অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়ায় হতাশ কোচ মারুফুল হক
কয়েকদিন আগে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দল। এবার তাদের লক্ষ্য এএফসি এশিয়ান কাপের কোয়ালিফাই রাউন্ড। এই মিশনে আজ রাতে ভিয়েতনামের উদ্দেশ্যে রওনা হবে মারুফুল হকের শিষ্যরা। তবে এই টুর্নামেন্টের প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়ায় হতাশ কোচ মারুফুল হক
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোচ মারুফুল হক বলেন, ১৬ আগস্ট এখানে সংবাদ সম্মেলনে দৃঢ় কণ্ঠে বলেছিলাম সাফে চ্যাম্পিয়ন হতেই যাচ্ছি। কিন্তু এই মুহুর্তে সেই কণ্ঠে বলতে পারছি না আমরা কোয়ালিফাই করব। এর পেছনে নানা কারণ রয়েছ।
মূলত, ইনজুরি এবং খেলোয়াড়দের ডেঙ্গু নিয়ে পূর্ণ শক্তির দল গঠন করতে পারেনি বাংলাদেশ। এ ছাড়াও খুব বেশি সময় একত্রে অনুশীলন করতে পারেননি বলে আত্মবিশ্বাস কম পাচ্ছেন মারুফুল।
তিনি বলেন, ৪ তারিখে ট্রেনিং শুরু করেছি। ৫ তারিখে একটা ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলেছি। টাইম ছিল বিকাল ৪টা, আমরা সাড়ে তিনটায় ওয়ার্ম আপ শুরু করেছি, এরপর ওই দলের কোচ এসে জানাল ম্যাচ শুরু হবে সাড়ে চারটায়। এক ঘণ্টা ওয়ার্ম আপ করে ছেলেরা খেলতে নেমেছে। সেই ম্যাচের শেষ দিকে আমাদের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটা খেলোয়াড় রুস্তম হোসেন দুখু, তাকে নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা ছিল।
‘আক্রমণ বা রক্ষণাত্মক সেটপিসে তার ওপর আমাদের একটা ভরসার জায়গা ছিল। ওই ম্যাচে ওর এসিএল আর মেনিস্কাস দুইটাই টিয়ার হয়। যেটা অপারেশন ছাড়া কোনোভাবেই সারানো সম্ভব না। ওর আর্থিক অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। বাফুফে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে বলে কথা দিয়েছে।’
দলের ডেঙ্গুর আক্রমণ নিয়ে এই কোচ বলেন, ৬ তারিখে যখন আমরা অনুশীলনে আসি, ৬ ও ৭ তারিখ আমাদের পর্যায়ক্রমে ৭ জন খেলোয়াড় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। ফলে ১২-১৩ জনকে নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছি এবং জাতীয় দলে ৪ খেলোয়াড় যারা গিয়েছিল, আমাকে জানানো হয় তাদেরকে তিন দিনের ছুটি দিতে হবে।
একটা টুর্নামেন্টের আগে আরও বেশি সময় অনুশীলন প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন মারুফুল। একটা দলের সঠিক রসায়ন তৈরি করতে সকলকে একসঙ্গে আরও বেশি সময় অনুশীলন প্রয়োজন। এছাড়া ভিয়েতনাম গিয়েও অনুশীলনের খুব একটা সময় পাবে না বাংলাদেশ। এত কম সময়ের প্রস্তুতিতে ভালো খেলা কঠিন।
মারুফুল বলেন, এটা ফুটবল খেলা, এটা ক্রিকেট কিংবা কোনও ইন্ডিভিজুয়াল খেলা না যে ম্যাচের আগের দিন বা ম্যাচের দিন এসে যোগ দিয়ে খেলে ফেলবে। ফুটবলে কম্বিনেশনের প্রয়োজন আছে। এই কম্বিনেশনের জন্য মিনিমাম ৭ দিনও আমার মনে হয় যথেষ্ট না। বিশেষ করে এটা একটা যুব দল।
‘যুব দলে ১৫ দিন সময় নিয়ে আমরা সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। ওখানে খেলোয়াড়রা অমানবিক পরিশ্রম করেছে। তাদের মনোযোগ ছিল, সে কারণে আমরা ১৫ দিন অনুশীলন করে জিততে পেরেছি। এবার কি হবে তা আমি বলতে পারছি না।’
সল্প সময় হাতে নিয়ে এত বড় একটা টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়া বিষয়ে দায় নিজের কাধেই নিলেন কোচ মারুফুল। তিনি বলেন, আমরা বোঝাতে পারিনি এই টুর্নামেন্টটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল নাকি জাতীয় দলের প্রীতি ম্যাচ। আমি কাউকে বোঝাতে পারিনি সেটা আমার ব্যর্থতা। নেপাল থেকে আসার পরে যদি আমি তাদের নিয়ে নিবিড় অনুশীলন করতে পারতাম, তাহলে আমি আপনাদের কথা দিতে পারতাম যে বাংলাদেশ এখান থেকে কোয়ালিফাই করতে পারবে।
‘কারণ, আমি ভিয়েতনাম-সিরিয়ার খেলা দেখেছি, ভুটানের খেলা খুব কাছে থেকে দেখেছি। গুয়াম আমাদের থেকে একটু নিচে আছে, তারপরও যেহেতু তারা কম্পিটিশনে আছে... আমি মূলত ভিয়েতনাম আর সিরিয়াকে মূল প্রতিপক্ষ ধরছিলাম। তারা রিচেবল ছিল, তাদের কাছ থেকে পয়েন্ট পাওয়া আমাদের দলের জন্য কোনো সমস্যা ছিল না। সব ঘাটতি মিলিয়ে আমরা সে পর্যায়ে আশ্বাস দিতে পারছি না। ’
আরটিভি/এসআর
মন্তব্য করুন