• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রামোসের শাস্তি চেয়ে ৪ লাখ স্বাক্ষর!

স্পোর্টস ডেস্ক

  ২৮ মে ২০১৮, ১৭:৪৯

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির হ্যাটট্রিক শিরোপা ঘরে তুলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। পুরো ফুটবল বিশ্বে এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু এ আলোচনাকেও ছাড়িয়ে গেছে প্রথমার্ধে রামোসের কৃতকর্ম। ফুটবল খেলতে গেলে ইনজুরিতে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা যদি এমন হয় যার ভিডিও দেখে মনে হবে যে তাকে ইচ্ছাকরে আঘাতের উদ্দেশ্যেই ফাউল করা হয়েছে তাহলে বিষয়টি কেমন হয়? সালাহকে ফাউল করে এমনি এক কাণ্ডে জড়িয়ে গিয়েছেন রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস। যার জন্য মিশর ও লিভারপুল সমর্থকদের চক্ষুশূল এখন রামোস।

বরাবরই ফাউলের করে বেঁচে গেলেও এবার বোধহয় আর পার পাচ্ছেন না তিনি। মোহাম্মদ সালাহ’র চোট-কাণ্ডের জন্য বুঝি ফেঁসেই যাচ্ছেন রামোস। সালাহের চোট এতটাই গুরুতর যে বিশ্বকাপে নামা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তিনি। যদিও তার চোট নিয়ে ক্লাব লিভারপুল কিংবা জাতীয় দল মিশরের পক্ষ থেকে রামোসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়নি বটে। তবে লিভারপুলের সালাহ-ভক্তরা বসে নেই। রামোসের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে তারা নেমে পড়েছে মাঠে। উয়েফা ও ফিফার কাছে শাস্তি চেয়ে নেমে পড়েছে গণস্বাক্ষর সংগ্রহের কাজে।

শনিবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ম্যাচের ২৫ মিনিটে বল দখলের লড়াইয়ে সালাহকে কৌশলে ফাউল করেন রামোস। কাজটি রামোস এতোটাই চতুরতার সঙ্গে করেন যে, কাছেই দাড়িয়ে থাকা রেফারি ফাউলের গুরুত্ব বুঝতেই পারেননি। ফাউলের বাঁশি বাজালেও রামোসকে কোনো কার্ডই দেননি! কিন্তু রিপ্লেতে পরিস্কার, রামোস সুকৌশলে নিজের বগল দিয়ে সালাহ’র বাহু চেপে ধরে ফেলে দিয়েছেন।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : জমি বিক্রি করে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার লম্বা পাতাকা বানালেন জার্মান ভক্ত
--------------------------------------------------------

মাটিতে আছাড় খেয়ে পরার কারণেই বাঁ-কাঁধে চোট পেয়েছেন সালাহ। যে চোট সালাহকে শুধু চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল থেকেই উঠে যেতে বাধ্য করেনি, তার আসন্ন বিশ্বকাপে খেলা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। লিভারপুলের সালাহ-ভক্তদের দাবি, রামোস স্রেফ ইচ্ছাকৃতভাবেই, মানে চোটে ফেলার বাসনা থেকেই কৌশলে ওই কাণ্ড করেছেন।

কিন্তু শুধু নিজেরা শাস্তি চাইলেই হবে তো, দাবিটা জোরালো করতে গণদাবি লাগবে! লিভারপুল সমর্থকেরা সেই পথেই নেমে পড়েছেন। রামোসের শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর আদায়ের লক্ষ্যে আবেদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অনলাইন স্বাক্ষর আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান চেঞ্জ ডট অর্গানাইজেশন।

‘চেঞ্জ’ ওয়েবসাইটটি মূলত পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন দাবি আদায়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। যে কেউ এখানে তার ন্যায্য দাবি আদায়ের পক্ষে জনমত গঠন করতে পিটিশন চালু করতে পারেন। কত মানুষ তার সঙ্গে আছেন, তিনি সেটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন।

