• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

‘লিটল মাস্টার’ একাধিক ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ একজনই

  ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১২:২৬
sachin tendulkar, sachin-rtv-online, kushall yasir
শচিন টেন্ডুলকার

শনিবার (২৪ এপ্রিল) ৪৮তম জন্মদিন পালন করছেন শচিন রমেশ টেন্ডুলকার। বিশেষ এই দিনে চলমান আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস দলের সঙ্গে থাকার কথা ছিল তার। যদিও কয়েকদিন আগে করোনা থেকে সেরে ওঠায় আপাতত বিশ্রামে রয়েছেন। দিনটি পরিবারের সঙ্গে পালন করবেন ভারতের ক্রিকেট কিংবদন্তি।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য অর্জনের মধ্যে বিশেষ ডাক নামও পেয়েছেন ১৯৭৩ সালে মুম্বাইতে জন্ম নেয়া এই তারকার। ক্রিকেটে ‘লিটল মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত তিনি। ছোট গড়ন ও ব্যাট হাতে দুর্দান্ত থাকায় এই খেতাব অর্জন করেছিলেন শচিন। তার আগে আরও দুইজনকে একই কারণে এই নামে ডাকা হতো। তবে শচিন নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাই ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ বলা হয় তাকে।

ক্রিকেটের প্রথম ‘লিটল মাস্টার’ ডাকা হতো হানিফ মোহাম্মদকে। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পাকিস্তানের জার্সিতে ৫৫ টেস্ট খেলেছেন। ৪৩.৯৮ গড়ে এই ব্যাটারের মোট রান ছিল ৩ হাজার ৯১৫। ১২টি সেঞ্চুরি ও ১৫টি হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। তার অবসরের আগে ওয়ানডে ক্রিকেটের আবির্ভাব হয়নি।

৭০ এর দশকে ভারতের হয়ে অভিষেক হওয়া সুনীল গাভাস্কার আশির দশকের শেষ দিক পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে ১২৫ টেস্ট খেলেছেন। তুলেছেন ১০ হাজার ১২২ রান। ৪৫টি পঞ্চাশ ও ৩৪টি শতক রয়েছে তার নামের সঙ্গে। হানিফ মোহাম্মদের পর ‘লিটল মাস্টার’ উপাধিটা পেয়েছিলেন তিনিই। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে সানি গাভাস্কারের পরিসংখ্যান নজর কাড়া ছিল না। ১০৮ ম্যাচে রান তুলেছেন ৩ হাজার ৯২। একটি সেঞ্চুরি ও ২৭ টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে তার।

গাভাস্কারের বিদায়ের পর পরই নতুন ‘লিটল মাস্টার’ পেতে তেমন সময় লাগেনি ক্রিকেট বিশ্বের। নব্বইয়ের দশকে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা যেমন বাড়ছিল টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই সেরা পারফরমেন্স উপহার দিচ্ছিলেন শচিন। সময়ের সঙ্গে লিটল মাস্টার থেকে মাস্টার ব্লাস্টারে রূপান্তরিত হন তিনি। এই বিশেষণ কোনও ব্যক্তির দেয়া নয়। রান তোলার ক্ষমতা দেখে ম্যাচ চলাকালে ধারাভাষ্যকার, পত্রিকার শিরোনাম থেকে বিজ্ঞাপনে এই উপাধি ব্যবহার হতো।

১৯৮৯ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় শচিনের। খেলেছেন ২০১৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৪ বছরে অসংখ্য রেকর্ড গড়েছেন।

অবসরের আগে ২০০ টেস্টে করেছেন ১৫ হাজার ৯২১ রান। তুলেছেন ৪৬ উইকেট। ৪৬২ ওয়ানডে খেলে ১৮ হাজার ৪২৬ রান রয়েছে তার নামের পাশে। উইকেট আদায় করেছেন ১৫৪টি। একটি মাত্র টি-টোয়েন্টি খেলে ১০ রান ও একটি উইকেট তুলেছিলেন।

সাদা পোশাকে ৫১ সেঞ্চুরি। হাফসেঞ্চুরি ৬৮টি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে সেঞ্চুরি তুলেছেন ৪৯টি। ৯৬টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে তার।

সতীর্থদের কাছে আরেকটি নামে পরিচিত শচিন। সাধারণত ভারতের পাঞ্জাবে সম্মানের সঙ্গে বয়োজ্যেষ্ঠদের ‘পাজি’ বলে সম্বোধন করা হয়। দেশটির ক্রিকেটের প্রথম ‘পাজি’ ছিলেন কপিল দেব। ২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শচিন। এরপর হরভজন সিং তাকে ‘পাজি নাম্বার ওয়ান’ বলে ডেকেছিলেন। সেই থেকে সবাই তাকে ‘পাজি’ বলেই ডাকেন। তার আগে ‘শচিন ভাই’ বলে ডাকা হতো তাকে। এক সাক্ষাতকারে বিষয়টি জানান দলটির সাবেক পেসার আশিষ নেহারা।

ওই বছর বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও জেতা হয়নি শচিনের। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যেতে হয় ভারতকে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পর অবসরের ভাবনায় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার পরের অধ্যায়টা আরও রঙিন। ২০১০ সালে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ২০০ রানের ইনিংস খেলেন। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ শিরোপায় ‍চুমু দেন। ২০১৩ সালে টেস্টে সর্বোচ্চ ২০০তম ম্যাচ খেলে ২২ গজকে বিদায় জানান। সঙ্গে দুই ফরম্যাটে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০টি শতকের রেকর্ডও ছিল।

অসংখ্যা অর্জনের মধ্যে ২০১৯ সালে আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা পান তিনি। ভারতের সর্বোচ্চ ক্রীড়াসম্মান রাজীব গান্ধী খেলরত্নও জিতেছেন। ১৯৯৯ সালে পদ্মশ্রী ও ২০০৮ সালে পদ্মভূষণ সম্মানেও ভূষিত হন। ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরা ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’ মানেন তাকে।

ওয়াই

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh