• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

চলুন, ভালোবাসার গল্প শুনি

আরে এমনে কী প্রেম হয় নাকি?

অনলাইন ডেস্ক
  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৩:০১

অনেকটা চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করার মাধ্যমেই ছেলেটার সাথে কথা বলা শুরু করি। হ্যাঁ চ্যালেঞ্জ। ছেলেটার অহংকার ভাঙার চ্যালেঞ্জ। সে নাকি যেকোনো মেয়েকে পটাইতে পারে। আরে মগের মুল্লুক নাকি। আমি সবার মতো না। সে আমাকে পটাবেই আর আমি তাকে একটা শিক্ষা দিবই। এটাই ছিল মূলত আমাদের উদ্দেশ্য। প্রেম-ট্রেম কিছুই ছিল না তখন।

আমরা এখনকার বেশির ভাগ জুটির মধ্যে অন্যতম। কারণ আমাদের পরিচয় ফেসবুকের add friend এ ক্লিক করার মাধ্যমে হয় নাই। তখন ফেসবুক প্রেম এত প্রচলিত ছিল না। আমাদের দেখা হয়েছিল কোনো এক সন্ধ্যায় সূর্য ডোবার ঠিক পরেই। এই পরিমাণ আলো ছিল যে আলোয় আমরা দুজন দুজনকে স্পষ্ট দেখতে পারছিলাম। আর কোনো একটা কারণে আমাদের দেখাটাই আগে হয়, কথা পরে।

তাকে আমার ফোন নম্বর দিতে হয় একটা ডিস্টার্ব নম্বরে ঝারি দেওয়ার জন্য। সেও সেই মুহূর্তে নায়ক হওয়ার সুযোগ মিস করে নাই। এরপর তার আমাকে ফোন দিয়া, টুকটাক কথা বলা। প্রথম প্রথম বিরক্ত হোতাম কিন্তু আস্তে আস্তে বিরক্ত ভাবটা কই যেন হারায় যায়। বিরক্তভাব হারানোর মানেই ভালো লাগার শুরু। কথা বলতে বলতে রাত পার হয়ে যাওয়া। ভালোবাসা আর ভালোলাগার মাঝখানের যেই সময়টা মানে প্রেমে পরার ঠিক আগমুহূর্তটা জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময়। তবে কিছুটা অদ্ভুতও বটে। নিজের অজান্তে ফোন আসার অপেক্ষা করতাম। অনেক সময় ফোন না দিলে রাগ উঠত। কিন্তু ফোন দিয়ার পরে সেই রাগ প্রকাশের ক্ষমতা হতো না। অধিকারের সাথে কীভাবে জিজ্ঞেস করব যে ‘কেন ফোন দাও নাই’। সে যদি আমাকে পালটা প্রশ্ন করে ‘কেন অপেক্ষা করো আমার জন্য’? তখন কী উত্তর দেব। এই ভয়ে ভাবটা এমন দেখাইতাম যে আমার কিছু যায় আসে না। যখন নিজেকে প্রশ্ন করতাম যে আসলেই কি তাই? তখন মন যেই উত্তর দিত তা পছন্দ হতো না। আরে এমনে কী প্রেম হয় নাকি। কোনো কিছুর মিল নাই। না বাহ্যিক না অভ্যন্তরীণ। খাবারের পছন্দ, ড্রেসাপ, গান, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সবকিছুর অমিল। আমার যেটা খুব পছন্দ তার সেটা খুবই অপছন্দ। আবার তার ক্ষেত্রেও একই। ছেলেটা সাধারণ মানুষের তুলনায় চোখে একটু বেশি ভালো দেখে। দৃষ্টিশক্তি অসাধারণ তার। আর আমার চোখের সামনে অসাধারণ পাওয়ারের দুইটা মোটা গ্লাস। এত অমিলের মধ্যে ভালোবাসা ঢুকবে কেমনে এই ভাবনাটা খুব চিন্তায় ফেলত আমাকে। প্রায় আড়াই মাস পরে বলতে বাধ্য হই যে, ‘আমিও ভালোবাসি’।

‘ঝগড়া করলে ভালোবাসা বাড়ে’ আর ‘যেখানে ভালোবাসার অস্তিত্ব আছে সেখানে সন্দেহ থাকবেই’-এই বহু প্রচলিত ও পরীক্ষিত মতামত দুইটা ভুল প্রমাণ করার জন্য আমরা ঝগড়া করতাম না আর বিশ্বাস ছিল অগাধ দুইজনেরই। আমাদের সম্পর্কে যেমন ভালোবাসার কমতি নাই তেমনি কমতি নাই বিশ্বাসের। নিজেদের মনের যেকোনো কথা আমরা নির্দ্বিধায় শেয়ার করতে পারি। এতখানিক বোঝাপড়া আছে আমাদের মধ্যে যেখানে কোনো ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ নাই। ভালোবাসার জীবনে সুখী হওয়ার সবচেয়ে বড় গোপন সূত্র হলো ভালোবাসার মানুষকে বেস্ট ফ্রেন্ড বানানো।

যখন আমি খেতে চাই না তখন সে খুব কেয়ারিং হাসবেন্ড এর মতো নিজের হাতে খাওয়ায় দেয়। বেশির ভাগ সময়ে আমি খাওয়ার শুরুটা নিজের হাতে করলেও শেষটা তার হাতেই হয়। মাঝে মাঝে ছেলেটা রোমান্টিক প্রেমিকের মতো বাইকের লুকিং গ্লাসের ঘাড় বাঁকা করে আড়চোখে আমাকে দেখে। মাঝে মাঝে চা খাওয়ার সময় আমার চোখের উপর পড়া বিরক্তিকর চুলটাকে খুব আলতো করে সরায় দেয়। রাস্তা পার হওয়ার সময় যেদিক দিয়ে গাড়ি আসে তার বিপরীত দিকে আমাকে রেখে খুব শক্ত করে হাত ধরাটা ও কখনোই ভুলে না। আর মাঝে মাঝে বিনা কারণে অযৌক্তিক ঝগড়া করে মুহূর্তেই আমার মন ভালো করে দিয়ে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধুর পরিচয় দেয়।

প্রায় ৯ বছর শেষ করতে যাচ্ছি আমরা আমাদের সুন্দর সম্পর্কটার। আজ আমরা প্রেমিক-প্রেমিকা থেকে স্বামী-স্ত্রী। জীবন থেকে অনেক কিছু শিখেছি আমরা শুধু শিখিনি তো একজন আরেকজনকে ছাড়া ভালো থাকার নিয়ম।

❤ Shimana Rahman Anchal

আরও পড়ুন:

* BiskClub-ভালোবাসার গল্পসল্প থেকে বাছাই করা পাঠকদের গল্প নিয়ে rtvonline ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়মিত প্রকাশ করা হবে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • চলুন ভালোবাসার গল্প শুনি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
একসাথে তিনজনের সঙ্গে প্রেম, মুখ খুললেন বিদ্যা
নতুন প্রেমের গুঞ্জনে মুখ খুললেন শ্রাবন্তী
প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হওয়ায় যুবকের আত্মহত্যা
অন্তরঙ্গ সম্পর্কের পর পালিয়েছেন প্রেমিক, অতঃপর....
X
Fresh