• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

লঞ্চ নয়, যেন মরণফাঁদ! (ভিডিও)

শরিয়ত খান

  ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:১৮

মালিকদের অবহেলা আর নানা অব্যবস্থাপনায় চলছে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম লঞ্চ। বেশিরভাগ নৌযানের ইঞ্জিন রুমের পাশেই রাখা হয়েছে রান্নাঘর। ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি নিয়েই চলছে লঞ্চগুলো। আবার আগুন লাগলে নেভানোর জন্য দক্ষ জনবলও নেই। এমন বাস্তবতায় যাত্রীদের জীবন রক্ষায় প্রশিক্ষিত কর্মী দিয়ে লঞ্চ পরিচালনার বিকল্প নেই বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন।

লঞ্চ মালিকদের কাছে যাত্রীদের জীবনের যেন কোনো মূল্য নেই। মানুষের সেবা দেওয়াটা মূল লক্ষ্য হলেও এক-একটা লঞ্চ যেন মরণফাঁদ বানিয়ে রাখা হয়েছে।

ঢাকা-মুলাদী রুটে চলাচলকারী লঞ্চ রিসান-৭। বাইরের চাকচিক্য দেখে বোঝার উপায় নেই, ভেতরের অবস্থা কতটা ভয়াবহ।

ইঞ্জিন রুমের পাশেই রান্নার ব্যবস্থা, রাখা আছে বিশাল সাইজের গ্যাস সিলিন্ডার। একজন বলেন, গ্যাসের সিলিন্ডার আরও ছিল। গ্যাসগুলো আজকে থেকে বন্ধ, আমরা চুলা নামিয়ে দেব।

বিশ্রামের জন্য নির্ধারিত কেবিন বাদ দিয়ে, ইঞ্জিনরুমেই ঘুমানোর ব্যবস্থা করেছেন চালকেরা। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো, ইঞ্জিনের চারদিকেই রাখা আছে দাহ্য পদার্থ। ফলে আগুন লাগলে তার ভয়াবহতা কী হতে পারে, ঝালকাঠির লঞ্চ দুর্ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

বেশিরভাগ লঞ্চেরই এমন বেহাল দশা। ইঞ্জিন রুমের পাশে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা থাকলেও তা চালানোর কৌশল জানা নেই বেশিরভাগ স্টাফের। বড় লঞ্চগুলোতেও রয়েছে দক্ষ কর্মীর অভাব।

একজন বলেন, আমি কোয়ার্টার মাস্টার ওপরে থাকি, এখানে থাকে ড্রাইভাররা। তারা ইঞ্জিন রুমে থাকে, ইঞ্জিন যারা চালায়।

আরেকজন বলেন, মালিকেরা যেভাবে রাখে, আমরা তো চাকরি করি। সার্ভেয়ার সাহেব যখন আসে, তখন এটা দেখে। ওরা তো বলে না এই জিনিসগুলো আপনাকে বাইরে রাখতে হবে।

লঞ্চের দেখভালের দায়িত্বে যারা আছেন তারাও বেশ উদাসীন। কোনো প্রকার তদারকি ছাড়া দেওয়া হচ্ছে, ভয়েস অব ডিক্লেয়ারেশন। এ বিষয়ে সদরঘাটের টিআইয়ের সাথে কথা বলতে গেলে এক প্রকার পালিয়ে যান তিনি। এমনকি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি বিআইডব্লিউটিএ'র যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদিনও।

লঞ্চ যাত্রীদের জীবন রক্ষায় প্রশিক্ষিত জনবলের পাশাপাশি সমতলের মতও ঢাকা-দক্ষিণবঙ্গ রুটে পানিতেও ভাসমান আগুন নেভানোর জাহাজ রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, পার্মানেন্ট স্টাফদের অবশ্যই অগ্নি নির্বাপনের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা উচিত। এ ব্যাপারে তাদের সম্যক ধারণা থাকা উচিত যে কীভাবে সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে হয়। প্রথম অবস্থায় যদি অ্যাড্রেস করা হয় তাহলে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রেই অগ্নি নির্বাপন করা সম্ভব।

কারও গাফিলতিতে বরগুনাগামী লঞ্চ অভিযান-১০-এর মতো আর কোনো দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি মনে করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক।

এনএইচ/এসকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মঞ্চে ফিরছে ‘মাধব মালঞ্চী’
শ্যামবাজারে লঞ্চের আগুন নিয়ন্ত্রণে 
রাজধানীর শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চে আগুন
চাঁদপুরে লঞ্চে আগুন, আতঙ্কে নদীতে ঝাঁপ যাত্রীদের 
X
Fresh