• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

লকডাউনের প্রভাবে দিশেহারা টাঙ্গাইলের তাঁতিরা

টাঙ্গাইল (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২০ এপ্রিল ২০২১, ১০:৪৫
লকডাউনের প্রভাবে দিশেহারা টাঙ্গাইলের তাঁতিরা
লকডাউনের প্রভাবে দিশেহারা টাঙ্গাইলের তাঁতিরা

তাঁতশিল্প টাঙ্গাইলের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প। দেশজুড়ে টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়ির যেমন সুখ্যাতি রয়েছে, তেমনি দেশের বাইরেও রয়েছে টাঙ্গাইলের তাঁতশাড়ির বেশ কদর।

টাঙ্গাইলের তাঁতপল্লী হিসেবে খ্যাত কালিহাতির বল্লা ও দেলদুয়ারের চন্ডী, পাথরাইল এলাকার তাঁতিরা ভোররাত থেকে শুরু করে গভীর রাত অবধি, মাকু আর শানার খটখট শব্দে মনের সুখে বুনে যায় বিভিন্ন প্রকারের তাঁতশাড়ি। নারীদেরও সময় কাটে চরকা ঘুরানোর কাজে। করোনাভাইরাসের প্রভাব আর লকডাউনের কারণে তাঁতপল্লীর সেই ব্যস্ততা নীরব-নিস্তব্দ হয়ে পড়েছে।

সারাবছর তাঁত মালিক ও শ্রমিকদের সময়টা সামান্য অবসরে কাটলেও, বৈশাখ আর ঈদুল ফিতরটা কাটতো চরম ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে। তবে এবারের পহেলা বৈশাখের আগেই লকডাউন শুরু হওয়ার কারণে থমকে গেছে সেই ব্যস্ততা। সামনে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শাড়ি বিক্রির ব্যাপারেও শঙ্কায় রয়েছে তাঁতিরা। দিশেহারা হয়ে পড়ছেন তারা।

সারাদেশে লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরাও শাড়ি নিতে আসছেন না তাঁতপল্লীতে। মজুদ শাড়ি নিয়ে দুশ্চিন্তা আর শঙ্কার মধ্যে পড়ছে তাঁত শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টাঙ্গাইলে তাঁত মালিক ৪ হাজারের অধিক। তাঁত রয়েছে ৩৪ হাজারের উপরে। এসব তাঁতে কাজ করে এক লাখের বেশি শ্রমিক।

তাঁত শ্রমিক মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী জানান, স্বাভাবিক সময়ে পহেলা বৈশাখ এবং ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তাঁতিদের যে ব্যস্ততা থাকতো, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লকডাউন এর কারণে আগের মতো কাজের চাপ নেই। সামান্য যে পরিমাণ কাজ হয় তাতে সেই পারিশ্রমিক দিয়ে জীবন চালানো কষ্টকর।

তাঁত শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত তুলসী রানী বসাক বলেন, লকডাউন এর কারণে বাইরে থেকে তাঁতিরা আসতে পারছে না। এ কারণে কাজের চাপ খুবই কম।
তাঁত শ্রমিক তারা মিয়া বলেন, করোনাভাইরাস এবং লকডাউন পরিস্থিতিতে আমাদের কাজের চাপ খুবই কম। জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়ছে।

তাঁত শ্রমিক মোতালেব মিয়া বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে লকডাউন এর কারণে সুতার আমদানি কম হওয়ায়, আমাদের কাজ করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে।
তাঁত শ্রমিক মোহাম্মদ সবুর মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, লকডাউন এর কারণে কাজও চলে না, মহাজনও আমাদেরকে টাকা দিতে পারে না। আমরা তাঁতিরা খুবই অসুবিধায় চলতেছি।

টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়ির ব্যবসায়ী তারাপদ শাড়িজ এর প্রোপ্রাইটর পলাশ বসাক বলেন, গতবছর করোনা এবং লকডাউন এর কারণে আমরা প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত। এবছর প্রত্যাশা ছিল আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবো। কিন্তু নতুন করে করোনাভাইরাস এর প্রভাব এবং লকডাউন এর কারণে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পহেলা বৈশাখ তো চলেই গেছে। সামনে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শাড়ি বিক্রি নিয়েও শঙ্কায় আছি। দিশেহারা হয়ে পড়েছে তাঁত এবং তাঁদের সাথে সম্পৃক্ত ছোট বড় ব্যবসায়ীরা। সরকারের কাছে প্রার্থনা করবো আমরা যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারি, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য।
এবিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, তাঁতশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত শ্রমিকদের সহযোগিতা করা হবে।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
টাঙ্গাইলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি, বিপর্যস্ত জনজীবন
দাঁড়িয়ে থাকা বাসে পিকআপের ধাক্কা, আহত ১০ 
দুই ঘণ্টা পর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট
X
Fresh