• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘কঠোর পরিশ্রম ও পৃষ্ঠপোষকতায় ফুটবলের মহামঞ্চে আসবে বাংলাদেশ’

কুশল ইয়াসির

  ১১ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৩১
আরটিভির স্টুডিতে জেসিকা হার্তাদো ও ক্যাথরিন ফ্যাবিওয়ালা

জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। নিজেদের ঘরোয়া লিগের পাশাপাশি সুইডেন ও জার্মান লিগও মাতিয়েছেন ক্যাথরিন ফ্যাবিওয়ালা ও জেসিকা হার্তাদো। রয়েছে বিশ্বকাপ ও অলিম্পিকের মতো বড় আসরে মাঠ মাতানোর অভিজ্ঞতা। নিজেদের বর্ণাঢ্য ফুটবল ক্যারিয়ারের উত্থান-পতনের গল্প শোনাতে কলম্বিয়ার দুই নারী অবস্থান করছেন ঢাকায়। লক্ষ্য বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক মহিলা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করা। টুর্নামেন্টটির সম্প্রচারের দায়িত্বে রয়েছে বেঙ্গল মিডিয়া করপোরেশন (আরটিভি)। আর তাই বৃহস্পতিবার কারওয়ান বাজারে আরটিভির অফিস পরিদর্শনে এসেছিলেন দুজন।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির হয়ে বিশ্বকাপ মাতিয়েছেন ক্যাথরিন। অন্যদিকে অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন জেসিকা। উভয়েরই রয়েছে ইউরোপের একাধিক লিগে খেলার অভিজ্ঞতা। বর্তমানে ক্যাথরিন খেলা চালিয়ে গেলেও জেসিকা অবস্থান করছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনহোর একটি প্রতিষ্ঠানে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। নাম রোনালদিনহো সকার অ্যাকাডেমি।

তার আগেই জেসিকা ‘অপর্চুনিটি থ্রু স্পোর্টস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এর মাধ্যমে বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা খেলোয়াড়রা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারে।

আলাপকালে জেসিকা জানিয়েছেন, বংশগতভাবে কলম্বিয়ান হলেও ছোট থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বড় হয়েছেন তাই ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। অন্যদিকে ক্যাথরিন ইংরেজি কিছু বুঝলেও স্প্যানিশেই কথা বলেন। আলোচনায় জেসিকা দোভাষী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ক্যাথ স্বভাবত কিছুটা লাজুকও। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশের ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমানের প্রতিচ্ছবি। যারা কথায় কম খেলায় নিজেদের প্রমাণ করতে বেশি আগ্রহী।

এক পর্যায়ে দুজনের কাছেই প্রশ্ন রাখা হলো প্রিয় খেলোয়াড়কে? জেসিকার চটজলদি উত্তর, ‘লিওনেল মেসি’। অন্যদিকে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে দিয়াগো ম্যারাডোনাকে এগিয়ে রেখেছেন। নাম নিয়েছেন বর্তমান বস রোনালদিনহোরও।

ক্যাথের উত্তরটাও একই রকম মেসিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। তবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও তার প্রিয়। কারণ তিনি কঠোর পরিশ্রমী। এ কথাটি বলতেই জেসিকা কথা ছিনিয়ে নিয়ে বলেন, ‘মেসির অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে। আর রোনালদো নিজে প্রচুর পরিশ্রম করেন তাই দুই জনকেই পুরো বিশ্ব চেনে।’

কলম্বিয়ার পুরুষ দলের প্রিয় খেলোয়াড় কে? উত্তর চাইলে দুজন হেসে উত্তর দিলেন, ‘হামেশ রদ্রিগেজ’।

বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে উভয়েই জানালেন, এখানকার রাস্তা-ঘাট, পরিবেশ ও মানুষের আন্তরিকতা অনেকটা কলম্বিয়ার মতোই।

বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের মূল সমস্যাটি হচ্ছে আর্থিক সীমাবদ্ধতা সঙ্গে সামাজিক বিধি নিষেধতো আছেই এ বিষয়টি তাদের সামনে নিয়ে আসা হয়। তবে দারিদ্রের প্রতিবন্ধকতাকে জয় করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন তারা। তাদের মতে, ইচ্ছা, কঠোর পরিশ্রম আর সঠিক পৃষ্ঠপোষকতাই ফুটবলকে উন্নত করতে পারবে।

জেসিকা বলেন, দিয়াগো (ম্যারাডোনা), রোনালদিনহো, মেসি, রোনালদো তারা প্রত্যেকেই দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছেন। এমনকি ক্যাথরিনও সেই পথেরই পথিক। ফুটবলের মাধ্যমে সারা বিশ্ব তাদেরকে চেনে।

ঠিক মতো পরিশ্রম করলেই ভালো ফুটবলার হওয়া সম্ভব। সেজন্য দরকার সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা। যোগ করে তিনি বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম সে সময় কলম্বিয়ায় মেয়েদের ফুটবলের অবস্থা ভালো ছিল না। ধাপে ধাপে এটি এ পর্যায়ে এসেছে। আশা প্রকাশ করেছেন একদিন বাংলাদেশের মেয়েরাও মাতাবে বিশ্ব মঞ্চ।

নারীদের নিয়ে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনে করার জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে), কে-স্পোর্টস ও আরটিভিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দুজনই।

আরটিভির অফিস পরিদর্শনের সময় নিউজ স্টুডিওতে বসে দুজন স্প্যানিশ ভাষায় বিড়বিড় করে কিছুক্ষণ খবর পড়েন। ছিলেন হাসোজ্জ্বল।

কারওয়ান বাজার থেকে বাফুফের দিকে যাওয়ার সময় জেসিকাকে বলা হলো, সে দেখতে অনেকটা কলম্বিয়ান পপ তারকা শাকিরার মতো। এ সময় লাজুক হাসি দিয়ে বিদায় জানালেন।

ওয়াই/এএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ২০১৯ এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh