• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ফুলই অলংকারকাঠি গ্রামের অলংকার

শেখ রিয়াজ আহম্মেদ নাহিদ, পিরোজপুর

  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৫২

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার অলংকারকাঠি গ্রামের নার্সারিগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল ও ফুলের চারা চাষ হচ্ছে। আর এই চাষের প্রসারতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দাবি করছেন।

সরেজমিনে অলংকারকাঠি এলাকার ফুলের নার্সারিগুলো ঘুরে মনে হয় সারি সারি হলুদ, লাল, কমলা ও সাদা রঙের দৃষ্টিনন্দন কার্পেট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে মাঠের পর মাঠ। চারদিকে শুধু ফুল আর ফুল। এই ফুল ক্ষেতের মাঝ দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে স্বরূপকাঠি-বরিশাল-ঢাকা সড়ক। ফুলের এই বাগান দেখতে দর্শনার্থীরা প্রতিটি নার্সারিতে প্রচণ্ড ভিড় করে। যা সামাল দিতে মালিকদের হিমসিম খেতে হয়।

বাধ্য হয়ে নার্সারি মালিকরা লিখে রেখেছেন এই এলাকায় প্রবেশ, ছবি তোলা ও ফুল ছেড়া নিষেধ। এরপরেও অসচেতন দর্শনার্থীরা প্রতিদিন ফুল ও চারা নষ্ট করে ফেলে।

পরশমনি নামের এক দর্শনার্থী জানান, সুযোগ পেলেই তিনি ওই এলাকায় ছুটে আসেন। এখানকার মনোরম দৃশ্য দেখে মন আর বাড়ি ফিরে যেতে চায়না।

এই এলাকার সমাজসেবক মহিবুল্লাহ বলেন, সঠিক পরিচর্যা করা গেলে এই এলাকাটি একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হবে।

শুধু অলংকারকাঠি গ্রাম নয় উপজেলার আকলম, সুলতানপুর, সঙ্গীতকাঠি, পানাউল্লাপুর ও আরামকাঠিসহ ১০-১২টি গ্রামে ফুলের চাষ হচ্ছে।

অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ফুল চাষের মৌসুম। প্রায় ৬০ বছর ধরে স্বরপকাঠিতে বনজ, ফলদ ও ওষধি চারার কলম উৎপাদন করে বাণিজ্যিকভাবে কেনাবেচা চলে আসছে। একটা সময় ফুল ও ফুলের চারার চাষ শুরু করেন চাষিরা। প্রথম দিকে সল্প পরিসরে ফুলের চাষ করেন নার্সারি মালিকরা। দিন দিন ফুলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ৭-৮ বছর ধরে এখানে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ শুরু হয়েছে।

স্বরূপকাঠি উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক নার্সারিতে ফুল ও ফুলের চারার চাষাবাদ হচ্ছে। এসব নার্সারিতে ডালিয়া, কসমস, সালবিয়া, স্টার, জিনিয়া, সূর্যমুখী, ক্যাপসিক্যাপ, ক্যাবিস্ট, গ্যাজোনিয়া, ক্যারোনডোনা, স্যালোসিয়া, রজনীগন্ধা, গ্যালোডিয়া, নয়নতারা, চন্দ্রমল্লিকা, ইনকাগাঁদা, স্নুবল, গোলাপসহ নানান প্রজাতির ফুলের চাষ হচ্ছে।

ফুল চাষ করে এসব গ্রামের অনেকেই আজ স্বাবলম্বী। ফুল ও ফুল চারা চাষাবাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রায় তিন হাজার শ্রমজীবী মানুষ জড়িত।

পাইকাররা ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতিদিন এখান থেকে নানা জাতের ফুল, চারা ক্রয় করে পিকআপভ্যান, ট্রলার ও নৌকায় করে ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, ফরিদপুর, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন হাটে নিয়ে বিক্রি করেন।

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আদর্শ নার্সারির মালিক মো. আব্দুস সালাম হাওলাদার আরটিভি অনলাইনকে বলেন, এখানকার নার্সারিগুলো থেকে প্রতি মাসে গড়ে আনুমানিক ৪-৫ লাখ টাকার ফুল ও ফুলের চারা বিক্রি হয়। চলতি মৌসুমে ২-৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করছে নার্সারি মালিকরা।

ছারছীনা নার্সারির মালিক মো. জাহিদ হোসেন পলাশ আরটিভি অনলাইনকে জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ক্রেতাদের পাশাপাশি খুচরা ক্রেতারাও ফুল ও চারা নিতে আসেন। বর্তমানে তার নার্সারিতে প্রায় ২৫-৩০ প্রজাতির ফুলের চারার চাষ হয়। এর মধ্যে গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা ও গোলাপ ফুলের চাহিদা বেশি।

বৈশাখী নার্সারির মালিক মো. শাহাদত হোসেন আরটিভি অনলাইনকে জানান, যশোর ও বগুড়া থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের বীজ ও চারা আমদানি করা হয়। তবে এ ব্যবসার পুঁজির জন্য বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে লোন নিতে হয়।

তিনি ফুলের চাষাবাদকে আরও প্রসারিত করার জন্য সরকারি সহযোগিতাসহ সুদমুক্ত ব্যাংক লোন দেওয়ার দাবি জানান।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রিফাত সিকদার আরটিভি অনলাইনকে বলেন, এখানকার ফুল চাষিদের আর্থিক কোনও সহায়তা প্রদান না করা হলেও প্রযুক্তিগত কিছু পরামর্শ দেয়া হয়।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধির আহ্বান জানালেন চীনের কালচারাল কাউন্সিলর 
নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্যকে ফুলেল শুভেচ্ছা বিএসএমএমইউ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের
ইউটিউব দেখে ব্যাংক ডাকাতি শেখেন আরিফুল
সেনবাগে সাইফুল আলম দিপুসহ চেয়ারম্যান পদে ১০ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল
X
Fresh