• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ধ্বং'সের পথে শাল গজারি বন

কামাল হোসেন টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

  ৩১ মে ২০২১, ১৫:৪৭
ধ্বংসের পথে শাল গজারি বন!
ধ্বংসের পথে বন

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বনের শাল গজারি গাছ কাটা কোনোভাবেই থামছে না। তাই আজ ধ্বংসের পথে উপজেলার সংরক্ষিত বনের শাল গজারি। এ জন্য কিছু অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী, বন কর্মকর্তা এবং বনের ভেতর গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ কারাতকল মালিককে দায়ী করেছেন এলাকাবাসী।

রোববার (৩০ মে) সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার সরাবাড়ি বাজারের পাশে এক করাতকল থেকে ১১ টুকরো গজারি গাছ উদ্ধার করে বন বিভাগ।

রেঞ্জ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন করাতকল মালিক জাহিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আর জাহিদ বললেন, ওই গজারি গাছের মালিক রসুলপুর ইউনিয়নের কাজলা গ্রামের জাহাঙ্গীর।

তার করাতকলের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এ জন্যই প্রতি মাসেই বন বিভাগের লোকদের ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা দিয়ে আমরা এ কল চালাই। তবে রেঞ্জ কর্মকর্তা টাকার বিষয়টি ভিত্তিহীন উল্লেখ করেছেন। তার দাবি ঘাটাইলের বিশাল এই বনভূমির তুলনায় আমাদের জনবল অনেক কম।

ধলাপাড়া রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা ১৮০টি করাতকলের মধ্যে শতাধিক করাতকলের কোনো লাইসেন্স নেই। কলগুলো আবার স্থাপন করা হয়েছে বনভূমি ও সংরক্ষিত বনভূমির ভেতরে। এসব কলে প্রতিনিয়ত চিরাই করা হচ্ছে গজারি ও শাল। রাতের আঁধারে পাচার করা হচ্ছে কাঠ। ফলে দিন দিন উজাড় হচ্ছে সংরক্ষিত বনের শাল গজারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। দেখা দিচ্ছে পরিবেশের বিপর্যয়।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ধলাপাড়া রেঞ্জ অফিসের ৬টি বিটের আওতায় বনাঞ্চল রয়েছে ৮৮.৪৫ বর্গকিলোমিটার। ৪৯টি মৌজায় বনভূমি ও সংরক্ষিত বনভূমির পরিমাণ প্রায় ২৬ হাজার একর। বিশাল এই বনভূমিতে শাল গজারিসহ রয়েছে আকাশমণি, মেনজিয়াম, ইউক্যালিপটাস, সেগুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। বনের ভেতরে আবার কোথাও বন ঘেঁষে অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছে ১০১টি করাতকল। অথচ বন আইন অনুসারে বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে করাতকল স্থাপন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জানা গেছে এসব করাতকল উচ্ছেদের জন্য একটি তালিকা প্রায় এক বছর আগে জমা দেন বন কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা যায়, রেঞ্জ ও বিট অফিসের নাকের ডগায় করাতকল স্থাপন করে দিনরাত চলছে অবৈধ কাঠ চিরাই। গোল কাঠ চিরাই করলে আর বোঝার উপায় থাকেনা এটা কি গাছ ছিল।

অভিযোগ রয়েছে বন বিভাগের লোকদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া এসব করাতকল চলতে পারেনা। তারা নাকি দিনেও চলেন চোখ বন্ধ করে। কিন্তু রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান, যেখানেই উচ্ছেদ করতে যাই সেখানেই সরকার দলের বড় বড় নেতাদের ফোন আসে। মামলা এবং উচ্ছেদ না করতে দেয়া হয় চাপ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক করাতকল মালিক জানান, লাইসেন্স না থাকলেও বন কর্মকর্তাদের মৌখিক অনুমতি নিয়ে চলছে বেশ কিছু কল। বন বিভাগের লোকদের সাথে নিয়েই আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা করে আসছি।

করাতকল মালিক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আ. হালিম বলেন, অবৈধ করাতকলের কারণে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে বনও ধ্বংস হচ্ছে। বনের চোরাই গাছ চিরাই করে তারা কম দামে বিক্রি করতে পারে যা আমরা পারিনা।

এ বিষয়ে বন ও পরিবেশ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, এভাবে শাল গজারি কাটা হলে একদিন পরিবেশ তার ভারসাম্য হারাবে। অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসক থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কিছু উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকিগুলো উচ্ছেদের জন্য অনুরোধ করা হবে।

জিএম

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শেখ জামালকে গুঁড়িয়ে আবাহনীর বিশাল জয়
দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ২
টাইমের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা
ইরান নাকি ইসরায়েল, কে বেশি শক্তিশালী
X
Fresh