• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

চামড়া কেনার প্রস্তুতি নেই, ভারতে পাচারের আশঙ্কা

রাশেদুজ্জামান, জয়পুরহাট প্রতিনিধি

  ২০ জুলাই ২০২১, ১৩:১৭
জয়পুরহাটে চামড়া কেনার প্রস্তুতি নেই, ভারতে পাচারে আশংকা
চামড়া কেনার প্রস্তুতি নেই

উত্তরাঞ্চলের চামড়ার বড় একটি অংশ কেনা বেচা হয় জয়পুরহাটে। করোনার প্রভাব আর ঢাকার ট্যানারী মালিকদের কাছে কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে থাকায় আসন্ন কোরবানির চামড়া কেনা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা। তাদের আশংকা চামড়া কিনতে না পাড়লে চামড়াগুলি চোরাকারবারীর হাতে চলে যাবে। দেশের কোটি কোটি টাকার চামড়া পাচার হয়ে যাবে ভারতে। এখনই প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপের দাবি চামড়া ব্যবসায়ীদের।

প্রতিবছর কোরবানির ঈদে জয়পুরহাটের আড়তগুলো থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার পশুর চামড়া ঢাকায় সরবরাহ করা হয়। তবে এ বছর জেলার চামড়ার আড়তগুলোতে নেই কোনো প্রস্তুতি।

কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা আরটিভি নিউজকে জানান, করোনার পাশাপাশি বর্তমান বাজার এমনিতেই লোকসান। তার ওপর ট্যানারি মালিকদের কোটি কোটি টাকার বাকি দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক চামড়া ব্যবসায়ী। এ অবস্থায় চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন চামড়া মালিক সমিতি।

জয়পুরহাট শহরের আরাফাত নগর, আমতলী,পাঁচবিবি উপজেলার রেলগেট, আক্কেলপুর উপজেলার হাজিপাড়া, এলাকায় চামড়ার আড়তগুলোতে প্রতি বছরের মতো এবার নেই কোনও প্রস্তুতি। এসব আড়তের চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্যানারি মালিকেরা গত কয়েক বছরের কোটি কোটি পাওনা টাকা এখনও পরিশোধ করতে পারেনি। এছাড়া প্রতি বছর ট্যানারি মালিকদের বেধে দেয়া দামের চেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামে চামড়া কেনায় বিপাকে পড়েছে মূল ব্যবসায়ীরা। সীমান্ত জেলা হওয়ায় চামড়া পাচারের আশঙ্কাও থাকে এখানে।

সেই সঙ্গে চামড়ার প্রধান কাঁচামাল লবণের দাম এবং শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই বকেয়া টাকা পরিশোধে ট্যানারি মালিকরা যেন উদ্যোগ নেন ও সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলোও যেন সহজ শর্তে লোন দেয়। এ বিষয়ে সরকারকে সুদৃষ্টিও কামনা করেন তারা।

জয়পুরহাটের চামড়া ব্যবসায়ী শাহিন আকতার আরটিভি নিউজকে জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তারা আড়তগুলো প্রস্তত রেখেছেন। তবে ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা টাকা না পাওয়ায় তার বিপাকে রয়েছেন চামড়া কেনা নিয়ে। এদিকে ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে না পারায় নতুন করে লোন দিচ্ছে না। ফলে আসন্ন ঈদে নতুন করে চামড়া কেনা মুশকিল হয়ে পড়বে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।

তিনি আরও জানান, ট্যানারি মালিকেরা সবসময় সিন্ডিকেট দিয়ে চামড়া কেনে এবং দাম পরিশোধের বেলাতেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অল্প করে টাকা দেয়, যা দিয়ে তারা ব্যবসা চালাতে পারে না।

তবে পাঁচবিবি উপজেলার চামড়া ব্যবসায়ী অহেদুল হোসেন ছোটন আরটিভি নিউজকে জানান, চামড়া পাচার হওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। পাচার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে এ শিল্প করোনার মধ্যেও লাভের মুখ দেখবে।

কোরবানির আগেই পুঁজি সরবরাহ করে চামড়া শিল্পকে সচল রাখবে ট্যানারি মালিকেরা এমন আশা ব্যক্ত করে জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি শামিম আহমেদ আরটিভি নিউজকে জানান, ‘দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি চামড়া শিল্পের প্রসারে কাঁচামাল লবণের দাম স্থিতিশীল রাখাসহ চামড়া পাচার রোধ ও বকেয়া টাকা পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে এ শিল্প টিকে থাকবে।

এদিকে চামড়া পাচার রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন উল্লেখ করে জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানান, জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে সীমান্ত এলাকা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২২ কিলোমিটার এলাকা তারকাটায় ঘেরা, বাকি ১৮ কিলোমিটার সীমান্তে তারকাটা নেই। চোরাকারবারিরা মূলত এই জায়গাগুলোকেই তাদের পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তাই এই জায়গাগুলো সবসময় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়।

জিএম

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জয়পুরহাটে ৩ শুটারগানসহ গ্রেপ্তার ১
জয়পুরহাটের মাঠে বাহুবলী টমেটো
জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ, একদিনেই হাসপাতালে ভর্তি ১৮৩
জয়পুরহাটে আগুনে দগ্ধ হয়ে শিশুর মৃত্যু
X
Fresh