মেসির পায়ে রক্ষা পেলো বার্সেলোনা
আরও একবার বার্সেলোনাকে রক্ষা করলেন মেসি। তবে পূর্ণ পয়েন্ট এনে দিতে পারেননি তিনি। অন্তত দলকে নিশ্চিত পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাই পয়েন্ট ভাগ করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে কাতালান ক্লাবটিকে।
ম্যাচের শেষ দশ মিনিটের রোমাঞ্চে নিশ্চিত পরাজয় থেকে রক্ষা পায় কাতালান দলটি। আর এ দশ মিনিটে আবারও নিজের জাত চেনালেন দলের সেরা তারকা। তাকে যোগ্য সহায়তা করেছেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ।
মঙ্গলবার রাতে ভিয়ারিয়ালের মাঠ স্তাদিও লা সিরামিকা স্টেডিয়ামে আতিথেয়তা নেয় বার্সেলোনা। ম্যাচের প্রথম থেকেই অতিথিদের উপর আক্রমণ শানাতে থাকে স্বাগতিকরা। কিন্তু প্রতিটি আক্রমণ গোলকিপারের সামনে গিয়ে আটকে যায়।
এদিন ম্যাচের শুরুর একাদশে ছিলেন না নিয়মিত অধিনায়ক মেসি। আর এ সুযোগে আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে ছিল ভিয়ারিয়ালের। পুরো ম্যাচে গোল হয়েছে ৮টি। যা চারটি চারটি করে ভাগ করে নিয়েছে দল দুটি।
আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের ম্যাচে প্রথম গোলটি পায় বার্সেলোনা। ম্যাচের ১২তম মিনিটে দুই ব্রাজিলিয়ানের নৈপুণ্যে এগিয়ে যায় বার্সা। ডান দিক দিয়ে রক্ষণ ভেঙে ডি-বক্সে ঢুকে গোলমুখে বল বাড়ান ম্যালকম। অনায়াসে আলতো টোকায় তা থেকে গোল করেন কুতিনহো।
এর চার মিনিট পর আবারও এগিয়ে যায় কাতালুনিয়ার ক্লাবটি। ১৬তম মিনিটে আর্তুরো ভিদালের ক্রস থেকে হেড দিয়ে গোল করে দলের লিডকে দ্বিগুণ করেন ম্যালকম।
এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের ২৩তম মিনিটে ব্যবধান কমান স্যামুয়েল। সতীর্থের থ্রু পাস পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকেই জাল লক্ষ্য করে শট নেন কিন্তু শট পোস্টে বাধা পায়। তবে ফিরতি বল কোনাকুনি শটে জালে পাঠান নাইজেরিয়ার এই মিডফিল্ডার।
২-১ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। বিরতিতে থেকে ফিরে গোলের সমতায় ফিরে ভিয়ারিয়াল। ম্যাচের ৫০ তম মিনিটে অসাধারণ গোল করেন তোকো একাম্বি। সাইড লাইন থেকে বল দ্রুতগতিতে টেনে পেনাল্টি ডি-বক্সের ডান কোনায় এনে শট করেন ক্যামেরুনের এই ফরোয়ার্ড। বার্সা গোলরক্ষক বেশি এগিয়ে থাকায় ঠেকানোর কোনও সুযোগ পাননি।
পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে ৬১তম মিনিটে কুতিনহোকে বসিয়ে মেসিকে নামান ভালভার্দে। কিন্তু পরের মিনিটেই গোল খেয়ে বসে বার্সা। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের রক্ষণচেরা পাস ডি-বক্সে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ভিসেন্তে ইবোরা।
ম্যাচের ৮০তম মিনিটে আরও এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগানকে একা পেয়ে গোল করতে ভুল করেনি কার্লোস বাক্কা। ৮৬ মিনিটে ভিয়ারিয়ালের আলভারো সুয়ারেজকে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।
ম্যাচের ৯০তম মিনিটে মেসির ফ্রি কিক জাদুতে মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খোলে বার্সা সমর্থকরা। ডি বক্সের বাইরে থেকে করা ফ্রি কিক ঠেকাতে ব্যর্থ হন ভিয়ারিয়ালের গোলরক্ষক। এটি ছিল মেসির ৩২তম লিগ গোল আর ছয় নম্বর ফ্রি-কিক গোল।
ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগ মিলিয়ে মেসিই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি সরাসরি ফ্রি কিক থেকে এক মৌসুমে ৬টির বেশি গোল করছেন সেই ২০০৬-২০০৭ মৌসুম থেকে।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা সুয়ারেজের কাছে বল এলে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪-৪ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা। এ ড্রয়ের ফলে ৩০ ম্যাচে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রয়েছে ভালভার্দের শিষ্যরা। জিরোনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে ৩০ ম্যাচে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ।
এএ/পি
মন্তব্য করুন