• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘ম্যারাডোনাকে কখনও ক্ষমা করবো না’

কুশল ইয়াসির

  ২৯ মে ২০১৮, ১৪:২৬

১৯৮৬ সালের ২২ জুন। মেক্সিকোর আজটেকা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি আর্জেন্টিনা ও ইংল্যান্ড। দুই দলই একবার করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। ১৩তম বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের দর্শক গ্যালারিও কানায় কানায় পূর্ণ।

হাইভোল্টেজ ম্যাচটির প্রথমার্ধে কোনও পক্ষই গোল করতে পারেনি।দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর পর কে জানতো ম্যাচটি ইতিহাসের পাতায় বিশেষ কালিতে লেখা হবে?

ছয় মিনিটের মাথায় প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ান আর্জেন্টিনার দিয়েগো ম্যারাডোনা। পুরো আলবিসেলেস্তে শিবির গোল উদযাপন করতে থাকলেও রেফারির আলী বিন নাসেরের কাছে গোল বাতিলের জন্য আবেদন করে ইংলিশরা। তিউনেশিয়ান রেফারি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও রিপ্লেতে দেখা যায় মাথা নয় হাত দিয়ে গোল করেছেন ম্যারাডোনা! আর এই ঘটনাটি ‘হ্যান্ড অব গড’ কাণ্ড হিসেবে পরিচিতি পায়।

আগামী মাসের ১৪ তারিখ রাশিয়ায় শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপের একাদশতম আসর। ফুটবলের সবোর্চ্চ এই টুর্নামেন্ট শুরু হবার আগে প্রতিবছরই আলোচনায় আসে বিতর্কিত ওই ম্যাচটি। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে থ্রি লায়ন্সদের স্কোয়াডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন পিটার শিল্টন। কাজ আরও গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপের দলটির গোল পোস্ট সংরক্ষণ করতেন।

‘হ্যান্ড অব গড’ কাণ্ডের চাক্ষুস সাক্ষী এই কিংবদন্তি ৩২ বছর পরও ম্যারাডোনাকে ক্ষমা করেননি। ৬৮ বছর বয়সী শিলটন জানিয়েছেন এই জীবনে কোনও দিনও আর্জেন্টিনার অধিনায়কের সঙ্গে হাত মেলাবেন না।

তৎকালীন ইংলিশ দলের নিয়মিত অধিনায়ক ব্রায়ান রবসন ইনজুরিতে পড়ার কারণে অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক হিসেবে দলকে কোয়ার্টার ফাইনালে নিয়ে আসেন গোলকিপার শিলটন। ওই ম্যাচের শুরুতে প্রথমবারের মতো তরুণ ম্যারাডোনার সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। সেবারই শেষ!

সম্প্রতি ইংল্যান্ডের হয়ে ১২৫ ম্যাচ খেলা সাবেক এই তারকা ফুটবলারের স্ত্রী জানিয়েছেন আরেকটি নতুন তথ্য।

ডেইলি মিররে বরাতে স্টেফ বলেন, বিশ্বকাপ শুরুর আগে একটি আকর্ষণীয় অফার পেয়েছিলেন। দুই কিংবদন্তিকে এক করে একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের পরিকল্পনা করেছিল বিখ্যাত একটি প্রতিষ্ঠান।

তবে বিশাল অঙ্কের এই অফারটি গ্রহণ করেননি শিল্টন। আর এর একমাত্র কারণ ‘হ্যান্ড অব গড’ কাণ্ডে ম্যারাডোনা কখনই মাফ চাননি।

আগামী মানেই ইংল্যান্ড ভ্রমণ করবে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী তারকা আর সেখানেই আইরিশ কোম্পানি প্যাডি পাওয়ারের ওই বিজ্ঞাপনে অংশ নেবার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে শিল্টন, মেক্সিকো বিশ্বকাপের ওই ম্যাচে ম্যারাডোনার অসততার বিষয়টি টেনে নিয়ে বলেছেন, আমি কখনোই ওই ম্যাচটিকে ভুলতে পারবেন না। ম্যারাডেনার উচিৎ সে বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চাওয়া।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষের ওই ম্যাচের আর্জেন্টিনার হয়ে দ্বিতীয় গোলটিও করেছিলেন আর্জেন্টিনার ইতিহাসের সেরা তারকা। অসাধারণ ওই গোলটিকে সর্বকালের সেরা গোল হিসেবে গণ্য করা হয়।

ক্লাব ক্যারিয়ারে হাজার ম্যাচ খেলা এই গোলকিপার আরও বলেন, নিঃসন্দেহে আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে সেরা খেলোয়াড় তিনি। তবে তার জন্য আমার মনে কোনও সম্মান নেই।

১৯৭৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। সেবার বিতর্কিত জান্তা সরকারের কারণে দেশটির সাধারণ জনতা বিশ্বকাপ উৎসবে মেতে উঠতে পারেননি। ১৯৮৬ সালে ম্যারাডোনার প্রায় একক নেতৃত্বে ফের বিশ্বকাপ জয়ের পর ‘ফুটবল ঈশ্বর’ খেতাব পান।

ওয়াই/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ম্যারাডোনা ও পেলের মধ্যে কে সেরা, জানালেন ফিফা সভাপতি
মৃত্যুর তিন বছর পর কর ফাঁকির মামলায় মুক্তি পেলেন ম্যারাডোনা
‘ম্যারাডোনা অ্যাওয়ার্ড’ জিতলেন রোনালদো
X
Fresh