• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ভারতীয় বুকির ফাঁদে নিষিদ্ধ হচ্ছেন টেইলর

স্পোর্টশ ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:০৮
ব্রেন্ডন টেইলর

গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর। দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে দেশটির ক্রিকেটের উত্থান-পতন সবই দেখেছেন। যদিও পতনটাই বেশি দেখতে হয়েছে তাকে।

তবে পতনের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ব্যাট কিংবা উইকেট কিপিং গ্লাভস হাতে। ৩৪ বছর বয়সী টেইলরের রাজকীয় বিদায় না হলেও জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট তথা দেশটির ক্রিকেট সমর্থকেরা তাকে আজীবন স্মরণ করবে নিশ্চিতভাবে।

কিন্তু টেইলরও যে পাপ মুক্ত নন! অবসরের প্রায় চার মাস পর জানা গেল, টেইলরও পা দিয়েছিলেন বুকির ফাঁদে। সোমবার প্রায় চার পৃষ্ঠার দীর্ঘ বিবৃতিতে উঠে আসে কীভাবে পা দেন ভারতীয় বুকির ফাঁদে। এ নিয়ে টেইলর বিব্রত ও ক্ষমা প্রার্থী।

‘২০১৯ সালের অক্টোবরের শেষদিকে, আমাকে ভারতের এক ব্যবসায়ী অনুরোধ করে জিম্বাবুয়েতে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্পনসরশিপের বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে। আমাকে বলা হয়েছিল ভারতে যাওয়ার জন্য ১৫ হাজার ডলার পাব। আমি সেটাকে প্রত্যাখান করতে পারিনি কারণ ভীত ছিলাম। কিন্তু সময়টাও এমন ছিল যখন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ড ছয় মাস আমাদের বেতন দিতে পারছিল না। এটাও নিশ্চিত ছিলাম না জিম্বাবুয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে যেতে পারবে নাকি। তাই আমি ভারতে যাই। আলোচনাও হয়, আমরা একটা ডিনারে বসি।’

টেইলর বলেছেন, ডিনারের সময় এক লোক তাকে মাদক গ্রহণের জন্য বলেন। বুকিরা এখানেই ক্ষান্ত ছিলেন না, টেইলরের মাদক নেওয়ার মুহূর্তটা ধারণ করে রাখেন ভিডিওতে। এবং পরে সেই ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাক-মেইল করে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন।

‘সেখানে সে ড্রিংকস নিয়ে হাজির হয়। একইসঙ্গে আমাকে কোকেইন খাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বোকার মতো সেটার কিছুটা নিয়ে নিই। যা পরে আমি বেশ কয়েকবার গ্রহণ করি। তারা কীভাবে আমার সঙ্গে ওই রাতে এমনটা করতে পারল তা আমাকে এখনও ভাবিয়ে তোলে।’

টেইলর আরও বলেছেন, ‘ওই রাতের পর দিন একই লোক আমার হোটেলের রুমে এসে মাদক নেওয়ার ভিডিওটি দেখায় এবং আমাকে বলে, আন্তর্জাতিক ম্যাচে যদি তাদের চাওয়া মতো স্পট ফিক্সিং না করি সেক্ষেত্রে তারা ভিডিওটা ছেড়ে দেবে।’

টেলর বলেছেন, ‘আমাকে তারা ১৫ হাজার ডলার ঠিকই দেয়, সঙ্গে বলে দেয় ফিক্সিংয়ের জন্য এটা একটা ডিপোজিট। আমি যদি সেটা ঠিকভাবে করে দেই তাহলে আরও ২০ হাজার ডলার দেবে। আমি অনেকটা বাধ্য হয়ে টাকাটা নেই এবং ভারত ছাড়ি। আমি মেনে নিয়েছিলেম, এ ছাড়া আমার কোনো বিকল্প পথ নেই এবং দেশে ফিরে ভাবছিলাম কীভাবে এর থেকে বের হওয়া যায়।’

এমন ঘটনার চার মাস পর ব্রেন্ডন টেইলর আইসিসিকে নিজে থেকে সব জানায়। তবে টেইলরের মনে হয়েছে, তিনি জানাতে দেরি করে ফেলেছেন এবং ভালোভাবে বোঝাতে পারেননি আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে।

‘আইসিসিকে জানাতে চার মাস সময় লেগে গিয়েছিল। বুঝতে পারছি এটা অনেক দেরি কিন্তু আমি ভেবেছি সবাইকে বাঁচাতে পারব, বিশেষত আমার পরিবারকে। আমি নিজের মতো করে আইসিসিকে জানিয়েছি। আইসিসির পুরো তদন্তের সময় আমি সৎ ছিলাম। আমি মনে করি এখনও অনেক বিষয়ের জন্য আমার সমর্থন ও পরামর্শ দরকার। আমাকে বলা হয়েছে, আইসিসি কয়েক বছরের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। আমি এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছি। আশা করছি আমার গল্পটা আইসিসিকে পরে অন্য ক্রিকেটারদের দ্রুত জানানোতে উৎসাহী করবে।’

টেইলর এমন কর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থী। তবে স্বীকার করেছেন, কখনও পাতানোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।

‘আমি এটাও একইসঙ্গে জানাতে চাই, কখনো কোনো ধরনের ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমি হয়ত অনেক কিছু করেছি কিন্তু ধোঁকা দেইনি। ক্রিকেটের মতো সুন্দর খেলাটার জন্য আমার ভালোবাসা অনেক বেশি। যেকোনো হুমকিকে পথে ছুঁড়ে ফেলতে পারি এটার জন্য। এর জন্য আমি সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থী।’

এম/এসকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh