নেই।

বিশ্বজিত হত্যায় এতো প্রমাণ আছে দলের ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে তাও কোনো ফলাফল তো আসলো না। তনু ধর্ষণ, পাহাড়ে দু'বোনের ওপর অত্যাচার যত বড় অপরাধ হচ্ছে সব কিছুতেই সরকার না হয় আইন শৃংখলা বাহিনীর নাম আসছে আর তার সাথে লাইন ধরে আসছে বিচারহীনতা। প্রতিটা ক্ষেত্রে সরকারের আচরণ প্রচণ্ড নির্লজ্জ, এই নির্লজ্জতা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই জায়গায় তরুণদের নিজের মোরাল ঠিক রেখে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরনের নোংরা রাজনীতি পরিহার করা উচিত। শুধু হলে সিট পাবার জন্য যারা দল করে, পরে তারাই রাজনীতি ব্যবসায় আখের গুটাতে ব্যস্ত হয়ে যায়।

যারা তরুণ, রাজনীতি করতে মন চাইলে করুন, কিন্তু নিজের স্বার্থের জন্য নয় নিজে থেকে পছন্দসই দলে যোগ দেন। রাজনীতি করেন, ভালো কথা। শুধু হলে সিট পাবার জন্য করবেন না। সামাজিক যোগাজযোগ মাধ্যমে তোলপাড় করেন, দেশটাকে নাড়া আপনারাই দিতে পারেন। অন্ধের মতো নোংরামিকে প্রমোট করবেন না। সব কিছুর সমাধান লাঠিসোঁটা না, শুধু দলের ডাকে অন্ধ হয়ে নিজের সত্তাকে বেচে দেবেন না। নিজে থেকে চিন্তা করুন, দেশটার আপনাদেরকে দরকার।

ইফফাত জাহান তুষার
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস

‘বাংলাদেশকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশে পরিণত করা সম্ভব’

খালেদা জিয়ার রায়ের আগে স্বাভাবিকভাবেই একটা আশঙ্কা জেগেছিলো যে, হরতাল-আন্দোলনের ডামাডোলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। অস্বাভাবিক বন্ধ ডেকে আনবে সেশন জট। আশ্চর্যজনক ভাবেই রায়ের পর বিএনপি বা তাদের জোট তেমন আন্দোলনধর্মী প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। এ থেকে খুব স্পষ্ট হয়, দেশে কার্যত কোনো বিরোধী দল নেই। বিরোধী শক্তিহীন রাজনীতির ময়দান আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার চরম শিখরে নিয়ে গেছে। দেশের সবকিছুরই এখন আওয়ামীলীগাইজেশন হচ্ছে। ক্ষমতাকে তোষামোদ করেই চলতে হবে এমন একটা বিশ্বাস ঢুকে গেছে সবার মধ্যে।

এমনকি আন্দোলন-অনশনের মতো কর্মসূচিতেও দেখা যায় চরম মাত্রার তোষামোদ। এই তোষামোদির ছাপ পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও। তোষামোদি আর প্রদর্শনবাদীতার এই সংস্কৃতির নিচে চাপা পরে আছে সত্যিকারের বোধ। দেশপ্রেম এখন শুধুমাত্র স্টেডিয়ামে গিয়ে ক্রিকেট দলকে সাপোর্ট করা, কিংবা মুঠোফোন কোম্পানির সৌজন্যে লাখো কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। অন্যদিকে, ছাত্রদের রাজনীতি বলতে এখন যেন শুধু ক্যাম্পাসে সিনিয়র নেতাদের প্রটোকল দেয়া আর ফেসবুকে ছবি সম্বলিত শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস দেয়াকেই বোঝায়।

সুন্দর গান, সুন্দর সিনেমা এসব কোনো কিছুর দিকেই আগ্রহ নেই এখনকার তরুণদের। সে জায়গায় সুন্দর রাজনৈতিক চর্চার মতো ব্যাপার আশা করাই যায় না। তাই একদম মূল থেকে এ দেশের শিশু কিশোরদের সৌন্দর্যচর্চার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। ক্লাস ফাইভের শিক্ষার্থীর হাতে প্রশ্ন তুলে দিয়ে তাকে অপরাধের প্রথম পাঠ দেয়া বন্ধ করতে হবে। সুন্দরের সত্যিকার সংজ্ঞা জানা একটা প্রজন্ম যখন এ দেশের চালকের আসনে বসবে, তখনই বাংলাদেশকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশে পরিণত করা সম্ভব।


খায়রুল হাসান জাহিন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়


‘সরকার পরিচালনায় তরুণদের অংশগ্রহণ হতাশাজনক’

দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ তরুণ সমাজ। যারা দেশ, সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি নিয়ে নতুন চিন্তা করে, সমাজকে, সুখী সমৃদ্ধ বৈষম্যহীন করে গড়ে তুলতে চায়। যেখানে দূর্নীতি, অপসংস্কৃতির বদলে সৎ এবং ঝঞ্ঝামুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠবে। উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এক দুরন্ত গতির সময় পার করছে, সেই সময়কে আরো এগিয়ে নিতে সবক্ষেত্রে সবধরণের মানুষের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ খুবই জরুরি, সেখানে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পারে তরুণরাই।

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় যে ভিতের ওপর হয়েছিলো, যেই সংস্কৃতির চর্চাকে প্রতিষ্ঠিত করতে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো সেই চর্চা থেকে যোজন যোজন দূরে গিয়ে ব্যাক্তি তথা গোষ্ঠী স্বার্থ বড় হয়ে ওঠায় রাষ্ট্রের উন্নয়নের গতি শ্লথ হয়েছে, সেইসাথে বারবার থমকে গিয়েছে গণতান্ত্রিক চর্চার পথ। সকলের অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের চর্চা ব্যহত হয়ে, অগণতান্ত্রিক গোষ্ঠী রাষ্ট্রক্ষমতা দখল নিতে পারার অন্যতম কারণ তরুণদের সরাসরি রাজনীতিবিমুখতা।

ভোটের রাজনীতিতে যেখানে তরুণরা একটা বড় প্রভাব রাখতে পারে, সেখানে সরকার পরিচালনায় তরুণদের অংশগ্রহন একেবারেই হতাশাজনক। নির্বাচন পদ্ধতি,সরকার পদ্ধতিসহ রাষ্ট্রের বিভীন্ন বিভাগ নিয়ে তরুণদের মতামত ও অংশগ্রহণেরর ভিত্তিতে সরকার পরিচালিত হলে সে সরকার আরো গতিশীল এবং কার্যকরি হয়ে উঠতো বলে মনে করি। তরুণদের সুস্থ রাজনীতির চর্চার জন্যে সবচেয়ে বেশি জরুরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অবাধ রাজনৈতিক চর্চা, নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাংস্কৃতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক তথা গণতান্ত্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।

আরিফুল ইসলাম সাব্বির
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।


‘দেশ যেটুকু এগিয়েছে সেটুকুতে তরুণদেরই বড় অবদান’

তরুণরা সৃষ্টিশীল, দেশপ্রেমিক। আমরা দেখেছি ২০১৩ তে তরুণরাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে তুলেছিলো গণজাগরণ মঞ্চ, এছাড়াও সামাজিক, অর্থনৈতিক, গবেষণা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেখানেই তরুণরা নেতৃত্ব দিয়েছে সেসব কাজে সফলতার হার বেড়েছে।

বর্তমানে আমরা জাতীয় রাজনীতিতে দ্বিদলীয় বৃত্ত দেখতে পাই, যাদের রাজনৈতিক অদুর্দর্শিতার কারণে কখনো ভোটারবিহীন নির্বাচন, কখনো সামরিক শাসকদের ক্ষমতাদখল, কখনো পেছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পায়তারা, এসব রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নও থমকে গিয়েছে বারবার, তবুও দেশ যেটুকু এগিয়েছে সেটুকুতে তরুণদেরই একটা বড় অবদান আছে।

এই মুহূর্তে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক যে সংকট বিরাজ করছে তা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হতে পারে রাজনীতিতে তরুণদের আরো অংশহগ্রহণ বাড়িয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় তরুণদের অংশ নেবার সুযোগ তৈরি করে নেয়া। বারবার রাজনীতির মাঠে বর্ষিয়ানদের পালাবদল বন্ধ করতে নতুন শক্তি তথা তরুণ শক্তিকে জাগ্রত করে তুলতে পারলে রাষ্ট্রের উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক ধারা আরো সমু্ন্নত হবে বলে বিশ্বাস করি।

তারিকুল ইসলাম রাসেল
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

আগামী সপ্তাহের বিষয়- প্রশ্নফাঁসের বাস্তব সমাধান কী?

ধারাবাহিকভাবেই হচ্ছে প্রশ্নফাঁস। ঠেকানো যাচ্ছে না কোনোভাবেই। ধ্বংস হচ্ছে- নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। কিন্তু প্রশ্নফাঁসের বাস্তব সমাধান কী?

আপনার ভাবনা লিখে ফেলুন দুইশ' শব্দে। আর পাঠিয়ে দিন রোববারের মধ্যে। ইমেইল করবেন এই ঠিকানায়- siam33jamil@gmail.com

আরও পড়ুন:

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh