• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভেজাল খাদ্যের ব্যবসা হারাম

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৫৭

খাদ্যে ভেজাল একটি অনৈতিক ও অমানবিক কাজ। এগুলো কোনো মুমিনের আচরণ হতে পারে না। ইসলামে এ ধরনের কাজ চরমভাবে নিন্দিত। এতে কয়েক ধরনের অপরাধ জড়িয়ে আছে।

এক. এটি প্রতারণা ও ধোকাবাজি। দুই. এটি মূলত অবৈধ পন্থায় অপরের অর্থ গ্রহণ যা আত্মসাতের শামিল। তিন. ভেজালমিশ্রিত খাদ্য বিক্রয়ের সময় মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কসম করতে হয়। চার. মানুষকে কষ্ট দেওয়া। পাঁচ. মানুষকে শারিরীকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা। এর প্রত্যেকটি অপরাধের জন্য ইসলামে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে।

ইসলামে সব ধরনের ভেজাল-মিশ্রণ হারাম বা নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে আহলে কিতাবরা! কেন তোমরা জেনে-শুনে সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে সংমিশ্রিত করছো এবং সত্যকে গোপন করছো?। ‘ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৭১)

পণ্যে ভেজাল মিশ্রণ করে ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণা করা সম্পূর্ণ অনৈতিক। ইসলামে সব ধরনের প্রতারণা নিষিদ্ধ। আবু হুরায়রাহ (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) বাজারে খাদ্যস্তুপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। খাদ্যস্তুপের ভেতরে হাত দিয়ে দেখলেন ভেতরের খাদ্যগুলো ভেজা। বিক্রেতার কাছে তিনি জানতে চাইলেন, এমনটি কেনো করা হলো? বিক্রেতা বললেন, আল্লাহর রাসুল! বৃষ্টিতে এগুলো ভিজে গেছে। তখন রাসুল (সা.) বললেন, তাহলে তুমি খাদ্যগুলো উপরে রাখনি কেনো? যাতে মানুষ দেখতে পেত। এরপর রাসুল (সা.) বললেন, যে ব্যক্তি প্রতারণা করবে, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। (মুসলিম, হাদিস নং : ১০২)

অন্য এক হাদিসে ব্যবসায়ীকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, ‘যদি তোমার পণ্যদ্রব্যে কোনো দোষ-ত্রুটি থাকে, তবে তা কখনো গোপন করবে না। কারণ, তা গোপন করলে ব্যবসায় বরকত হয় না।’ (বুখারি ও মুসলিম)।

আরেক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করে পণ্য বিক্রি করে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে ফিরেও তাকাবেন না।’ (সহিহ বুখারি)

খাদ্যে ভেজাল দেওয়ার ফলে যে অতিরিক্ত অর্থ আসে তা অবৈধ পন্থায় উপার্জিত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অবৈধ পন্থায় অপরের সম্পদ ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরাতুল বাকারার ১৮৮ নম্বর আয়াতে বলেন- “লা তাকূলু আমওয়ালাকুম বায়নাকুম বিল বাতিল” অর্থাৎ তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ কর না। সম্পদ ভক্ষণের ক্ষেত্রে মূলত দুটি মূলনীতি আছে। এক. বস্তুটি স্বয়ং হালাল হতে হবে। যেমন মদ হালাল নয়। দুই. বস্তুটি হালাল হলেও তা উপার্জনের পন্থাটি বৈধ হতে হবে। যেমন আম একটি হালাল বস্তু। কিন্তু কেউ যদি তা চুরি করে সংগ্রহ করে তবে তা অবৈধ হবে। কেননা উহার উপার্জনের পন্থাটি বৈধ নয়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হালাল বস্তুকে পবিত্র বলে এবং অবৈধ পন্থায় উপার্জিত বস্তুকে অপবিত্র বলে আল কুরআনে উল্লেখ করেছেন।

যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরাতুল আ‘রাফের ১৫৭ নম্বর আয়াতে বলেন- “ওয়া ইউহিল্লু লাহুমুত তায়্যিবাতি ওয়া ইউহাররিমূ আলায়হিমুল খাবায়িছ” অর্থাৎ তাদের জন্য সকল পবিত্র বস্তু হালাল করা হয়েছে এবং সকল অপবিত্র বস্তু হারাম করা হয়েছে”। ভেজালযুক্ত খাদ্যের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ অবৈধ এবং হারাম।

আরও পড়ুন :

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ধর্ম এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাসুল (সা.) যেভাবে ঘুমাতে নিষেধ করেছেন
রাসুল (সা.) রোজা অবস্থায় যেসব কাজ বর্জন করতে বলেছেন
রমজানে রাসুল (সা.) যে চার আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন
রোজা শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়ত কি আবশ্যক
X
Fresh