• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

এবার মৌসুমি ফল পুরো রোজায়

মিথুন চৌধুরী

  ২০ মে ২০১৭, ১৯:৪৫

প্রচণ্ড খরতাপ| জনমনে ওঠেছে নাভিশ্বাস। তবে চলছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। এ সময় আম, জাম, লিচু, কাঁঠালসহ প্রায় সব ধরনের মৌসুমি ফল পাকতে শুরু করে। বাতাসে থাকে মিষ্টি ফলের ম-ম গন্ধ। যুগে যুগে এ মাসকে ঘিরে কবিরা লিখেছেন নানা কবিতা ও পুঙক্তি। পল্লীকবি জসীমউদ্দীন কবিতায় লিখেছেন পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ। তবে এ রসের মাসটি এবারও রমজান মাসের সঙ্গী হয়েছে। কদিন পরই রমজান। রমজানে ইফতারে ফলকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে রোজাদাররা। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আসছে রোজায় স্বস্তিতে দেশি ফল দিয়ে ইফতার করতে পারবে রোজাদাররা।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানীর ফলের আড়ত ও বাজারগুলোতে মৌসুমি ফল আসতে শুরু করেছে। ফুটপাথ, সুপারস্টোর ও পাড়া মহল্লায় দেখা যাচ্ছে নানা জাতের মৌসুমি ফল।

মৌসুমি ফলের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে তরমুজ, বাঙ্গি, আনারস, ডালিম, লটকন, বেল, জামরুলসহ নানা জাতের ফল। বাজারে দেখা যাচ্ছে কাঁচা তাল। অনেকে কাঁচা তালের শাঁস ও ডাব দিয়ে গরমে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন ।

তবে বাজারে খানিকটা লিচু ও আম দেখা দিলেও ব্যবসায়ীরা বলছে পরিপূর্ণভাবে বাজারে লিচু ও আম আসবে জ্যৈষ্ঠের শেষের দিকে। বাজার পাওয়া আম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। যার মধ্যে রয়েছে বেশির ভাগ অপরিপক্ব ও বিদেশি আম। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানের ভিন্ন ভিন্ন জাতের লিচু মিলছে ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা।

প্রতিবছর গরমের নিত্যসঙ্গী তরমুজ ও বাঙ্গি। মৌসুমি ঝড় ও আগাম বন্যায় এ মৌসুমি ফল ক্ষেত্রে নষ্ট হওয়ায় এবার খুব তাড়াতাড়ি বাজার থেকে বিদায় নিচ্ছে। তবে এ পুরো বৈশাখজুড়ে এবার রাজত্ব করেছে কাঁচা আম। প্রতি কেজি আম ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা যায়।

কাওরানবাজারের মেসার্স খোকন ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. জহিরুল জানালেন, আড়তে ছোট থেকে বড় চার ধরনের তরমুজ বিক্রি হয় জ্যৈষ্ঠ মাসজুড়ে। কিন্তু এবার বাজারে সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। প্রতি ১০০ তরমুজ ১২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।

আসন্ন রমজানে দেশি ফল ভোক্তাদের ক্রয়সীমায় থাকবে বলে জানালেন কাওরানবাজারের আড়তদার মইনুল ইলাম। মাসজুড়ে তিনি বিভিন্ন ফলের ব্যবসা করেন। বিশেষ করে কলা ও আনারসের ব্যবসা করেন। তবে মৌসুমে লিচু ও আমের ব্যবসা করেন তিনি।

তিনি জানালেন আসছে রোজা ও ফলের মৌসুম একি সময় হওয়ায় রোজাদাররা দেশি ফলে ইফতার করতে পারবেন। আসতে শুরু করেছে লিচু ও আম। এসময় বাজারে পর্যাপ্ত ফলের সরবরাহ থাকায় কম দামে ফল ক্রয় করতে পারবে ভোক্তারা।

রাজধানীর, হাতিরপুল, কাওরানবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, ফলের স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি অস্থায়ী বেশ কিছু দোকান বসতে শুরু করছে। আপেল, মালটা, বেদানা, আঙুরের মতো ফলগুলোর চাহিদা বেশ কমে যাচ্ছে বলে জানালেন ফল বিক্রেতা আব্দুস সালাম।

সালাম জানালেন, মৌসুমি ফলের সময়টাতে মানুষের আগ্রহও থাকে এই দেশি ফলের দিকে। আপেল, মালটা, বেদানা, আঙুরের মতো ফলগুলোর চাহিদা বেশ কমে যায়।

রাজধানীর বিভিন্ন ফলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আনারস এক হালি মিলছে ৪০ থেকে ১০০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট সাইজের জল ডুবি আনারস ৩০ থেকে ৪০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। ভ্যানে করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মোড়ে মোড়ে এ আনারস কেটে কেটে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুরের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে বাজারে। সব শ্রেণির মানুষের জন্য প্রকার ও মান ভেদে রয়েছে নানা ধরনের খেজুর। বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০ থেকে এক হাজার টাকায়। এর মধ্যে রয়েছে মরিয়ম খেজুর ৮০০-১০০০ টাকা, তিউনিসিয়ার খেজুর ৪০০-৫০০ টাকা, মদিনা খেজুর ২০০-২৫০, ইরানি খেজুর ১০০-১২০ টাকা এবং সাধারণ মানের খোলা খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

এছাড়া রমজানে ইফতারিতে দেশি নানা জাতের কলারও বেশ চাহিদা থাকে। বিভিন্ন ধরনের কলার মধ্যে রয়েছে সাগর কলা, শবরী কলা, বাংলা কলা, চম্পা কলা, নেপালি কলা ইত্যাদি। যা হালি প্রতি ৫ টাকা থেকে ৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

এমসি/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh