• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রাশিয়া বিশ্বকাপ স্টেডিয়াম পরিচিতি (৫)

স্পোর্টস ডেস্ক

  ১৭ মে ২০১৮, ১৪:২৮

ঘড়ির কাঁটা ঘুরে দ্রুতই কাছে চলে আসছে। এরপরই পর্দা উঠতে যাচ্ছে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত বিশ্বকাপ ফুটবলের। বিশ্বসেরা হওয়ার এ আসরে তুমুল যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে ৩২ দেশ। টানা এক মাস চলবে এ যুদ্ধ। একবিংশতম ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের গুরুদায়িত্ব পেয়েছে ভৌগলিকভাবে বিশ্ব মানচিত্রের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়া। বিংশ শতাব্দীর সেরা গোলরক্ষক ‘স্পাইডার’ লেভ ইয়াসিনের বদৌলতে ফুটবলে রাশানদের আছে আলাদা নামডাক।

এবার সেটা ছাপিয়ে যাবার চ্যালেঞ্জ পুতিনের দেশের। ইতিহাস সমৃদ্ধ ও প্রকৃতিদেবীর অপার সৌন্দর্য্যে ঘেরা এই স্বর্গ রাজ্যে বিশ্বকাপকে ঘিরে সবকিছুই করা হচ্ছে বেশ ঢালাওভাবে। বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে রাশিয়ার ১১টি শহরে প্রস্তুত করা হয়েছে ১২টি স্টেডিয়াম, যার ছয়টিই তৈরি হয়েছে বিশ্ব আসর উপলক্ষ্যে! বিশ্বকাপে স্টেডিয়াম নির্মাণ ও পুনঃসংস্কারে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার!

বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম নিয়ে ছয় পর্বের ধারাবাহিকের পঞ্চম পর্বে আজ থাকছে আরো দুটি স্টেডিয়ামের টুকিটাকি।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে রাশিয়ার চ্যালেঞ্জ কী?
--------------------------------------------------------

স্পার্তাক স্টেডিয়াম, মস্কো
ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের সব প্রস্তুতি শেষ করে এনেছে স্বাগতিক রাশিয়া। খেলার জন্য প্রস্তুত টুর্নামেন্টের ১১ শহরের ১২ স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপের ১২ ভেন্যুর একটি মস্কোর স্পার্টাক স্টেডিয়াম।

বিশ্বকাপের ২১তম আসর অনুষ্ঠিত হচ্ছে রাশিয়ায়। ১১ শহরের মোট ১২ স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপের ৬৪ ম্যাচ। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে শুরু হবে বিশ্ব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। মাস ঘুরে আবার সেই লুঝনিকিতেই এসে শেষ হবে বিশ্বকাপ।

তবে একমাত্র মস্কোতেই দুটি স্টেডিয়ামে হবে খেলা। লুঝনিকি ছাড়া অপর ভেন্যু স্পার্টাক স্টেডিয়াম। দর্শক ধারণ ক্ষমতায় লুঝনিকির মত বড় না হলেও, রাশিয়ার অন্যতম নান্দনিক স্টেডিয়াম ধরা হয় স্পার্টাক স্টেডিয়ামকে। রাশিয়ার সবচেয়ে সফল ক্লাব স্পার্টাক মস্কোর মাঠ এটি। স্পার্টাক মস্কোর সাদা-লাল জার্সির আদলেই গড়া হয়েছে স্টেডিয়ামটি।

ফিফা বিশ্বকাপকে সামনে রেখে যে স্টেডিয়ামগুলো নতুন করে তৈরী করা হয়েছে, তার মধ্যে সবার আগে শেষ হয় স্পার্টাক স্টেডিয়ামের কাজ। ২০১৪'র সেপ্টেম্বরে নতুন করে চালু হয় এই স্টেডিয়াম।

গেলো বছরের ফিফা কনফেডারেন্স কাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাশিয়ার চার ভেন্যুতে। তার একটি ছিলো এই স্পার্টাক স্টেডিয়াম। কনফেডারেশন্স কাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণীসহ মোট ৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই ভেন্যুতে।

