• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ভাগ্নের চাপাচাপিতে মামাও অস্বাভাবিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন!

  ১৭ মার্চ ২০২১, ১৩:৩৩
ভাগ্নে ফাহাদ হোসেন (বাঁয়ে এমব মাঝখানে), মামা সিফাত (ডানে) #Mama is forced to bed with nephew's girlfriend!
আরটিভি নিউজের নিজস্ব ছবি

রাজধানীর কলাবাগানে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এক ছাত্রীর সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছিলো, সে ঘটনার পর থেকেই দেশে সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসি বা বিকৃত যৌনাচারের ভয়াবহ দিকটি উঠে আসে সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসির ভয়াবহতা দেশে আড়ালে আবডালে কতোটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তা আঁচ করা যায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরও একটি ঘটনার বিস্তারিত জানলে

যে ঘটনার সূত্রপাত প্রেম দিয়ে ওই প্রেমের প্রেমিক ফাহাদ হোসেন সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসিতে আসক্ত যে তার প্রেমিকাকে ব্লাকমেইলিং করে মামার সয্যাসঙ্গী হতে বাধ্য করে গোপনে ধারণ করা অবৈধ সম্পর্কের ভিডিও তার এই নোংরামির হাতিয়ার সুদূর কানাডায় অধ্যয়নরত এই ভাগ্নে তার মামার সঙ্গে নিজ প্রেমিকার শারীরিক সম্পর্কের লাইভ ভিডিও দেখে সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসিতে মেতে উঠতো ভাগ্নের চাপাচাপিতে মামাও এই অস্বাভাবিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এছাড়াও ভাগ্নে ফাহাদের তুলনায় বয়স কম হওয়ায় ছোটবেলায় ভাগ্নের দ্বারাই মলেস্টিংয়ের শিকার হয়েছিলেন মামা সিফাত

কেবল তা’ই নয় কানাডায় থাকা ওই প্রেমিক দেশে অবস্থানরত তার চাচাতো ভাই এবং বন্ধুর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে লাইভ ভিডিও করতে প্রেমিকাকে চাপাচাপি করে যাচ্ছিলো যে কারণে বাধ্য হয়ে রাজধানীর পল্লবী থানায় মামলা দায়ের করেন সেই প্রেমিকা এপরই অভিযান চালিয়ে ওই প্রেমিকের মামা সিফাতকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)

ঘটনার বিস্তারিত জানাতে গিয়ে ওই প্রেমিকা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) বলেন, ‘আমার বয়স তখন ১৩ বছর ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আমার জেএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছিল। বাবা-মায়ের সঙ্গে নতুন বাসায় উঠেছি। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন বাবা-মা আমার বিয়ের জন্য একটি ছেলে ঠিক করে রেখেছিলেন। এতো অল্প বয়সে সিদ্ধান্ত নেই আমি ওই ছেলেকে বিয়ে করবো না। কিন্তু বাবা-মা তাদের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। বাবা-মা কর্মস্থলে চলে গেলে পল্লবী থানা এলাকার ভাড়া বাসায় আমি নিঃসঙ্গ হয়ে যেতাম। তাই গল্প করার জন্য পাশের ফ্ল্যাটে যেতাম। ওই ফ্ল্যাটে একজন আপু থাকতেন। ওনার দূরসম্পর্কের খালাত ভাই ফাহাদ তাদের বাসায় আসা-যাওয়া করতো।

আমাকে দেখে ফাহাদের ভালো লেগে যায়। আপুর মাধ্যমে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব করে। আমি রাজি হইনি। ফাহাদ হাল ছাড়েনি। আপুর মাধ্যমে আমাকে বারবার প্রস্তাব করে যাচ্ছিলো। আপু আমাকে রাজি করানোর জন্য তাদের বাসায় গেলেই কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করতেন। ফাহাদের নানা প্রশংসা করে বলতেন একবার যেনো ফাহাদের সঙ্গে কথা বলে দেখি। যদি ভালো লাগে পরে না হয় সম্পর্কে জড়াবো।

একসময় আমার আর ফাহাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিছুদিন পর ফাহাদ তার মামার বাসায় আমাকে বেড়াতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। ওইদিনই সে গোপনে আমাদের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ও ছবি তুলে রাখে। ২০১৮ সালে ফাহাদ স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা চলে যায়। কানাডা যাবার সময় আমি আমার পরিবারকে বলেছিলাম একটা ভালো ছেলে আছে। আমার পরিবার রাজি হয়। কিন্তু ফাহাদ কানাডা চলে যাওয়ায় তখন বিয়ে করা সম্ভব হয়নি।

তার সঙ্গে কথা ছিল ২ বছর পরে দেশে এসে আমাকে বিয়ে করবে। কিন্তু সে কানাডা যাওয়ার পরপরই আমার ইনবক্সে কিছু ভিডিও ও ছবি পাঠায়। আমি চমকে উঠি। আমাকে বলে আমার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের পাসওয়ার্ড দেয়ার জন্য। আমি দিতে চাইনি। একপর্যায়ে আমাকে হুমকি দেয়। ছবি ও ভিডিও ফেসবুক ও পর্নোগ্রাফি সাইটে দিয়ে দেবে। এমনকি আমার ঘনিষ্ঠজনের কাছে পাঠাবে। তখন আমার ছবি ও নাম ব্যবহার করে ফাহাদ ভুয়া ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের আইডি খুলে। এসব আইডি থেকে আমার পরিচিতদের রিকুয়েস্ট পাঠায়। তার উদ্দেশ্য ছিল ভিডিও ও ছবি তাদের কাছে পাঠানো। পরে আমি বাধ্য হয়ে তাকে পাসওয়ার্ড দেই।

