• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘তোমরা কাউকে মন্দ নামে ডেকো না ও দোষারোপ করো না’

হাফেজ মাওলানা মোঃ নাসিরউদ্দিন

  ০৯ জানুয়ারি ২০১৮, ১৮:০৬

ভালো মানুষ কখনো অশুভ বাক্য বা শব্দ ব্যবহার করে না। করতে পারেও না। কখনো রেগে গেলেও সে খারাপ ভাষা ব্যবহার করতে পারে না। ভালো মানুষের রাগ প্রকাশের ভঙ্গিটাও হয় সুন্দর ও সংযত। পক্ষান্তরে মন্দ মানুষ যখন রাগান্বিত হয় তখন সে ভুলে যায় ভদ্রতা এবং তার আসল রূপ বের হয়ে যায়। সে তখন অশুভ বাক্য ব্যবহার করতে থাকে। সে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে চায়, কিন্তু নিজেই পরাস্ত হয়ে যায়। কেননা সবাই তাকে অভদ্র বলে চেনে ফেলে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে মুমিনদের ভদ্রতা শিক্ষা দিয়েছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন,“ হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কোনো দল যেন অপর কোনো দলকে উপহাস না করে। কেননা যাদের উপহাস করা হল তারা উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং নারীরা যেন অপর নারীদের উপহাস না করে। কেননা যাদের উপহাস করা হল তারা উপহাসকারীর অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরকে দোষারোপ করো না এবং মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহের কাজ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই জালেম।” [সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১১]

দেখুন মক্কার কাফিরেরা নবীজীকে কত কষ্ট দিয়েছে, সাহাবিদের কষ্ট দিয়েছে, কিন্তু যখন আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের বিজয় দান করলেন তখন কাফিরদের প্রতি বিন্দুমাত্রও জুলুম করা হয়নি। তাদের জান-মাল, ইজ্জত সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন এবং মুমিনগণ আল্লাহর আদেশের অনুগত ছিলেন। ইসলাম এসেছে মানুষকে উন্নত চরিত্রের অধিকারী করতে। তাই যারা ইসলামের শিক্ষাগ্রহণ করে তারা হয় ভদ্র ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী।

পবিত্র কোরআনে মুমিনদের আল্লাহতায়ালা বলেন, “যারা পবিত্র মসজিদ থেকে তোমাদেরকে বাধা প্রদান করেছিল, সেই সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদেরকে সীমালঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে। সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না।আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা কঠোর শাস্তিদাতা।” (সুরা মায়েদাহ, আয়াত: ২)

আসুন এ সম্পর্কে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস থেকে জেনে নেই। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপকারী, অশ্লীল ও গালিগালাজকারী হয় না।” (তিরমিজি শরীফ)

এটাই হচ্ছে ইসলামের শিক্ষা। এই শিক্ষাই আমাদের জন্য অনুসরণীয়। কেননা, এর চেয়ে উত্তম শিক্ষা আর হতে পারে না। আজকের এই আধুনিক শিক্ষা এই পর্যায়ে উন্নীত হতে পারেনি। এজন্য কোনো শিক্ষিত মানুষকেও যদি দেখি তিনি তার প্রতিপক্ষকে অন্যায়ভাবে দোষারোপ করছেন এবং বিভিন্ন মন্দ উপাধি ব্যবহার করে তাকে হেয় করার চেষ্টা করছেন, তাহলে তার ওই কাজটা আমরা বর্জন করব। তিনি শিক্ষিত বা ভদ্র বলেই তার অভদ্র আচরণকে আমরা অনুসরণ করব না।

আমাদের আদর্শ ও সুমহান ঐতিহ্য এই নির্দেশনা দেয়। আমাদের আদর্শ আল কুরআন ও নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ। আমরা সাহাবা, তাবেয়ীন এবং ফুকাহা, মুহাদ্দিসীনের আদর্শিক উত্তরাধিকারী। তাহলে আমরা কেন বিভ্রান্ত হব? এই আদর্শ আমাদেরকে আলোকিত পথে নিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে নম্রতা ও কোমলতা বজায় রেখে চলার তৌফিক দান করুন। (আমিন, ছুম্মা আমিন)

কেএইচ/এমকে

আরও পড়ুন-

মন্তব্য করুন

daraz
  • ধর্ম এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh