• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বান্ধবীকে মুসলিম বানিয়ে বিয়ে করেন হামজা

  ১৮ মে ২০২১, ২১:৩৯
hamza choudhury, Palestinian flag, Leicester City, bangladeshi muslim, cup victory, Olivia Fountain, rtv online
স্ত্রী অলিভিয়ার সঙ্গে হামজা চৌধুরী

‘যখন আমাকে হামজার সৎ বাবা বলা হয় তখন খুব কষ্ট পাই। হামজা নিজেও বিষয়টি নিয়ে মন খারাপ করে। মাত্র নয় মাস ছিল তার বয়স। তখন থেকেই আমি ও তার মা তাকে বড় করেছি। বাংলা-সিলেটি বলা, ইসলাম চর্চা সব কিছুই ছোট থেকে পরিবারের কাছেই শিখেছে। নিজেকে বাংলাদেশি ব্রিটিশ বলতে গর্ববোধ করে সে।’ আরটিভি নিউজকে কথাগুলো বলছিলেন সম্প্রতি লেস্টার সিটির হয়ে এফএফ কাপ জয়ী হামজা চৌধুরীর বাবা দেওয়ান গোলাম মোর্শেদ চৌধুরী।

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে চেলসির বিপক্ষে ইংলিশ এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে ১-০ গোলে জয় পায় লেস্টার। শিরোপা উদযাপনের সময় ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে সবার নজর কাড়েন হামজা। লেস্টারের এই মিডফিল্ডার জন্মদাতা বাবা ছিলেন গ্রানাডার। মোর্শেদ চৌধুরীর সঙ্গে মা রাফিয়া চৌধুরীর বিয়ে হয়। তাদের কাছেই বড় হয়েছেন। মোর্শেদ-রাফিয়ার ঘরে আরও তিন সন্তান রয়েছে। তাছনীম, মেহেদী, মাহীর মধ্যে হামজাই সবার বড়।

সেদিন ফাইনালে মাহী ছাড়া সবাই উপস্থিত ছিলেন গ্যালারিতে। প্রথমবার এমন ট্রফি জয়ের আনন্দের শেষ ছিল না পরিবারের সদস্যদের। তার মধ্যে হঠাৎ সবাই দেখতে পান হামজার হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা।

হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ফোন আলাপে মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ‘পতাকা নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মেডেল হাতে তুলে হামজা। সত্যি বলতে ওই মুহূর্তে আমাদের চোখে পানি চলে আসে। আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরি। আমাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন হামজার স্ত্রীও। তখন সে বলছিল, এর চাইতে ভালো কিছু আর হতেই পারে না।’

লেস্টার সিটিতেই ফুটবলে হাতেখড়ি। খেলেছেন ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২১ জাতীয় দলের জার্সিতে। ২০১৬ সালে ইংলিশ ইন্টেরিয়র ডিজাইনার অলিভিয়া ফাউন্টেনের সঙ্গে পরিচয় হামজার। পরের বছর বিয়ে করেন তারা। তার আগে খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন অলিভিয়া। তাদের রয়েছে দুই সন্তান। ২০১৮ সালে কোলজুড়ে আসে মেয়ে। নাম এনাইয়া। ২০২০ সালে ছেলে ঈসার জন্ম। হামজা-অলিভিয়া প্রথমে লেস্টারের অ্যালেস্টন এলাকায় পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন। সম্প্রতি আলাদা বাসা নিয়েছেন। তবে উৎসব ও ছুটির দিনগুলো চৌধুরী পরিবার একসঙ্গেই পালন করে থাকেন তারা।

হামজার বাবা বলেন, ‘২০১৭ সালে স্থানীয় মসজিদে আনুষ্ঠানিকভাবে শাহাদা বাক্য পাঠ করে অলিভিয়া। তারপর তাদের বিয়ে হয়। কয়েকদিন আগেই গেল ঈদুল ফিতর। আমার ছেলের বৌ (অলিভিয়া) সব আয়োজন করেছিল। খাবার, সাজ-সজ্জা সব কিছুর দায়িত্ব নিয়েছিল। এবারের ঈদে আমার কাছে বিশেষ। আমরা সবাই মিলে উদযাপন করেছি। বিশেষ করে নাতনী (এনাইয়া) এগুলো দেখে এতটাই খুশী হয় যে পরদিনও বলছিল, কবে ঈদ আসবে। কোরবানি ঈদেও আমরা উদযাপন করবো। তাকে আরও দুই মাস অপেক্ষা করতে বলেছি।’

সম্প্রতি ইসলায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদ হিসেবে মাঠে ফিলিস্তিনের পতাকা তুলে নেন হামজা। তার পর থেকে বাংলাদেশ থেকে আত্মীয়রা অভিনন্দন জানাচ্ছে তার পরিবারকে। শুধু তাই নয় ইংল্যান্ডে থাকা মুসলমানরাও তাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

মোর্শেদ বলেন, ‘বাংলাদেশি ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেকে মুসলমান আমাদের প্রতিবেশী। তারা হামজার জন্য আমাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন। দেশ থেকেও ফোন করে সবাই তার প্রশংসা করছেন। সবাই তার জন্য গর্বিত।’

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামে জন্ম মোর্শেদ চৌধুরীর। তার দাবি বেশ কিছু গণমাধ্যম জানিয়ে আসছে, স্নানঘাট হামজার নানা বাড়ি। আসলে নানা বাড়ি নয় সেটা দাদা বাড়ি।

‘হামজার নানা বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের বনগাঁও গ্রামে। তবে তাদের পরিবারের সবাই ইংল্যান্ডেই থাকেন। হামজা ছোট থেকে আমার বাবা বাড়ি অর্থাৎ তার দাদার বাড়িতেই যাতায়াত করে আসছে।’

ওয়াই

আরটিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন...

https://www.facebook.com/rtvnews247

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh