• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ঝিনাইদহে সরকারি প্রাথমিকের ৯ শিক্ষকের খোঁজ নেই!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩:৩৬
ঝিনাইদহে সরকারি প্রাথমিকের ৯ শিক্ষকের খোঁজ নেই!
ঝিনাইদহে সরকারি প্রাথমিকের ৯ শিক্ষকের খোঁজ নেই

চাকরি পেয়ে ঝিনাইদহ জেলায় বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক এখন উধাও। মাসের পর মাস কর্মস্থলে তাদের কোন দেখা নেই। স্কুলে না আসায় বেতন বন্ধ থাকলেও চাকরিতে বহাল আছেন তারা।

তবে বিভাগীয় মামলা রুজুর মাধ্যমে ৩ জনকে ইতোমধ্যে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চলতি মাসে আরো কয়েকজন চাকরিচ্যুত হবেন বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান।

আবার অনেক শিক্ষকের মাথার উপর বিভাগীয় মামলার খড়গ ঝুলে থাকলেও তারা কর্মস্থলে আসেন না। ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত প্রাথমিকের এ সব শিক্ষকের তথ্য পাওয়া গেছে।

এর মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটী সরকারি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল মাওয়া থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। দীর্ঘদিন সেখানে তিনি স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছেন। কিন্তু এখনো তিনি কাগজ কলমে চাকরি করছেন। ঝিনাইদহ পৌরসভা এলাকার খান-এ খোদা সরকারি প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক উম্মে সালমা দীর্ঘদিন বসবাস করছেন কানাডায়। এই দুই শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে। জেলার এমন ৯ জন শিক্ষকের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

তারা কোথায় আছেন তার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। এসব শিক্ষকদের মধ্যে বেশির ভাগ দেশের বাইরে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
মহেশপুরের ঘুগরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসরিন আক্তার প্রায় ৭ মাস স্কুলে অনুপস্থিত। তিনি কোথায় আছেন তা বলতে পারেননি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু আহসান। তিনি জানান, নাসরিন আক্তারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। দ্রুতই তাকে চাকরিচ্যুত করার প্রক্রিয়া চলছে।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভেড়াখালী গ্রামের জেহের আলী জোয়ারদারের ছেলে মতিয়ার রহমান চাকরি করেন তাহেরহুদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি এক বছর ধরে স্কুলে আসেন না। কর্মস্থলে যোগদান করার জন্য একাধিকবার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার কোন হদিস নেই। তার মোবাইলটিও দীর্ঘদিন বন্ধ। একই উপজেলার দখলপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেনের মেয়ে শ্রাবণী ইয়াসমিন চাকরি করেন সোনাতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি দেশে থাকলেও কর্মস্থলে আসেন না। এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান বলে জানান হরিণাকুণ্ডু উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান।

শৈলকুপার ঝাউদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন ও কাতলাগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল পিএসসির সুপারিশকৃত নন ক্যাডারে যোগদান করেন। কিন্তু যোগদানের পর থেকেই উধাও। একদিনও স্কুলে আসেননি। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ২০১৮ সালের ২১ মার্চ থেকে ও আরেক প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন একই বছরের ১৮ জানুয়ারি থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।

কোটচাঁদপুর উপজেলার এঁড়েনদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সামছুন্নাহার শিমু এক বছর ধরে কর্মস্থলে নেই। কোটচাঁদপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার অসিতবরণ পালের ভাষ্যমতে, সামছুন্নাহার শিমু ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কোন যোগাযোগ রাখছেন না। শিমু অন্য কোথাও চাকরি করতে পারেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা খাতুন জানান, তার উপজেলায় দামোদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহিনুর রহমান দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

জেলাব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষকের কর্মস্থলে অনুপস্থিতের বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইতোমধ্যে আমরা বিভাগীয় মামলা দায়ের করে ৩ জনকে চাকরিচ্যুত করেছি। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে আরো কয়েকজন চূড়ান্তভাবে চাকরিচ্যুত হবেন। শৈলকুপায় দুইজন পিএসসির সুপারিশে নন ক্যাডারে প্রাথমিকে চাকরি পেয়েছিলেন। তাদের ব্যাপারে পিএসসির মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত এলে তারা চাকরি হারাবেন। যারা বিদেশে বা অন্য কোথাও চাকরি করছেন তাদের বেতন বন্ধ করে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। হয়তো ২-৩ মাসের মধ্যে তাদেরকেও চাকরিচ্যুত করা হবে।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ঝিনাইদহ টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের ইফতার 
ফেসবুকে শিক্ষকের কুরুচিপূর্ণ ভিডিও পোস্ট, তুমুল সমালোচনা 
ঝিনাইদহে মানবপাচার মামলায় ৩ জনকে যাবজ্জীবন 
আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
X
Fresh