• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মৌলভীবাজারে আমন ধান কাটার উৎসব শুরু

চৌধুরী ভাস্কর হোম, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

  ০৫ নভেম্বর ২০২১, ২০:৫৩
মৌলভীবাজারে আমন ধান কাটার উৎসব শুরু
ধান কাটচ্ছেন মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী লুৎফুল বারী, ছবি : প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারে শুরু হয়েছে আগাম জাতের রোপা আমন ধান কাটার উৎসব। আমন ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষানিরা। কম সময়ে অধিক ফলনে নতুন জাতের সোনালি ধান হাসি ফুটিয়েছে তাদের মুখে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষে কৃষকরা আগ্রহী হলে বছরে একই জমিতে তিনটি ফসল আবাদ করা সম্ভব। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন কৃষকরা।

করোনার এই সময়ে দেশের মানুষকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। আক্রান্ত হয়েছে কৃষক-কৃষানিরা। এর মধ্যেও মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর, বড়লেখাসহ সব উপজেলার বিভিন্ন জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে আগাম জাতের রোপা আমন ধান। সোনালি ধানের ঘ্রাণে ভরে আছে মাঠ।

খাদ্য নিরাপত্তায় চলতি মাসে ব্রি ৪, ব্রি ৭৫, ব্রি ৭১ সহ অন্যান্য আগাম ও উফশী জাতের ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। হাওরাঞ্চলে বোরো ব্যতীত অন্য কোনো ফসল হতো না, সেসব জমিতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রথম বারের মতো এবার রোপা আমন ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তবে বাজারে ধানের ন্যায্য মূল্য পাবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা।

জেলায় চলতি আমন মৌসুমে ১ লাখ ১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৪২৫ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে ব্রি ধান-৭৫ সহ অন্যান্য আগাম ও উফশী জাতের ধান ১ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। কম সময়ে ফলন এবং কম খরচে এই নতুন জাতের ধান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের খরিদপুর গ্রামের কৃষক মো. আবদুর রব।

তিনি জানান, কাউয়াদিঘি এলাকায় নিম্নাঞ্চলে কোনো বছরই বোরো ছাড়া অন্য কোনো ফসল চাষ করা সম্ভব হয়নি। এবার হাওরে পানি কম থাকায় কৃষি বিভাগের পরামর্শে হাইব্রিড ব্রি ধান ৭৫ চাষ করেছি ৫ বিঘায়। এ জাতের ধান চাষে সময় কম লাগে। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় বালাইনাশক স্প্রে করতে হয় না। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না থাকার কারণে ফলন ভালো হয়েছে।

রাজনগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে রাজস্ব খাতের অর্থায়নে বাস্তবায়িত খরিদপুর গ্রামের জিলু মিয়ার প্রদর্শনী প্লটে ধান কর্তন করা হয় ২৮ আশ্বিন।

কর্তনকৃত এক বিঘা জমিতে ধান হয়েছে ১৮ মণ। বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি মণ ধান ৯০০ টাকা। ধানের খড় বিক্রয় হয়েছে ৩ হাজার টাকা। জমিতে খরচ হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। এতে এক বিঘা জমিতে কৃষকের ৬ হাজার ৭০০ টাকা লাভ হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে সাবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন বলেন, সঠিক সময়ে সার-বীজ পাওয়াতে উচ্চফলনশীল জাতের ধান বাম্পার ফলন হয়েছে। কম সময়ে এই নতুন জাতের ধান চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে কৃষকরা।

এ ব্যাপারে রাজনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ ইফফাত আরা ইসলাম জানান, আমন মৌসুতে ব্রি ধান ৭৫ একটি উচ্চফলনশীল জাত। ২০ হতে ২৫ দিনের মধ্যে চারা রোপণ করতে হয়। এতে মাত্র ১১০ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যে এ ধান ঘরে তোলা যায়। এ ধানের কাণ্ড শক্ত বলে গাছ হেলে পড়ে না। শীষ হতে ধান ঝরে পড়ে না। জাতটি আগাম হওয়ায় রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কাজী লুৎফুল বারী বলেন, এ ধানের চাল মাঝারি চিকন ও সামান্য সুগন্ধিযুক্ত। রান্নার পর ভাত হতে সুগন্ধি ছড়ায়। এ কারণে চালের চাহিদা রয়েছে। এই ধানের জাতটি স্বল্পকালীন হওয়ায় কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিসহ সরিষা ও আগাম শাকসবজি চাষ করে লাভবান হবে। কৃষকদের মাঝে ব্যাপক চাহিদা থাকায় আগামীতে জেলায় এই জাতের ধানের চাষ বাড়বে।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জলকেলির মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় সাংগ্রাইন উৎসব শুরু
বান্দরবানে ‘সাংগ্রাইং’ উৎসব শুরু
বান্দরবানে নদীতে ফুল ভাসিয়ে বিজু উৎসব শুরু 
১৯ হাজার টাকায় বিক্রি হলো একটি ডিম
X
Fresh