• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জিরানী খাল নাকি নালা! (ভিডিও)

মিথুন চৌধুরী

  ১৯ জুলাই ২০১৭, ১৩:১৫

রাজধানীর পানি নিষ্কাশনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল খালের। নগরের বুকে পাতার শিরার মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা খালগুলো সরু হতে হতে এখন নালায় পরিণত হয়েছে। আবার সে সরু খালগুলো হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের দৈনন্দিন আবর্জনা ফেলার স্থান হিসেবে। ফলে ময়লা জমতে জমতে অনেক খালে সৃষ্টি হয়েছে ময়লাজট, যাতে পানি প্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যেকোনো মাত্রার বৃষ্টি হলেই অচল হয়ে যাচ্ছে খালটি। স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি মান্ডা খাল নামে পরিচিত।

জানা যায়, জিরানী খালটি বালু নদীর একটি অংশ। শীতলক্ষ্যা নদী থেকে প্রবাহিত হয়ে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের ত্রিমোহনী মৌজায় এসে তিনটি খালে মিলিত হয়েছে।

একটি হলো রামপুরা খাল, বালু নদী, জিরানী খাল। ত্রিমোহনী মোহনায় এসে মিলিত হয়ে মান্ডায় গিয়ে মিলিত হয়েছে এ জিরানী খাল। যাতে পানি চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। দুই ধারে যে যার মতো করে মাটি ফেলে দখল করে একে একটি বড় নালার রূপ দিয়েছে।

এর ওপর ঘরের নিত্যদিনের আবর্জনা আর অপ্রয়োজনীয় বস্তু ফেলে একে দিয়েছে একটি ময়লার ভাগারের রূপ।

শুকনো মৌসুমে এই খালটির গুরুত্ব তেমন একটা অনুভব করে না এলাকাবাসী। কিন্তু বর্ষা আসলেই শুরু হয় হাহাকার। ভরাট হওয়া খাল এলাকার পানি সরিয়ে নিতে পারে না প্রত্যাশিত গতিতে।

ফলে জলাবদ্ধতার এক সাধারণ চিত্র থাকে আশেপাশে এলাকায়। খাল দখল, খালের সংযোগ বন্ধ করে দেয়া, প্রশস্ত খাল সংকুচিত করার কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।

এ অঞ্চলের সত্তরোর্ধ্ব বাসিন্দা সারোয়ার হোসেন জানান, আশির দশকে এই খালের প্রশস্ত ছিল ৫০ ফুটের মতো। তবে বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১০ ফুটে। প্রভাবশালীদের দখলের মুখে বর্তমানে এই খাল মৃত প্রায়। আগে এ খালের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২০ কিলোমিটার। বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮ কিলোমিটার। আবার কোনো স্থানে বন্ধ হয়ে গেছে খালের মুখ।

খালের সীমানার জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। আশে-পাশের জায়গা দখল করতে চলছে নির্মাণ কাজ। জিরানী খাল সম্পর্কিত সাইনবোর্ড পাওয়া গেলেও তা ছিল লতাপাতায় ঢাকা। সিটি করপোরেশন খালের সীমানা দেয়াল নির্মাণ করলেও খাল খনন করেনি। ফলে বর্ষা মৌসুমে আশেপাশের নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। খালের বিভিন্ন অংশ ময়লা আবর্জনা পরিপূর্ণ। ওই এলাকায় পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। আশেপাশের বাড়ির বাসিন্দারা তাদের বাড়ি থেকে পয়ঃলাইন সরাসরি খালে ফেলছে।

এদিকে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, খালের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে বাড়িঘর। আর রাস্তা পারাপারে প্রতিটি বাড়ি নিজে উদ্যোগে পাকা সেতু নির্মাণ করে তুলেছে। ফলে এসব সেতুতে আটকে যাচ্ছে ভেসে আসা ময়লা।

খালটি খিলগাঁওয়ের ত্রিমোহনী সীমানার পর থেকে সরু হয়ে গেছে। মান্ডা পর্যন্ত গিয়ে দেখা যায়, সেখানে খালের প্রশস্ত প্রায় ১২ ফুটের কাছাকাছি। তারপরেও অনেকটা দখল হয়ে গেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এসব খালের দায়িত্ব নিয়েও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করছে না ঢাকা ওয়াসা। ফলে এসব এলাকায় একটু বৃষ্টিতে ভেসে ওঠে ময়লা পানি। এতে বেড়েছে মশার উৎপাতও।

এমসি/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh