দিল্লির ধুলোয় বাংলার রূপকথার জয়
কী দুর্দান্ত নতুনেরা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বে এক ঝাঁক তরুণে ভর করে ভারতের মাটিতে তাদেরই হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে একবারও পূর্ণাঙ্গ সিরিজের আমন্ত্রণ না পাওয়া বাংলাদেশের এর থেকে ভালো জবাব আর কি হতে পারে!
দিল্লির ধুলো মাখা আকাশের তোয়াক্কা না করে সন্ধ্যায় এক বুক আশা নিয়ে অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলার নয়া অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
দলের সেরা দুই খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালকে ছাড়াই ভয় ডর হীন এক দলের শুরুটা ম্যাচের প্রথম ওভারেই রোহিত শর্মাকে বিদায় করে দিয়ে।
শফিউল ইসলামের করা ওই ওভারে দুই চার হাঁকিয়ে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তাতে দমে যাননি বরং চেপে ধরেছিলেন শফিউল। ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে ৯ রানেই বিদায় করেন রোহিতকে।
শিখর ধাওয়ান-রোহিতের ওপেনিং জুটি ১০ রানে ভাঙার পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ২৬ রান। ইনিংসের ৭ ওভারের সময় প্রথম ওভার করতে এসে তৃতীয় বলের মাথায় তুলে নেন লোকেশ রাহুলকে।
১৭ বলে ১৫ করা রাহুলের বিদায়ের পর আবারও ব্লুজ শিবিরে আমিনুলের আঘাত। ১৩ বলে ২২ রান করা শ্রেয়াস আয়ারকে ফেরান এই লেগ-স্পিনার।
৭০ রানে টপ-অর্ডার হারিয়ে চাপের মুখে ধাওয়ান ব্যাট চালাচ্ছিলেন ধীরে সুস্থে। কিন্তু ৪১ (৪২) রানে ফিরতে হলো রান আউটের ফাঁদে পড়ে।
অভিষেক ম্যাচে শুভাম দুবেও প্রমাণ করতে পারেননি নিজেকে। আফিফ হোসেনের দুর্দান্ত ক্যাচে ৪ বলে মাত্র ১ রান করে ফেরেন সাজঘরে।
এরপর দলীয় ১২০ রানের মাথায় রিষাব পন্থকে ২৭ রানে বিদায় করেন শফিউল ইসলাম।
কিন্তু আল-আমিনের করা ইনিংসের শেষ ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরের ৫ বলে ১৪ রানের ইনিংসে বাংলাদেশের লক্ষ্য গিয়ে দাঁড়ায় ১৪৯ রানে।
শফিউল ও আমিনুল ইসলাম নেন সমান ২টি করে উইকেট। এছাড়া আফিফ হোসেন নেন ১ উইকেট।
---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: ভারতকে তাদের মাটিতে বাংলাদেশই হারাতে পারবে: পাপন
---------------------------------------------------------------
জবাবে ব্যাট করতে নেমে অভিষিক্ত নাঈম শেখের ভয় ডর হীন ব্যাটিং। লিটন দাসের উইকেট দিয়ে আসাতেও কিছু যায় আসেনি টাইগার শিবিরে। মাত্র ৪ বলে ৭ রান করে লিটন ক্যাচ তুলে দেন দীপক চাহারের বলে।
নাঈম শেখ সৌম্য সরকারকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তুলেন ৪৬ রান। দুই চার আর এক ছয়ে অভিষেকে ২৬ রান করে বিদায় নেন নাঈম যুজবেন্দ্র চাহালের বলে।
অদম্য সৌম্য মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে প্রায় জয়ের কাছেই চলে যান। কিন্তু খলিল আহমেদের গতির কাছে পরাস্ত হয়ে ফিরতে হলো সাজঘরে। নিজের ৩৯ আর মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়ে যোগ করেন ৬০ রান।
এরপর আর মাহমুদুল্লাহ-মুশফিক টেনে আনেননি ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই হারের ক্ষত। এবার জিতেই মাঠ ছাড়লেন, হারিয়ে দিলেন ভারতকে তাদের মাটিতে প্রথমবারের মতো। ৭ উইকেটের জয়ে বিশ্বকাপে ২ রানের হারের সেই প্রতিশোধটাও নেয়া হয়ে গেল বোধহয়!
মুশফিক থেকে যান অপরাজিত ৬০ রানে আর মাহমুদউল্লাহ ১৫ রানে। এই দুইয়ের জুটি থেকে আসে ৪০ রান। ভারতের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন দীপক চাহার, খলিল আহমেদ ও চাহাল।
এমআর/ এমকে
মন্তব্য করুন