গ্রাহকদের কাছে বিআরটিএ মানেই ভোগান্তি! (ভিডিও)
একে দালালের দৌরাত্ম্য, তার উপর লাইসেন্স না পাওয়ার শঙ্কা। গ্রাহকদের কাছে যেন বিআরটিএ মানেই ভোগান্তি। সহসাই কাটছে না তিন বছর ধরে আটকে থাকা ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জটিলতা। বিআরটিএ’র সঙ্গে নতুন চুক্তিবদ্ধ মাদরাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্সের খামখেয়ালিপনায় ভোগান্তিতে পুরনো ১৫ লাখ গ্রাহকের সাথে নতুন পাস করা গ্রাহকরা। মাসে ২ লাখ প্রিন্ট দেয়ার শর্তে কাজ নিলেও একবছরে তাদের সক্ষমতা মাত্র দুই থেকে আড়াই হাজার।
মো. মানিক হোসেন, লাইসেন্স এর পরীক্ষায় পাস করে আঙুলের ছাপ দিয়েছেন। এরপর তিন বছর কেটে গেলেও ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পাননি। ঢাকা থেকে তিনি এখন সিলেটের বাসিন্দা। তাই ছয় মাস পরপর রশিদের মেয়াদ বাড়াতে ঢাকায় আসতে হয়। তিনি বলেন, মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কবে পাব ড্রাইভিং লাইসেন্স সেটা আল্লাহ-পাকই ভালো জানেন।
এমন অভিজ্ঞতা আরও অনেকের। লাইসেন্সের জন্য চাকরি কিংবা বিদেশে যাত্রা থমকে আছে। আগের প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি শর্তের বেশি লাইসেন্স সরবরাহের পর চুক্তি বাতিল করলে সঙ্কটের শুরু হয়।
ভুক্তভোগী একজন বলেন, আজকে প্রায় দুই-আড়াই বছর হয়ে যাচ্ছে। একবার তারিখ দেয়, আসি। আসার পর আরেক তারিখ দেয়। ছয় মাস, সাত মাস, আট মাসও চলে যায়। চাকরি নিতে পারছি না লাইসেন্স ছাড়া।
অন্য একজন ভুক্তভোগী বলেন, ১৮ মে ছিল লাইসেন্স দেয়ার কথা। কিন্তু এখন এলাম লাইসেন্স দিলো না। লাইসেন্স দিয়ে আমি গাড়ির ব্যবসা করতে চাচ্ছি। কারণ এখন তো বেকার সমস্যায় ভুগতেছি। করোনার জন্য চাকরি নেই।
শতকোটি টাকায় ৫ বছরে ৪০ লাখ লাইসেন্স সরবরাহের শর্তে বিআরটিএ’র সঙ্গে চুক্তি করে মাদরাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন দেশে চুক্তি ভঙ্গের ঘটনায় সমালোচিত। শর্তানুযায়ী গেল বছর সেপ্টেম্বরে কার্ড দেয়া শুরুর কথা থাকলেও গত ফেব্রুয়ারি থেকে নামমাত্র বিতরণ শুরু করে।
বিআরটিএ’র খামখেয়ালির কারণে আবেদনকারীর আঙুলের ছাপ দেয়ার তারিখ মিলছে আট মাস পরে। ভোগান্তির এখানেই শেষ নয়, গ্রাহক সেবা বাড়াতে বিআরটিএ ঢাকায় অফিসের সংখ্যা বাড়ালেও মাদরাজ সিকিউরিটি একটি কার্যালয় করেছে মিরপুর পল্লবীতে। ফলে আঙুলের ছাপ দিতে সেখানেই যেতে হচ্ছে সবাইকে। এক বছরে সে অফিসও পুরো প্রস্তুত হয়নি।
ভুক্তভোগী একজন বলেন, তিনটি স্লিপ নিয়েছে। নেয়ার তিন-চার ঘণ্টা পর ফিরিয়ে দিয়েছে। বলে যে, আপনার ফাইল অফিসে আসেনি।
অনিয়মের ব্যাপারে মাদরাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স লিমিটেড-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সঙ্কট দ্রুত কেটে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার আরটিভি নিউজকে বলেন, আমাদের যেভাবে পরিকল্পনা, আমরা আশা করতেছি অগ্রাধিকার-ভিত্তিতে আগামী ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে সব সম্পন্ন করতে পারব।
মাসে আড়াই-তিন হাজার কার্ড সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি ৫ বছরে কিভাবে ৪০ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এসআর/পি
মন্তব্য করুন