• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

২০২৭ বিশ্বকাপেই একক আয়োজক হওয়া সম্ভব: ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

  ১০ জুন ২০২১, ১৭:২৫
2027 world cup cricket venue bangladesh, youth and sports ministry Md Zahid Ahsan Russel, rtv online
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল

২০২৭ বিশ্বকাপে একক আয়োজক হতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। আগামী ১৫ জুন থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। আরটিভি নিউজের মুখোমুখি হয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক কথা বলেছেন করোনাকালীন ক্রীড়াঙ্গনের চ্যালেঞ্জ, আসন্ন অলিম্পিক গেমস ও বিশ্বকাপ আয়োজনের সামর্থ্য নিয়ে।

আরটিভি নিউজ

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর আপনার কোনও আলাদা লক্ষ্য ছিল?

জাহিদ আহসান রাসেল

লক্ষ্য তো অবশ্যই ছিল। পাঁচ বছর পর আমার ক্রীড়াঙ্গনকে একটা পর্যায়ে দেখতে চাই। এই পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। স্টেডিয়াম, জিম, সুযোগ সুবিধা যাই আছে সেগুলোকে কাজে লাগানো। তবে ক্রীড়াবিদরা অনুশীলন কোথায় করবে? দিনের পর দিন খেলার মাঠ হারিয়ে যাচ্ছে। স্টেডিয়ামের ব্যবহার বাড়ছে। যা আছে সেগুলো ধরে রাখতে হবে। সব কিছুই পরিকল্পনা মাফিকই চলছিল। এমন সময় শুরু হয় করোনা মহামারী। প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলাম দায়িত্ব নেয়ার পর মনুষ্যসৃষ্ট সমস্যায় পড়তে হতে। তবে মহামারী যে বড় প্রতিবন্ধকতা হবে সেটা জানা ছিল না।

আরটিভি নিউজ

করোনা মহামারীতে অনেক ইভেন্ট স্থগিত হয়েছে। তবু বাংলাদেশ গেমসের মতো বড় ইভেন্ট আয়োজন আয়োজন সম্পন্ন করতে পেরেছেন। কেমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে?

জাহিদ আহসান রাসেল

মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আমরা ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলাম। ৫০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইভেন্ট করার পরিকল্পনা ছিল। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস আঘাত হানে। সব আয়োজন ভেস্তে যায়। মহামারীকে পাশ কাটিয়ে আমরা বিভিন্ন খেলা আয়োজন করি। ধাপে ধাপে ফুটবল, ক্রিকেট শুরু হয়। অন্যান্য ইভেন্টও মাঠে ফিরতে থাকে। শুরুতে বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমস স্থগিত হলেও আমরা এটি শেষ করতে পেরেছি।

আরটিভি নিউজ

টোকিও অলিম্পিকে সরাসরি যাচ্ছেন আরচার রোমান সানা। সাঁতারে প্রতিনিধিত্ব করছেন আরিফুল ইসলাম ও জুনাইনা আহমেদ। শুটিংয়ে যাচ্ছেন আবদুল্লাহ হেল বাকী। ৪০০ মিটার ইভেন্টে অংশ নেয়ার কথা জহির রায়হানের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া ইভেন্টে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কতটুকু?

জাহিদ আহসান রাসেল

সরাসরি যোগ্যতা অর্জন শুধু আরচারির রোমান সানাই করতে পেরেছে। এছাড়া বাকি ডিসিপ্লিনে ওয়াইল্ডকার্ডে অংশ নিচ্ছে। আরচারি ও শুটিং এই দুইটাতেই ভরসার সুযোগ রয়েছে। খেলোয়াড়রা অলিম্পিকের জন্য যাতে বেশি প্রস্তুতি নিতে পারে তাই সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স ও দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠিয়েছি। করোনা পরিস্থিতিতে অনেক দেশ এগুলো ইভেন্টে অংশ নিতে পারেনি। অথবা যেতে চায়নি। তবে আমরা চেষ্টা করেছি খেলোয়াড়দের সেরা সুযোগগুলো দিতে। আমরা আশা করি ভালো কিছু হবে। সত্যি বলতে অলিম্পিক গেমসের মতো জায়গায় গোল্ড, সিলভার, ব্রোঞ্জ অর্জনের মতো সক্ষমতা আমাদের তৈরি হয়নি। তবে আমি আশাবাদী অচিরেই আমরাও ভালো ফল করতে পারবো।

আরটিভি নিউজ

সাম্প্রতিক সময়ে আরচারিতে বেশ সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ। তাদের কাছ থেকে কেমন প্রত্যাশা রয়েছে?

জাহিদ আহসান রাসেল

আরচারির ট্রেনিংয়ের জন্য আমরা স্পেশালাইজড ভেন্যু দিয়েছি। টঙ্গীর আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে দিন-রাত ট্রেনিং করার মতো ব্যবস্থা করে দিয়েছি। শুটিংয়ে যেমন অনেক ট্রেনিং করতে হয় আরচারিতেও ঠিক তেমনই অবস্থা। আরচারদের ট্রেনিং ক্যাম্প কিন্তু বন্ধ থাকে না। শুধু ঈদের ছুটি ছাড়া সব সময় তারা ক্যাম্পেই থাকে। এমন ধারা অব্যাহত থাকলে টোকিও অলিম্পিকে না পারলেও আগামী আসরে ঠিকই ভালো ফল পাবো।

আরটিভি নিউজ

আইসিসির ওয়ানডে বিশ্বকাপে আয়োজক হওয়ার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আপনার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। বর্তমানের অবকাঠামো অনুযায়ী একক আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কতটুকু?

জাহিদ আহসান রাসেল

বর্তমান অবকাঠামো অনুযায়ী এককভাবে আয়োজক হওয়ার মতো অবস্থা আমাদের নেই। গতকাল পাপন ভাই এসেছিলেন। বিভিন্ন স্টেডিয়ামের ব্যাপারে প্রস্তাবনা দিয়েছেন। ফতুল্লা স্টেডিয়ামে পানিতে ডুবে গেছে। আশেপাশে বাড়ি-ঘর, কল-কারখানা হবার কারণে পানি নিষ্কাশনের অবস্থা বেশি ভালো না। এরই মধ্যে বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি স্টাডি করাচ্ছি। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে সংস্কার কাজ শুরু করবো। চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, বরিশালসহ কয়েকটি স্টেডিয়ামকে আধুনিকায়নের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে বিসিবি। একটা ইভেন্ট আয়োজনের জন্য বিশ্বমানের বেশ কয়েকটি স্টেডিয়াম দরকার। অবশ্যই আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করবো। ২০১১ সালেও আমরা সহ-আয়োজক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছি। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এককভাবেই আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছি। আশাকরি আগামী দিনেও একক আয়োজক হিসেবে আমরা সফল হবো।

আরটিভি নিউজ

সম্প্রতি ২০৩১ সাল পর্যন্ত কর্ম পরিকল্পনা দিয়েছে আইসিসি। সেখানে ২০২৭ ও ২০৩১ সালে দুটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ রয়েছে। মন্ত্রণালয় ও বিসিবি’ দ্রুত কাজ এগিয়ে নিলে বাংলাদেশ ২০২৭ বিশ্বকাপ আয়োজন করতে সক্ষম?

