• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ফুলে-ফলে রঙিন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ১৭ বিঘা জমি

শিপলু জামান, ঝিনাইদহ

  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৪৫
বাগান থেকে জারবেলা ফুল তুলে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। ছবি: আরটিভি অনলাইন

ফুলের রাজধানী খ্যাত ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে জারবেরা ফুলের। কালীগঞ্জে নতুন অতিথি এখন জারবেরা ফুল। শুধু জারবেরাই নয় পাশাপাশি গ্লালোডিয়াস, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ, ভুট্টা ফুল, লিলিয়াম ও স্ট্রবেরী ফল চাষে নজর কেড়েছে টিপু সুলতানের বাগান। নিজের প্রায় ১৭ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন এই ফুলের বাগান। এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানেও পাঠানো হচ্ছে এই ফুল।

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, ২১ শে ফেব্রুয়ারি ও পহেলা ফাল্গুন- এই তিন দিবসকে সামনে রেখে প্রায় অর্ধ-কোটি টাকার ফুল বিক্রি করার আশা তার।

শুধু ফুল বিক্রিই নয় দুর-দূরান্ত থেকে অনেকে এই বাগান দেখতে আসেন। প্রায়ই বিকেলে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান ছবি তুলতে। পাশাপাশি ফুল কিনতে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের জুন মাসে প্রায় তিন বিঘা জমিতে প্রথম জারবেরা ফুলের বীজ রোপণ করেন ফুলচাষি টিপু সুলতান। বীজ আনা হয় ভারত থেকে। আর ফুল ক্ষেতের উপর ছাউনি দিতে একই দেশ থেকে আমদানি করা হয় বিশেষ ধরনের পলিথিন। যা তৈরি হয় ইউরোপের দেশগুলোতে। রোপণের তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। একটি গাছ একাধারে দুই থেকে তিন বছর ফুল দেয়।

নিজের চন্দ্রমল্লিকা ফুলের বাগানে ফুল পরিচর্যা করছেন ফুলচাষি টিপু সুলতান। ছবি: আরটিভি অনলাইন

চলতি বছর এই উপজেলার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ করা হয়েছে। যে কারণে এ এলাকাটি মানুষের কাছে ফুল নগরী বলে পরিচিত। বিদেশি জাতের এই জারবেরা ফুল লাল, সাদা, হলুদ ও গোলাপিসহ ৮টি বাহারি রঙের হয়ে থাকে। তবে এই ফুলের কোনও গন্ধ নেই। বিদেশি জাতের এই ফুলটি ক্ষেত থেকে তোলার পরও ১০ থেকে ১৫ দিন তাজা থাকে। যে কারণে বাজারে এই ফুলের চাহিদা বেশ।

ফুলচাষি টিপু সুলতান জানান, ২০১৬ সালের জুন মাসে ভারত থেকে বীজ সংগ্রহ করে প্রথম ৯৬ শতক জমিতে রোপণ করি। এরপর তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। বীজ রোপণ, ক্ষেতের চারপাশে বাঁশের বেড়া স্থাপন, উপরের ছাউনি, সার ওষুধ ও শ্রমিক খরচসহ এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এই ফুল পরিচর্যা করার জন্য চারজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। বর্তমানে ১৭ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফুল ও ফলের চাষ করছি।

তিনি আরও জানান, গত ছয় মাসে ২০ লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি করেছি। আর এখন বাগান থেকে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার ফুল সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি ফুলের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা। চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন এই ফুল ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।

ফুলচাষি টিপু সুলতানের ফুলের বাগানে জারবেলা ফুল ফুটেছে। ছবি: আরটিভি অনলাইন

কৃষিবিদ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জারবেরা ফুল চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। বছরের যেকোনও সময় চাষ করা যায়। শীত মৌসুমে উৎপাদন বেশি হয়। এছাড়া দেশের বাজারে এই ফুলে দাম ও চাহিদা বেশি। তবে এই ফুল লাভজনক হলেও খরচ বেশি হওয়ায় চাষ করতে পারছেন না সাধারণ কৃষকরা।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, জার্মান পরিবেশবিদ ডাক্তার ট্রগোট জারবের নামানুসারে ফুলটির নামকরণ করা হয়। জারবেরা ফুল চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। টিপু সুলতান একজন সফল ফুল চাষি। তিনি বিভিন্ন ফুল ও ফলের চাষ করেন। তাকে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হয়। এবার কালীগঞ্জে ৩৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফুলের চাষ করা হয়েছে।

এজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh