লোহার জুতা পরা সেই ছেলে ডাক পেয়েছে জাতীয় ক্রিকেট দলে
মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, ছোটবেলা পায়ে সমস্যা থাকায় লোহার জুতা পরতে হয়েছে অনেকদিন। পায়ের সমস্যা কাটিয়ে ভালোভাবে চলতে পারবে কিনা ছেলে সেই শঙ্কায় ছিলেন বাবা-মা। অথচ আজ সেই ছেলেই হয়েছেন দ্রুতগতির বলার। ডাক পেয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলে।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় মিঠাপুকুরের শীতলগাড়ি গ্রামে বাড়ি মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ’র। সব বাধা পেড়িয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলে ডাক পাওয়ার খবরে জন্য শুভকামনা ও আনন্দ প্রকাশ করেছে গ্রামের মানুষ।
ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলামের ছেলে মুগ্ধ। সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকেই জেএসসি, এসএসসি ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন। বিকেএসপিতে খেলার পাশাপাশি অনূর্ধ্ব ১৭, ১৮ ও ১৯ দলে খেলেছেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু জাতীয় ক্রিকেট লিগে রংপুর বিভাগের হয়ে খেলছেন।
ক্রিকেটে নজরকাড়া পারফরম্যান্সের জন্য প্রথমবার ডাক পেয়েছে জাতীয় ক্রিকেট দলে। শ্রীলঙ্কা সিরিজের ২১ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াডে তার নাম রয়েছে।
মুগ্ধর উঠে আসার পেছনে রয়েছে তার লড়াকু মানসিকতা। জন্মের পর তাকে লাইফ সাপোর্টে থাকতে হয় ৪০ দিন। তিন বছর বয়সে দুই পা বাঁকা হয়ে মুড়িয়ে যেতে শুরু করে। এরপর ডাক্তারের পরামর্শে পরিয়ে দেয়া হয় লোহার জুতা। ডাক্তার জানিয়ে দেন ছেলে শুধু হাঁটতে পারবে। দৌঁড়াতে গেলে হতে পারে পঙ্গুত্ব। অথচ সেই লোহার শিকল ভাঙে আজ মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য জাতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গী হচ্ছেন।
মুগ্ধর জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবরে তার গ্রামের বাড়িতে লোকজন ভিড় করছে। ছেলের জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হওয়ায় বেশ আনন্দিত মা-বাবা। কদিন আগেও রংপুর ক্রিকেট গার্ডেনে জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন খুলনাকে হারানোর দৃশ্য দেখেছে মুগ্ধর পরিবার। সেই ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন রংপুরের দ্রুতগতির বোলার মুগ্ধ। ছেলের বোলিং নৈপুণ্য থেকে পুরস্কার গ্রহণ সবই মাঠে বসে উপভোগ করেছেন তারা।
এমকে
মন্তব্য করুন