• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ট্রাম্প-কিমের বৈঠকের জন্য কেন সিঙ্গাপুর পারফেক্ট?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১১ জুন ২০১৮, ১০:৫১

আগামীকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প-কিমের ঐতিহাসিক বৈঠকস্থল হিসেবে সিঙ্গাপুর জুয়াড়িদের পছন্দের তালিকায় ছিল না। অনেকেই ধারণা করেছিলেন এই বৈঠকটি কোরিয়ান অসামরিক জোনে হতে পারে যেখানে গেলো এপ্রিলে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা। সম্ভাব্য বৈঠকস্থল হিসেবে কেউ কেউ সুইজারল্যান্ডকেও বিবেচনা করছিলেন কেননা শিশু বয়সে পড়াশোনার জন্য দেশটিতে চার বছর কাটিয়েছিলেন কিম।

কিন্তু একটু কাছ থেকে দেখলে এই বৈঠকের গুরুত্ব বিবেচনায় সিঙ্গাপুরই যে যথোপযুক্ত সেটা বোঝা যায়। তাই ঐতিহাসিক এই বৈঠকের জন্য ট্রাম্প ও কিম কেন নগর-রাষ্ট্রটি বেছে নিয়েছেন তার ছয়টি কারণ বের করেছে নিউ ইয়র্কভিত্তিক প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী টাইম। নিচে সেই কারণগুলো তুলে ধরা হলো:

১. সিঙ্গাপুর নিরাপদ: ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে এমন একটি ওয়েবসাইট সেফঅ্যারাউন্ড জানাচ্ছে, সিঙ্গাপুরের নীতি, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সার্ভিস প্রথম সারির। আর তাই এটি এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নিরাপদতম এবং বিশ্বে ষষ্ঠ। কম যায় না সিঙ্গাপুরের সশস্ত্র বাহিনীও, কারণ দেশটির ৬০ লাখ মানুষের জন্য সামরিক সেবা বাধ্যতামূলক।

২. বড় ইভেন্ট আয়োজনে অভিজ্ঞ: সিঙ্গাপুর বার্ষিক সাংরি-লা ডায়াগের মতো সম্মানজনক বিভিন্ন ইভেন্ট নিয়মিতই আয়োজন করে থাকে। বিশ্ব নেতা ও বিলিওনিয়ারদের আকৃষ্ট করা এসব ইভেন্টের নিরাপত্তা দেয়াটা তাই সিঙ্গাপুরের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এছাড়া ২০১৫ সালে স্পর্শকাতর একটি বৈঠকেরও আয়োজন করেছিল সিঙ্গাপুর। ১৯৪৯ সালে চীনের গৃহযুদ্ধের পর আলাদা হয়েছে যাওয়া চীন ও তাইওয়ানের তৎকালীন নেতা যথাক্রমে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রেসিডেন্ট মা ইং-জেও প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বৈঠকে সিঙ্গাপুরেই মিলিত হন।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : ট্রাম্প-কিম বৈঠকে খরচ ২ কোটি ডলার: সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী
--------------------------------------------------------

৩. উত্তর কোরিয়া থেকে তুলনামূলক নিকটবর্তী: বিমানে করে উত্তর কোরিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যেতে প্রায় সাত ঘণ্টা লাগে। যেটি চলতি বছর কিমের সবচেয়ে দীর্ঘ যাত্রার চেয়েও অনেক কম সময়ের। কেননা কিম যখন ট্রেনে করে বেইজিং যান তখন তার ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয়। তাই সুইজারল্যান্ডের মতো বৈঠকস্থল তুলনায় সিঙ্গাপুর বেশ কাছে। তাই উত্তর কোরিয়ার পুরনো বিমান এক ফ্লাইটে পৌঁছতে পারে এমন বৈঠকস্থল হিসেবে সিঙ্গাপুর খুবই উপযুক্ত।

৪. সিঙ্গাপুর ধনী: আর্থিক নিষেধাজ্ঞা থাকা উত্তর কোরিয়া এ ধরনের একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের মতো সক্ষম নয়। সেক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর ধনী হওয়ায় বিষয়টি সহজ হয়েছে। সিঙ্গাপুর এই বৈঠকের ব্যয় বহন করে কিনা জানতে চাওয়া হলে দেশটির ২ জুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নং ইং হেন বলেন, অবশ্যই। ঐতিহাসিক এই বৈঠকে একটি ছোট ভূমিকা রাখার জন্য আমরা এই অর্থ ব্যয় করতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু অন্যান্য বৈঠকস্থল যেমন মঙ্গোলিয়ায় যদি এই সামিট অনুষ্ঠিত হতো তাহলে তারা ব্যয় বহন করতে পারতো না।

৫. সিঙ্গাপুরের নিরপেক্ষতা প্রশ্নাতীত: পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে চার দশকের বেশি সময় ধরে কূটনীতিক সম্পর্ক রয়েছে সিঙ্গাপুরের, যদিও উত্তর কোরিয়ার ওপর জাতিসংঘের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে সেটি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ২০১৬ সালের আগে উত্তর কোরিয়ানরা সিঙ্গাপুরে ভিসামুক্ত ভ্রমণের সুবিধা পেতেন। যা উত্তর কোরিয়ার এলিটদের জন্য শপিং, বিনোদন ও চিকিৎসার জন্য একটি জনপ্রিয় ভেন্যু হিসেবে পরিণত হয়। ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে আততায়ী হামলায় নিহত হওয়ার আগে দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে কাটিয়ে কিম জং উনের সৎ ভাই কিম জং নাম। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তিবদ্ধ কোনও মিত্র না হওয়া সত্ত্বেও সিঙ্গাপুর ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদার।

৬. চাপেও মাথা নত করবে না সিঙ্গাপুর: যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে মাথা নোয়াবে না এমন দেশ বিশ্বে কমই আছে। এমনকি চীন পর্যন্ত গেলো নভেম্বরে ট্রাম্পের অনুরোধে তিনজন মার্কিন বাস্কেটবল খেলোয়াড়কে প্রত্যাবাসন করে। যদিও ওই তিনজন দোকান থেকে চুরির ঘটনায় আটক ছিলেন। কিন্তু সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটবে না। ১৯৯৪ সালে চুরি ও ভাঙচুরের ঘটনায় একজন মার্কিন তরুণ মাইকেল পি. ফে-কে বেত্রাঘাত করে সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ। ওই মার্কিনির ক্ষমা চেয়ে ওয়াশিংটনের অনুরোধেও অনড় ছিল সিঙ্গাপুর যার ফলে সেসময় উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দেয়।

আরও পড়ুন :

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যুদ্ধের জন্য সেনাবাহিনীকে জোর প্রস্তুতির নির্দেশ কিমের
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন নিকি হ্যালি
সাড়ে ৩৫ কোটি ডলার জরিমানার পাশাপাশি ব্যবসা বন্ধ ট্রাম্পের
চতুর্থবারের মতো নোবেলের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
X
Fresh