ইন্দোরে ইনিংস হারের লজ্জায় বাংলাদেশ
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর দীর্ঘ ১৯ বছর পর ভারতে পূর্ণাঙ্গ সফরে বাংলাদেশ। গত ১৯ বছরে আতিথেয়তা না পাবার কারণ বোধহয় এটিই। নখ-দন্ত্যহীন বাঘেদের তিন দিনেই ম্যাচ শেষ। ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জা।
সাদা পোশাকে সিরিজ শুরুর আগে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়ের পর ২-১ ব্যবধানে হারলেও দুর্দান্ত খেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সুখটা বোধহয় সীমিত। ছোট ফরম্যাটের সিরিজের স্বল্প সুখ নিয়ে টেস্ট সিরিজে এসে ইন্দোরে তিন দিনে হারের দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে কলকাতা প্রবেশ করবে মুমিনুল হকের দল। হারের ব্যথা নিয়ে গোলাপি বলে দিনরাত্রির ম্যাচ খেলবে টাইগাররা।
ইন্দোরে প্রথম টেস্টে টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক সিদ্ধান্ত নেন ব্যাটিংয়ের। হলকার সিমিং উইকেটে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত যে আত্নঘাতী ছিল সেটা অধিনায়কও স্বীকার করলেন প্রথম দিন শেষে।
‘টস জিতে ব্যাটিং নেয়ার পর দল এমন খেললে আমার মনে হয়, প্রশ্নটা উঠতেই পারে। আমরা কম রানে অলআউট হওয়াতে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হচ্ছে, সিদ্ধান্তটা বাজে ছিল। আর এটাকে আমি নিজের ভুল মনে করছি।’
যা হবার তাতো হয়েই গেছে, কিন্তু নিজেদের অভিজ্ঞতার ছিটেফোঁটাও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। মাশুল হিসেবে প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ভারতীয় পেসাররা রীতিমতো উইকেটের উৎসবে মেতেছিলেন শুরু থেকে। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ২ উইকেট বাদে ৭ উইকেট পেসারদের দখলে। মোহাম্মদ শামির ৩, সমান দুটি করে উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা ও উমেশ যাদব।
ভারত নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে যা খেলল সেটা চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছু করারও ছিল না বাংলাদেশের। রোহিত শর্মা ৬, বিরাট কোহলি শূন্য রানে আউট হলেও মায়াঙ্ক আগরওয়াল একাই খেলে দিয়েছে বাংলাদেশকে।
৩৩০ বলে ২৪৩ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেন ২৮ বছর বয়সী ওপেনার আগরওয়াল। এছাড়া চেতেশ্বর পূজারার ৫৪, আজিঙ্কা রাহানের ৮৬ ও রবীন্দ্র জাদেজার ৬০ রানে ৩৯৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। তাতে বাংলাদেশের সামনে লিড দাঁড়ায় ৩৪৩ রানের।
৪ উইকেট নেন আবু জায়েদ রাহী ও একটি করে উইকেট নেন এবাদত হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। শনিবার তৃতীয় দিনের সকালে বাংলাদেশকে ব্যাটিং করতে পাঠিয়ে যেন কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দেয় ভারত। সকালের পরীক্ষায় উৎরাতে পারেনি টাইগার ব্যাটসম্যানরা।
দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও ইমরুল কায়েস বিদায় নেন সমান ৬ রান করে। অধিনায়ক মুমিনুল হক ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে সাজঘরে ফেরেন ৭ রান করে শামির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। এরপর মোহাম্মদ মিঠুনকেও ১৮ রানে ফেরান শামি।
ব্যাটিং লাইনআপের যখন এমন করুণ দশা তখন ঢাল হয়ে দাঁড়ান মুশফিকুর রহিম। ১৫০ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে হারের ব্যবধানটাই কমান তিনি। শেষ পর্যন্ত অশ্বিনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে।
ব্যাটে-বলে ব্যর্থ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ইনিংসে ১০ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১৫ রান। লিটন দাস বড় স্কোরের সম্ভাবনা জাগিয়েও ফেরেন ৩৫ রানে। মেহেদী হাসান মিরাজ মুশফিককে সঙ্গ দেন খানিকক্ষণ।
কিন্তু উমেশ যাদবের শট বল হাতে লেগে বোল্ড হয়ে ফেরেন ৩৮ রান করে। এখানেই শেষ বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৬৯ ওভার ২ বলে ২১৩ রান তুলেই ইনিংস শেষ করে সফরকারীরা। স্বাগতিকরা জয় পায় ১৩০ রান ও ইনিংস ব্যবধানে।
প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট পাওয়া শামি এই ইনিংসেও নেন ৪ উইকেট। উমেশ যাদবের ২, শর্মার ১ ও অশ্বিন নেন ৩ উইকেট। আগামী ২২ নভেম্বর কলকাতার ইডেনস গার্ডেনে আয়োজন হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।
ওয়াই/পি
মন্তব্য করুন