ওই পাসওয়ার্ড নিয়ে সে আমাকে বলে আমি তোমার ফিউচার হাজবেন্ড। দেশে এসে তোমাকে বিয়ে করবো। কিন্তু তার আগে আমার কিছু ফ্যান্টাসি আছে সেগুলো তোমাকে পূরণ করতে হবে। ফ্যান্টাসি কি জানতে চাইলে সে বলে, আমার মামা সিফাতের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে হবে আর আমি সেটা ভিডিও কলে দেখে মজা নেবো। আমি তার এই কথা মেনে নিতে পারিনি। আমার অপারগতার কথা শুনে ফের ভিডিও ও ছবির হুমকি দেয়। আমি তাকে অনুরোধ করি যাতে ভাইরাল না করে। সে যা বলবে- আমি তাই শুনবো। একপর্যায়ে আমি সিফাতের বাসায় যাই। শারীরিক সম্পর্ক করার সময় ফাহাদ কানাডা থেকে ভিডিও কলে সেই দৃশ্য দেখে স্কিন রেকর্ডার দিয়ে রেকর্ড করে রাখে। পরে সেগুলো আবার আমার কাছে পাঠায়। সিফাতের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে রেহাই মিলেনি আমার। তারপর ফাহাদ তার চাচাত ভাই ও আরো এক বন্ধুর বাসায় যাবার কথা বলে। এতে আমার রাগ বেড়ে যায়। তার মানসিক নির্যাতন আর এরকম উদ্ভট আবদার আমি আর মেনে নিতে পারছিলাম না। পরে তাকে জানিয়ে দেই তার যা মনে হয় তা করার জন্য। একসময় তার কাছে থাকা আমার ভিডিও ও ছবি বিভিন্ন পর্নোগ্রাফি সাইটে আপলোড করে দেয়। আমার বন্ধু ও বান্ধবীরা সেটি দেখে আমাকে বলে কি রে তোর ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন লিংকে দেখা যাচ্ছে। উপায়ন্তর না পেয়ে বিষয়টি আমার পরিবারকে জানিয়ে মামলার সিদ্ধান্ত নেই। পরিবারকে সব কথা খুলে বলি

জানা গেছে, ভুক্তভোগী কিশোরী বাদী হয়ে গত ৮ই মার্চ রাজধানীর পল্লবী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে তার প্রেমিক ফাহাদ হোসেন ও তার মামা সিফাতের বিরুদ্ধে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেন।

সেই মামলার প্রেক্ষিতে গত সোমবার (১৫ মার্চ) বিকালে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম অভিযুক্ত সিফাতকে গ্রেপ্তার করে। সিফাত ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) হোটেল ম্যানেজম্যান্ট ও ট্যুরিজমের বিভাগের শিক্ষার্থী। মামলার প্রধান আসামি প্রেমিক ফাহাদ হোসেন কানাডা থাকায় তাকে এখনই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ফাহাদ ও সিফাত সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার অতিরিক্ত কমিশনার কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, কিশোরী মেয়েটিকে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে সাইবার ব্ল্যাকমেইলিং করা হয়েছে। প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। উঠতি বয়সী মেয়েরাই বেশি শিকার হচ্ছে। কেউ জেনেশুনে আবার কেউ অসাবধানতাবশে। তাই স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়েদের সতর্ক হতে হবে। একান্ত ছবি ও ভিডিও আদান-প্রদানে সাবধান হতে হবে। যদি মনে হয় ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে যাবেন তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হবে। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী কিশোরীর সঙ্গে এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে ২টি মামলা হয়েছে। ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার ওপর আসামি কানাডায় আছে। তাকে আইনি প্রক্রিয়ায় আনার চেষ্টা করা হবে।

ডিবি’র ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) আশরাফ উল্লাহ আরটিভি নিউজকে বলেন, সিফাতকে প্রাথমিকভাবে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে জানিয়েছে, ফাহাদের কথা রাখতেই ওই কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। ফাহাদের কাছে ছোটবেলায় সিফাত নিজেও মলেস্টিংয়ের শিকার হয়েছিল। আমরা সিফাতের মোবাইল থেকে অনেক তরুণীর নুড ভিডিও ও ছবি পেয়েছি। অন্তত ৬ জন তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে ভিডিও ধারণ করেছে। তিনি বলেন, বিদেশে থাকায় ফাহাদকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। কিশোরীর সঙ্গে এই ঘটনার মূলহোতা ফাহাদ। পর্নোগ্রাফি সাইটে কিশোরীর নুড ভিডিও দিয়ে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করেছে। একই মামলায় নিশাত নামের এক নারীকেও আসামী করা হয়েছে বলে জানা গেছে তবে, এই ঘটনায় ওই নারীর ভূমিকা কি ছিলো তা অনুসন্ধান করে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ

ডিবি’র এই কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত সিফাত মূলত ফাহাদের ফুফাতো বোনের ছেলে সেই হিসেবেই তারা মামা-ভাগ্নে সম্পর্ক মামলাটির তদন্ত চলছে, আইন অনুযায়ী কানাডায় অবস্থানরত ফাহাদের বিষয়ে যে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হবে

কেএফ

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আরটিভিতে আজ যা দেখবেন
আরটিভির মাধ্যমে সংগীত পরিচালনায় নাম লেখালেন জিকো
প্রেডিক্ট এবং উইন গিফটস প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
আরটিভিতে আজ যা দেখবেন
X
Fresh