• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা ভূমিকা রাখছেন দেশের অর্থনৈতিক ধারায়

মারুফ রেজা

  ০৯ মে ২০২২, ১৫:৩১

ঘর আর জমি পাওয়ার মাত্র বছর দেড়েকের মাথায় পরিবর্তনটা চোখে পড়ার মতো! জীবনের দীর্ঘ সময় যারা ঠিকানাবিহীন আর উদ্বাস্তু পরিচয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন; আজ তারাই নিজেদের কর্মদক্ষতা দিয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছেন দেশের অর্থনৈতিক ধারায়। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ঘরহীন মানুষের ঘর দেওয়ার কর্মসূচি শুরু হয় গেল বছরের শুরুতে; প্রথম দুই দফায় সোয়া লাখের বেশি পরিবার পায় সে সুবিধা।

দেখতে দেখতে মাস খানেকের মধ্যেই সবজির ভালো ফলন দিয়েছে মর্জিনা খাতুনের ছোট্ট টিনের চালায়।

ছোট্ট উঠোনটিতে যতটুকুই সবজি ফলে তাতে চলে যায় তিন পেটে সংসার। আবার বিক্রি করে বাড়তি খানিকটা আয়ও হয় তার।

বছর ১৫ আগে মর্জিনা খাতুনের যে স্বপ্ন হারিয়ে যায় উত্তাল যমুনায়, ভিটেমাটি পাওয়ার পর একটু একটু করে সে স্বপ্ন ফিরছে এতদিন পর।

মর্জিনা বলেন, সবজি গাছ লাগিয়েছি। এখন তাতে সবজি ধরেছে। আরও কয়েকটা গাছ লাগাব। এখন নিজস্ব জায়গা হয়েছে, গাছাগাছালি লাগিয়ে নিজের কর্ম করে খাব।

সিরাজগঞ্জের এই খোকশাবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের, কমবেশি সব মানুষের জীবনের গল্পই এক। জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে উদ্বাস্তু পরিচয়ে। সরকারের সহায়তায় ঘর আর জমি পাওয়ার পরের গল্পটা প্রত্যেকে সাজিয়েছেন নিজেদের মতো করে।

এক সুবিধাভোগী নারী বলেন, লাউ গাছ লাগিয়েছি। নিজের জমিতে নিজের মতো করে গাছ লাগাতে পারা একটা আনন্দের বিষয়।

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চর বাঁশবাড়িয়ার এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের গল্পটা আরও খানিকটা আশা জাগানিয়া। এখানকার স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় নারীরা নিচ্ছেন উদ্যোগী হওয়ার নানা প্রশিক্ষণ। ফলে পুরুষের সঙ্গে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরাও।

এক নারী বলেন, অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। ঘর পেয়েছি। সরকার প্রশিক্ষণ দিয়েছে। মেশিনটা পেয়ে কাজ করতে পারছি।

আরেক নারী বলেন, আমরা যারা ঘরে বসে থাকি, কাজ-কর্ম নাই, তারা এই কাজ করলে সংসারে কিছু আয়-উন্নতি হয়।

কেবল উদ্যোগী নয়, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে হচ্ছে ঐক্যের সমিতি, গল্প শোনা গেল ঈদের পর নতুন কিছু উদ্যোগ নিয়ে আসারও।

কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা সুলতানা বলেন, দ্বিতীয় ধাপের ৩২টি ঘর ছিল। এই ৩২টি ঘরের মধ্যে ৩২ জন নারীকে নিয়ে একটি সমবায় সমিতি গঠন করেছি। সমবায় সমিতি গঠন করার পরে ৩২ জনকে আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি। স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির প্রশিক্ষণ। আশা করছি তারা ঈদের পরেই উৎপাদনে চলে যাবে।

দেশের মোট ৯ লাখ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের আওতায় আনার যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার; তিন দফায় এখন পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন হয়েছে প্রায় পৌনে ২ লাখের বেশি পরিবারের।

সঠিক পরিকল্পনা আর খানিকটা সহযোগিতার মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকেও যে অর্থনীতির মূল ধারায় নিয়ে আসা সম্ভব, তার অনন্য উদাহরণ হতে পারে এই আশ্রয়ণ প্রকল্প। গেল একটি বছরে যে পরিবর্তনটি দেখা গেল, তা সহজ ইঙ্গিত দেয় আগামী দিনের কাঙ্ক্ষিত বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার।

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির
অর্থনীতির সংকট কাটতে শুরু করেছে
‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষ পুষ্টিকর খাবার কাটছাঁট করছেন’
‘জনগণের আমানতকে যারা খেলা মনে করে তাদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত’
X
Fresh