দ্য ইউনিভার্স বস ইজ ব্যাক
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন তিনি। তাকে বলা হয়, ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ফেরিওয়ালা। মারমার কাটকাট ব্যাটিংয়ের কারণে বিশ্বের নামীদামি টি-টোয়েন্টি লিগে তাকে পেতে টানাহিঁচড়া শুরু হয় ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে। এ তিনটি বাক্য পড়ে নিশ্চয়-ই বুঝতে পারছেন, বলা হচ্ছে ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইলের কথা।
একদশ আইপিএল শুরু হয়ে গেলেও প্রথম দুই ম্যাচে সাইড বেঞ্চে বসে ছিলেন তিনি। দেখে মনে হচ্ছিল যে এবার দুধ-ভাত হিসেবেই তাকে দলে রেখেছে পাঞ্জাব। তৃতীয় ম্যাচে সেরা একাদশে ফিরেই বিধ্বংসী এক ইনিংস উপহার দিয়েছেন। হয়েছেন ম্যাচ সেরাও।
রোববার চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে কিংস ইলাভেন পাঞ্জাবের হয়ে মাত্র ৩৩ বলে ৬৩ রান করেন গেইল। তার ব্যাটে ভর করে পাহাড়সম পুঁজি পায় পাঞ্জাব। লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি চেন্নাই।
ঝড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হওয়া গেইল আইপিএলের মঞ্চে ফিরে খুশি। প্রথম দুই ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি। তৃতীয় ম্যাচে সুযোগটিকে দারুণভাবে কাজে লাগালেন। আর তাতেই উচ্ছ্বসিত ‘ইউনিভার্স বস’।
আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছক্কার মালিক গেইল। সেরা ব্যাটিং গড়ও তার। দশ আসরের মধ্যে দুবার টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানের তালিকার শীর্ষে ছিলেন। কিন্তু এ মৌসুমের নিলামে তাকে দলে নিতে আগ্রহ দেখায়নি কেউ।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ছেড়ে দেয়ার পর নিলামে উঠেন গেইল। প্রথম দুই ডাকে তাকে ডাকেনি কোনো ফ্রাঞ্জাইজি। তৃতীয় ডাকে অর্থাৎ দুদিনের নিলামের শেষ মুহূর্তে বেস প্রাইজে দলে নেয় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। দলে নিলেও প্রথম দুই ম্যাচে তাকে বাইরে বসিয়ে রাখে পাঞ্জাব। স্বরূপে ফিরে গেইল পেয়েছেন আইপিএলের ৫১তম ম্যাচসেরার পুরস্কার।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে গেইল ছিলেন খোশ মেজাজে। কথার ঝাপি খুলে গেইল বলেন, আমি আমার পুরো ক্যারিয়ারে নিজেকে এতোটা তরুণ কখনো মনে করিনি। মনে হচ্ছে ২৫ বছরের তরুণ যুবা আমি। দ্য ইউনিভার্স বস ইজ ব্যাক।
আজ (রোববার) সকালেই একটি মেসেজ পেলাম যে আমি চেন্নাইয়ের বিপক্ষে খেলছি। আমি দুহাত ভরে সুযোগটি গ্রহণ করি। খুব আগ্রহ নিয়ে একটি ম্যাচের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। আজ পেয়েছি এবং নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজে লাগিয়েছি। স্বরূপে ফিরে খুব ভালো লাগছে। তবে আইপিএলে খেলার সুযোগ না পেলেও জীবন থেমে থাকত না।’ কথাগুলো যে তিনি অভিমান করেই বলেছেন সেটা বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয় কারো।
গেইল বলেন, গেইল তোমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। আমি এখানে এসেছি দর্শকদের আনন্দ দিতে। ওরা সবাই ইউনিভার্স বসকে দেখার অপেক্ষায় ছিল। এটা তাদের জন্য উপহার। সত্যি বলতে তাদের জন্যই তো ব্যাটিং করি। আমি ক্যারিয়ারের ইতি টানার আগ পর্যন্ত তাদের আনন্দ দিয়ে যাবো।
মূলত পারফরম্যান্সের কারণে গেইলকে দলে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেনি কোনো ফ্রাঞ্চাইজি। তবে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে গত রাতে গেইল ছিলেন বিধ্বংসী। ৭ চার ও ৪ ছক্কায় খেলেন ৬৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস। শুক্রবার একই মাঠে সাকিব আল হাসানদের সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে আতিথেয়তা দেবে পাঞ্জাব। গেইলের সামনে আরেকটি অগ্নি পরীক্ষা অপেক্ষা করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এএ
মন্তব্য করুন