• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বর্ষায় ভরসা ডিঙ্গি নৌকা, অন্য মৌসুমে বাঁশের সাঁকো

রাশেদুজ্জামান, জয়পুরহাট

  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:৫২
বর্ষায় ভরসা ডিঙ্গি নৌকা, অন্য মৌসুমে বাঁশের সাকো

ব্রিজ না থাকায় বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে, জয়পুরহাটের মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক’শ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। বর্ষায় ভরসা ডিঙ্গি নৌকা আর শীতকালে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার। পঞ্চাশ বছর ধরে এমন বেহাল দশার করণে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

১৯৭০ সালে স্থাপিত হওয়ার পর জয়পুরহাট সদর উপজেলার মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির সঙ্গে আশপাশের গ্রামগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত হয়নি। তুলশী গঙ্গা নদীর কোল ঘেঁষে গড়ে উঠা এ স্কুলটিতে আসতে অপর পাড়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য নেই কোনও বিকল্প রাস্তা। সব ধকল সহ্য করে পায়ে হেঁটে স্কুলের কাছে এসে নদী পাড় হতে হয় এক বাঁশে ভর করে।

বর্ষাকালে ভরসা খেয়া ঘাটের একটি মাত্র ডিঙ্গি নৌকা, আর শুকনো মৌসুমে একটি বাঁশে চড়ে পারাপার। এমন বিড়ম্বনায় চলছে যুগ যুগ ধরে। একই কারণে উপস্থিতি কম বলে লেখাপড়ায় ব্যাঘাত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আখতার, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিকা আখতার, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আভা মুনিসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানায়, নদীর উপর কোনও সাঁকো নাই বলে তারা ঠিক মতো স্কুলে আসতে পারে না। নদীতে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পাড় হওয়ার সময় অনেকে পা পিছলে পড়ে গিয়ে বই খাতাসহ সব ভিজে যায়।

মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান জানান, মুরারীপুর, পাইকপাড়া, গোবিন্দপুর ও গঙ্গা দাশপুর, এই ৪টি গ্রামের ১টি গ্রামে স্কুল। এখানে নদী পারাপারের কোনও ব্যবস্থা নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিস, এলজিইডিসহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে কোনও ফল পাইনি। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে খুবই অসুবিধা হয়। এর ফলে স্কুলের উপস্থিতি কমে যায়। আমরা বেশি হলে একটা বাঁশের ব্যবস্থা করে দিতে পারি।

মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রণব চন্দ্র মণ্ডলসহ স্থানীয়রা জানান, শুধু এই স্কুলের শিক্ষার্থীরাই নয়, আশপাশের গ্রামগুলোর শত শত শিক্ষার্থী কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে। এছাড়া এখানকার সাধারণ মানুষরা জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন শহর-বন্দরে একই পথ ধরে যাতায়াত করছেন ওই একটি বাঁশেই ভর করে। তাই সরকার যদি ব্রিজটি নির্মাণ করে দেয় তাহলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ার পাশাপাশি অঞ্চলের মানুষের চলাফেরার সুবিধা হবে।

এ ব্যাপারে জয়পুরহাট জেলা সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।

এ ব্যাপারে সরকারি নির্মাণ কাজের বাস্তবায়নকারী সংস্থা স্থানীয় এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর ব্রিজটির নির্মাণ সম্ভব হবে বলে জানান জয়পুরহাট এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এফ এম খায়রুল ইসলাম।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh