একই দিনে নায়ক-ভিলেন দুই মেহেদী
শেষ ওভারে জিততে হলে জেমকন খুলনার লাগে ২২ রান। খুলনার তখন একমাত্র ভরসা আরিফুল হক। ফরচুন বরিশাল তখন নির্ভার মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে বল তুলে দিয়ে। তবে সেই নির্ভরতার প্রতিদান দিতে ব্যর্থ হয়েছেন মিরাজ।
দিনের প্রথম ম্যাচে শেখ মেহেদী হাসানের ব্যাটে-বলে ভর করে দারুণ এক জয় তুলে নেয় মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। ওই ম্যাচে মেহেদী ব্যাট হাতে ৫১ আর বল হাতে ম্যাচের শেষ ওভারে তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের কাছে হার মানে বেক্সিমকো ঢাকা।
তবে দিনের শেষ ম্যাচে মেহেদী মিরাজ ব্যাট হাতে যেমন ব্যর্থ ছিলেন, বল হাতেও হতাশ করলেন দলকে। শেষ ওভারে চার ছয়ে ২৪ রান দিয়ে জিতিয়ে দেন জেমকন খুলনাকে।
এই ম্যাচ দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। এক বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাকিবের ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষা গড়িয়েছে ৩৬৫ দিনের জায়গায় ৪০৮ দিন। অবশেষে সাকিব মাঠে ফিরেছেন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ দিয়ে জেমকন খুলনার হয়ে।
ফেরাটা হয়েছে জয়ের উৎসবে। যদিও তার নামের সঙ্গে পারফরম্যান্স একেবারেই মানায় না। বিশ্বসেরা এই অল-রাউন্ডারের। বল হাতে ৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। ব্যাট হাতেও জ্বলে উঠতে পারেননি ঠিকঠাক। ১৩ বলে ১৫ রান (২টি চার) করে সাজঘরে ফেরেন সুমন খানের বলে ক্যাচ দিয়ে।
ফরচুন বরিশালের দেয়া ১৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তাসকিন আহমেদের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই খুলনা হারিয়ে বসে দুই ওপেনারকে। ওভারের তৃতীয় বলে তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪ রান করা এনামুল হক বিজয়। পঞ্চম বলে ফেরেন ইমরুল কায়েস, রানের খাতা খোলার আগেই।
সাকিব আল হাসান তার পুরনো পজিশনেই নামেন ব্যাট করতে। তবে ১৫ রান যোগ করেই ফেরেন সাজঘরে। মাহমুদউল্লাহ সাকিবের আগেই ফেরেন ১৭ রান করে।
উইকেট যাওয়া আসার মিছিলে জহুরুল হক অমি করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৩১(২৬) রান। শামিম হোসেনের ব্যাটে আসে ১৮ বলে ২৬ রান।
খুলনা যখন হারের ক্ষণ গুনছিল তখনই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন আরিফুল হকে। তার ৩৪ বলে ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভর করে ৪ উইকেটের জয় পায় খুলনা।
বরিশালের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন তাসকিন ও সুমন খান। ১টি করে নেন মেহেদী মিরাজ ও কামরুল ইসলাম।
এর আগে সন্ধ্যায় টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে ফরচুন বরিশাল। ব্যাট করতে নেমে বরিশালের ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজকে ইনিংসের প্রথম বলেই ফেরান ফেরান শফিউল ইসলাম। আরেক ওপেনার তামিমও থিতু হতে পারেননি বেশিক্ষণ।
শহিদুল ইসলামের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন ১৫ বলে ১৫ রান করে।
তবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য পারভেজ ইমনের ৪২ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ায় খুলনা। অর্ধশতক পূর্ণ হবার পরই তাকে ফেরান হাসান মাহমুদ। পারভেজের ইনিংসে ছিল ৩টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারি।
ইমনের আগে ব্যাট করতে নামা আফিফ হোসেনকে মাত্র ২ রানে ফেরান সাকিব আল হাসান।
পারভেজ ছাড়া হতাশ করেছে বরিশালের টপ অর্ডার। মিডল অর্ডারে তৌহিদ হৃদয়ের ২৭ (২৫), মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ২১ (১০) ও তাসকিন আহমেদের ১২ (৫) রানে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৫২ রান তুলে তামিমের দল।
খুলনার হয়ে ৪ টি উইকেট নেন শহিদুল ইসলাম, ২টি করে উইকেট নেন শফিউল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। ১টি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।
এমআর/
মন্তব্য করুন