• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

যমুনার পানি কমায় নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র ভাঙন

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা, আরটিভি নিউজ

  ১২ জুলাই ২০২১, ১৩:৪২
যমুনার পানি কমায় নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র ভাঙন
নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র ভাঙন

যমুনা নদীর পানি কমার সাথে সাথে সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও শাহজাদপুরের নদী তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ২০টি বসতভিটাসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। ভাঙন রোধে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা কাজে আসছে না।

সরেজমিনে জেলার চৌহালী ও শাহজাদপুরের ভাঙন এলাকা ঘুরে, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যমুনা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হওয়া জেলার চৌহালী উপজেলার নদী ভাঙন পানি কমার সময়ে তীব্র আকার ধারণ করেছে। উপজেলার খাসপুকুরিয়া থেকে বাগুটিয়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

গত ৩ দিনের ভাঙনে অন্তত ১৫টি বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বিনাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরবিনাইন কমিউনিটি ক্লিনিক, চরবিনাইন বাজার, হাফেজিয়া মাদরাসা ও চরণাকালিয়া তাঁত কারখানা। ভাঙন এলাকার মানুষেরা তাদের ঘড়-বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।

এদিকে ভাঙন রোধে শনিবার (১০ জুলাই) ভাঙন এলাকায় বালি-ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু জিওব্যাগ ডাম্পিংয়েও থামছে না ভাঙন।

স্থানীয় রমজান আলী আরটিভি নিউজকে জানান, একমাস হল শুরু হওয়া নদী ভাঙন কিছুতেই থামছে না, বসতবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছি। ভিটাটুকু ভাঙতে ভাঙতে নদীতে বিলীন হয়েছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনও কাজ শুরু করেনি। গত ৩ দিন আগে জিও বস্তা ফেলা শুরু হয়েছে। কিন্তু এতে কাজ হচ্ছে না।

চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ফারুখ সরকার আরটিভি নিউজকে জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরুতে শুরু হওয়া নদী ভাঙনে বিস্তীর্ণ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। দেরিতে হলেও ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরই মধ্যেই ভাঙন কবলিত মিটুয়ানি উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় নদী তীরবর্তী ২০০ মিটার ও চরবিনাইনে ১০০ মিটার এলাকায় জিও-ব্যাগ নিক্ষেপ করা হয়েছে।

এদিকে গত মে মাসে ভাঙনের শিকার হওয়া শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাচিলে বিপুল পরিমাণ জিও-ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা হয়। ওই এলাকায় রোববার (১১ জুলাই) রাত থেকে আবারও শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। একদিনেই জিও-ব্যাগসহ অন্তত ৫টি বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে ওই এলাকায় বিরাজ করছে ভাঙন আতঙ্ক।

ভাঙন এলাকার ইয়াছিন আলী আরটিভি নিউজকে জানান, ভাঙন রোধে বালি ভর্তি জিও-ব্যাগসহ বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন যাচ্ছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন খবর নিচ্ছে না। দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ভাঙন রোধ সম্ভব হবে না।

কৈজুরি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানান, পাচিলে নদী-ভাঙনে মানুষ সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি। ভাঙন রোধে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা জানতে পারছি না। নামমাত্র জিও-ব্যাগ নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এভাবে ভাঙন রোধ সম্ভব নয়। আমরা চাই স্বচ্ছতার সাথে কাজ করুক পানি উন্নয়ন বোর্ড। যাতে ভাঙন রোধ হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানান, পাচিলসহ ওই অঞ্চলে ভাঙন রোধে জরুরি কিছু কাজ করা হয়েছে। তারপরেও আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা আবারও জরুরি কাজ শুরু করবো ভাঙন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য।

নির্বাহী প্রকৌশলী আরও জানান, ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে কাজ শুরু হবে অক্টোবর-নভেম্বরে। ওই কাজটি করা গেলে আর ভাঙন থাকবে না। এর আগে ভাঙন রোধ করা কষ্টকর। এর পরেও চেষ্টা করা হচ্ছে।

জিএম/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
পানির এলাকায় সুপেয় পানির অভাব
বুধবার যেসব এলাকায় ১৫ ঘণ্টা থাকবে না গ্যাস
১৭ কবরের মাটি সরানো, এলাকায় চাঞ্চল্য
রাত থেকে যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না 
X
Fresh