দুইজন ডাক্তার দিয়ে চলছে সাত লাখ লোকের চিকিৎসা
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। দ্বীপ উপজেলার ৭ লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল। এখানে জুনিয়র কনসালটেন্ট ও মেডিকেল অফিসারের পদ রয়েছে ২১টি।
তবে সেখানে কর্মরত রয়েছেন ৪জন। আবার এই ৪জনের মধ্যে একজন হলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, যিনি অফিসিয়াল কাজে সবসময় ব্যাস্ত থাকেন। অন্য আরও একজন মেডিকেল অফিসার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ছুটি নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এখন শুধু দুইজন ডাক্তার এই হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে রোগীদের দেখাশুনা করছেন। তবে গত বছর করোনা মহামারি শুরুর আগেই সরকারিভাবে এই হাসপাতালে ১৬জন ডাক্তার দেওয়া হয়েছিল। গত এক বছরে বিভিন্ন সময়ে এসব ডাক্তাররা চলে যাওয়ায় এই শুন্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, দুটি ওয়ার্ডে দুপুর পর্যন্ত ৭৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে পুরুষ ১৪, মহিলা ২৫ এবং শিশু ৪০জন। দুই জন মেডিকেল অফিসার সার্বক্ষণিক এই ৭৯ জন রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর ফলে হাসপাতালে আউটডোরে রোগী দেখা অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে।
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি নাছিমা আক্তার (৩০) বলেন, শরীর অসুস্থ্য হওয়ায় গত শুক্রবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রতিদিন সকালে একবার ডাক্তার আসেন। বিকেলে কিংবা রাতে তাদের দেখা পাওয়ায় মুশকিল। রাতে জরুরি প্রয়োজনে ডাক্তারদের ডাকলেও তারা আসেন না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নাজিম উদ্দিন বলেন, জরুরি ডাক্তার দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। আপাতত হাসপাতালের সার্ভিস দেওয়ার জন্য হরণী ও চানন্দী ইউনিয়নের কর্মরত ভাসানচরে থাকা একজন মেডিকেল অফিসারকে হাতিয়ায় নিয়ে আসা হচ্ছে। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা মোকাবিলা করার মতো কোনও অবস্থা নেই।
গত সোমবার (৫ এপ্রিল) সকালে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় আহত হন হাতিয়ার ম্যাগফাশন এলাকার আবুল বাসার (৪০)। সাথে সাথে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু হাসপাতালের সব সুযোগ সুবিধা থাকার পরেও তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে বাহিরে নেওয়ার জন্য বলা হয়। পরে জানতে পারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের দায়িত্বে থাকা চালক এনাম উদ্দিন জানান শুধু আবুল বাসার নয়, গত এক সপ্তাহে আরও অনুমানিক ১৫জন রোগীকে হাতিয়ার বাইরে ঢাকা ও জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল কিনা তা তার জানা নেয়।
এমআই/ এমকে
মন্তব্য করুন