উক্ত প্রতিষ্ঠানটি লিভারপুল সমর্থকদের আবেদন গ্রহণ করে গণস্বাক্ষর আবেদন সংগ্রহ শুরু করে দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির ১০০ মিলিয়ন অনুসারি রয়েছে। লক্ষ্য, তাদের মধ্য থেকে নূন্যতম ৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা। যেভাবে স্বাক্ষর দিতে হামলে পড়েছেন অনুসারিরা, তাতে লক্ষ্য সীমা তো ছাপিয়ে যাবেই, শেষ পর্যন্ত সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে ঠেকে, সেটাই দেখার বিষয়। কারণ, এরই মধ্যে প্রায় ৪ লাখের মতো স্বাক্ষর আবেদন পড়েছে।

স্বাক্ষর আবেদন চেয়ে প্রতিষ্ঠানটি লিখেছে, সার্জিও রামোস সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেরে বগল দিয়ে সালাহ’র বাহু চেপে ধরে তার কাঁধে চোট বাঁধিয়েছে। এর মাধ্যমে সালাহ শুধু ফাইনাল ম্যাচের বাকি অংশই মিস করেননি, ফিফা ২০১৮ বিশ্বকাপও হয়তো মিস করতে যাচ্ছে।

সার্জিও রামোস বরাবরই প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের জন্য আতঙ্কের নাম। কারণে-অকারণে ফাউল করাই তার নেশা। ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ ডিফেন্ডারের অপবাদের তকমা অনেক আগেই জুটে গেছে তার নামের সঙ্গে। এরই মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি লাল কার্ড প্রাপ্তির বদ রেকর্ড গড়েছেন। যেভাবে কার্ড পাচ্ছেন, শিগগিরই হয়তো সবাইকে পেছনে ফেলে বিশ্ব ইতিহাসেই সর্বোচ্চ লালকার্ড প্রাপ্তির রেকর্ডটা নিজের করে নেবেন।

ফুটবল মাঠে রামোসের আচরণের প্রসঙ্গ টেনে লেখা হয়েছে, ‘রামোস ভবিষ্যত প্রজন্মের ফুটবলারদের জন্য ভয়ঙ্কর এক দৃষ্টান্ত। হয়তো তারা ন্যায্যভাবেই ম্যাচ জিতবে। তারপরও সে ভয়ঙ্কর ট্যাকল-চতুরতার মাধ্যমে খেলাটির চেতনা ও ফেয়ারপ্লে’র চেতনায় আঘাত করছে।’ উয়েফা ও ফিফার কাছে তাই তাদের দাবি, ঘটনার ভিডিও দেখে কালপিট রামোসকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হোক।

শনিবার ফাইনাল শেষেই অবশ্য রামোস সালাহ’র প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। প্রার্থনা করেছেন দ্রুত সেরে উঠার। কিন্তু ওসব লোক দেখানো সমবেদনা জানিয়ে রামোস কি নিজেকে বাঁচাতে পারবেন? স্বাক্ষর আদায়ের আবেদনে যেভাবে সারা দিচ্ছে মানুষ, তাতে উয়েফা ও ফিফা বিষয়টি নতুন করে তদন্ত করতে বাধ্য হবে!

তবে ফিফার ইতিহাস লিভারপুল সমর্থকরা হতাশই করবে। কারণ তাদের ইতিহাসে এভাবে কাউকে শাস্তি দেওয়ার নজির ফিফার নেই। আর এমন পিটিশনের ভিত্তিতে ফিফা কাউকে শাস্তি দিতে বাধ্য নয়।

আরও পড়ুন :

এএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
টিভিতে আজকের খেলা
‘ফুটবলের উজ্জ্বল তারকারা অবশ্যই ফর্মে ফিরবে’
ঈদের শুভেচ্ছা ভাগাভাগি করল ইউরোপের ফুটবল ক্লাবগুলো
শুরু হতে যাচ্ছে সেলিব্রিটি ফুটবল টুর্নামেন্ট
X
Fresh