জাহিদ আহসান রাসেল

এখন ২০২১ সাল চলছে। আরও ছয় বছর বাকি। আমি মনে করি ২০২৭ সালেই আয়োজন সম্ভব। আমার মতে এটা লম্বা সময়। যখন একটা দেশ বিশ্বকাপের আয়োজনের জন্য যখন মনোনীত হয় তারপরই অবকাঠামো ও সুযোগ সুবিধা নিয়ে কাজ শুরু করে। আমরা আগামী বিশ্বকাপকে লক্ষ্য রেখেই কাজ করবো। এরই মধ্যে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি করছি। বিশ্বমানের সব সুযোগ সুবিধা থাকছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের ডিজাইন অনুমোদন করেছেন। ফিজিবিলিটি স্টাডি ও কনসালটেন্ট নিয়োগ প্রক্রিয়াও টেন্ডারে চলে গিয়েছে। এছাড়া অন্যসব স্টেডিয়ামের আধুনিকায়নের প্রয়োজন তা করতে আমরা প্রস্তুত আছি।

আরটিভি নিউজ

২০১৮ সালে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হওয়ার কথা। বর্তমানে এর অগ্রগতি কতটুকু?

জাহিদ আহসান রাসেল

পূর্বাচলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নামে স্টেডিয়ামটি করার দায়িত্ব ক্রিকেট বোর্ড নিজেই নিয়েছে। ২০২৭ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করলে অবশ্যই এই স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে হবে। যদিও এখনও কাজের অগ্রগতি নেই। আমরা চাইবো অবশ্যই যাতে তারা কাজ দ্রুত শুরু করে দেয়। কোনও কারণে ক্রিকেট বোর্ড যদি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে এর দায়িত্ব মন্ত্রণালয় নিতে প্রস্তুত।

আরটিভি নিউজ

পদ্মার পাড়ে ক্রিকেট স্টেডিয়াম করার পরিকল্পনা ছিল। বর্তমানে কাজ কত টুকু এগিয়েছে?

জাহিদ আহসান রাসেল

পদ্ম নদীর পাড়ে তথা মানিকগঞ্জে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম করার পরিকল্পনা করেছিলাম। এরই মধ্যে টেন্ডার ড্রপ প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। আশাকরি দ্রুতই এর কাজ শুরু করতে পারবো।

আরটিভি নিউজ

আপনি বলেছেন খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ শুরু করবেন। মূল সমস্যা কোথায়?

জাহিদ আহসান রাসেল

ফতুল্লার স্টেডিয়ামটি করার সময় আশেপাশে লোকালয় ছিল না। এখনও স্টেডিয়ামের আশে পাশে অনেক স্থাপনা তৈরি হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের সমস্যা বাড়ছে। ঢাকার খুব কাছে এই ভেন্যু হওয়ায় আমরা বিশ্বকাপের জন্য এটিকে প্রাধান্য দিচ্ছি।

আরটিভি নিউজ

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সংস্কার কাজ কবে নাগাদ শুরু হচ্ছে?

জাহিদ আহসান রাসেল

স্টেডিয়ামটি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন ব্যবহার করে আসছে। গেল বছরই সংস্কারের টেন্ডার হয়ে গেছে। অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন এই মাসের মধ্যেই বিকেএসপি ও আর্মি স্টেডিয়ামে নিজেদের ইভেন্ট সরিয়ে নিচ্ছে। তবে ফুটবলের বিভিন্ন লিগ আয়োজনের কারণে এখনও আমাদের এটি বুঝিয়ে দেয়নি বাফুফে। তারা সিদ্ধান্ত জানানোর পরই আমরা আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করবো।

আরটিভি নিউজ

আপনি বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) চেয়ারম্যান। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের আয়োজক হয়েছে বিকেএসপি। বৃষ্টির কারণে মাঠ ডুবে যেতে দেখা গেছে।

জাহিদ আহসান রাসেল

বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বৃষ্টির কারণে মাঠ ডুবে যেতে দেখেছি। এই মাঠগুলোর পানি নিষ্কাশনে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে।

ওয়াই

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
২০২৬ বিশ্বকাপে জার্মানির কোচ নাগেলসমান
বিশ্বকাপে ওপেনিংয়ে রোহিতের সঙ্গী কোহলি!
যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের দায়িত্বে বাংলাদেশের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক কোচ
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড চূড়ান্ত, বিমানের টিকিট পাচ্ছেন যারা 
X
Fresh