তবে বিশ্বকাপে বেড়েছে ম্যাচের সংখ্যা। রাউন্ড অব সিক্সটিনের একটি এবং গ্রুপ পর্বের ৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ৪৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার এই মাঠে। সেইন্ট পিটার্সবার্গের পর, শুধু মাত্র এই স্টেডিয়ামেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দু'দলই খেলবে। এ মাঠে ১৬ জুন আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে মেসির দল। আর ২৭ জুন সার্বিয়ার বিপক্ষে নিজেদের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে নেইমারের ব্রাজিল।

শুধু খেলার জন্যই না, স্টেডিয়ামটিতে আছে এমন কিছু স্থাপনা যা নজর কাড়বে ফুটবল ভক্তদের। স্টেডিয়ামে আছে একটি জাদুঘর। যেখানে সংরক্ষিত স্পার্টাক মস্কো ক্লাবের নানা ইতিহাস। প্রবেশ পথে আছে একটি ভাস্কর্যও। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে দর্শকদের জন্য দারুণ এক আকর্ষণ হতে পারে স্পার্টাক স্টেডিয়াম।

ভোলগোগ্রাদ অ্যারেনা, নভোলগোগ্রাদ
রাশিয়া বিশ্বকাপের অন্যতম ভেন্যু ভলগোগ্রাদ অ্যারেনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে 'ব্যাটল অব স্তালিনগ্রাদের' জন্য বিখ্যাত স্তালিনগ্রাদের বর্তমান নাম ভলগোগ্রাদ। বিশ্বকাপের জন্য নবনির্মিত স্টেডিয়ামটির আসন সংখ্যা প্রায় ৪৬ হাজার। এই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে গ্রুপ পর্বের ৪টি ম্যাচ। খেলবে ইংল্যান্ডের মত ফেবারিট দল।

বিশ্ব-রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এক স্থান স্তালিনগ্রাদ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের ৬ মাস ব্যাপী যুদ্ধের পরই পতন হয় জার্মানির। রক্তক্ষয়ী সেই সংঘর্ষ হয়েছিল স্তালিনগ্রাদে। যেই যুদ্ধটি পরিচিত ব্যাটল অব স্তালিনগ্রাদ।

সেই শহরের নাম এখন পরিচিত ভলগোগ্রাদ। ভলগা নদীর তীর ঘেঁষা এই শহরটি রাশিয়ার শিল্প ক্ষেত্রে রেখে আসছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ২০১৮ বিশ্বকাপের অন্যতম ভেন্যু শহরের স্টেডিয়াম ভলগোগ্রাদ অ্যারেনা।

ভলগা নদীর তীর ঘেঁষেই নির্মাণ করা হয়েছে এই স্টেডিয়াম। ১৯৫৮ সালে এই স্থানেই তৈরী করা হয়েছিল সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম। যা ভেঙ্গে রাশিয়া বিশ্বকাপের জন্য নতুন রূপে নির্মিত হচ্ছে ভলগোগ্রাদ অ্যারেনা।

প্রায় ৪৬ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার এই স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে। ফিফাও কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্ট। এখন শুধুই অপেক্ষা মাঠে খেলা গড়ানোর।

ফিফা বিশ্বকাপের ৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ভলগোগ্রাদ অ্যারেনায়। সবগুলোই গ্রুপ পর্বের খেলা। ১৮ জুন এই ভেন্যুতে প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে তিউনিসিয়া ও ইংল্যান্ড। ২২ জুন নাইজেরিয়ার প্রতিপক্ষ চমক দেখানো আইসল্যান্ড। এর ২ দিন পরেই লড়বে সৌদি আরব ও মিশর। আর ভলগোগ্রাদ অ্যারেনায় বিশ্বকাপ উৎসব শেষ হবে ২৮ জুন জাপান-পোল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে।

২০১৫ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয় স্টেডিয়ামটির। শুরুতে এর সাথে একটি সুইমিং পুলসহ স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণের কথা থাকলেও, সময় স্বল্পতা ও অর্থ সংকটের কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। অবশ্য তারপরও স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য কমেনি এতটুকু। বরং নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন থাকায় ভলগোগ্রাদ দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয় এক ভেন্যুর নাম।

আরও পড়ুন :

এএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
২০২৬ বিশ্বকাপে জার্মানির কোচ নাগেলসমান
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল শনিবার
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট ‘গিনেস বুকে’ স্থান পাবে : প্রতিমন্ত্রী
টিভিতে আজকের খেলা
X
Fresh