• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

৭ মার্চের রেসকোর্স ময়দানে পার্বত্যাঞ্চল থেকে গিয়েছিলেন যারা

ইয়াছিন রানা সোহেল, আরটিভি নিউজ

  ০৭ মার্চ ২০২১, ১৭:২০
Those who went from the highlands to the racecourse grounds on March 7th
৭ মার্চের রেসকোর্স ময়দানে পার্বত্যাঞ্চল থেকে গিয়েছিলেন যারা

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণই মূলত বাঙালি জাতির মুক্তির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান। আর স্বাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে লড়াইয়ের চূড়ান্ত ঘোষণা। বিশ্ব ইতিহাসে ৭ মার্চের ভাষণ এক ঐতিহাসিক ভাষণ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে বাঙালি জাতি ছিনিয়ে এনেছিল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে দেশের সর্বত্রই মিছিল-মিটিং বিক্ষোভ হয়েছিল। পাকিস্তানি সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকেও বেশ কয়েকজন ঢাকায় গিয়েছিলেন। রেসকোর্স ময়দানের সমাবেশ দেখা সেইদিনের ছাত্র যুবকদের অনুভূতি কেমন ছিল, তা তুলে ধরা হলো।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সদস্য ও ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আবছার বলেন, ‘৭০-এর নির্বাচনের পরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে লাগলো। দিন যত গড়াচ্ছিল পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছিল। ৩ মার্চ চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে একটি সমাবেশে যোগদান করি। সেখানে আওয়ামীলীগ নেতা এমআর সিদ্দিকী সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি বলেন, পরিস্থিতি ভাল নয়, যে যার মত নিরাপদ অবস্থানে থাকুন। বায়েজিদে গোলাগুলি চলছে। ওদিন আমি বাংলাদেশের দুটি পতাকা কিনেছিলাম। পাহাড়তলী আমার ফুফুর বাড়িতে কিছুক্ষণের জন্য পতাকা তুলেছিলাম। ৫ মার্চ ট্রেনে করে একা ঢাকা গিয়েছিলাম। ৭ মার্চ সকাল থেকে ঢাকার রাস্তায় মিছিল আর মিছিল। কোন মতে রেসকোর্স ময়দানে গিয়েছিলাম। দূর থেকে বঙ্গবন্ধুর সেদিনের ভাষণ শুনেছিলাম। ঐতিহাসিক সেই ভাষণ নিজে উপস্থিত থেকে শোনার পরম সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।’

সত্তর দশকের কাপ্তাই থানা ছাত্রলীগের নেতা মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমার বড় ভাই ডাক্তার মো. শাহ আলম ছিলেন চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে অন্যতম। বড় ভাই ডা. শাহ আলমের সাথে ডা. মাহফুজ, এস এম ইউসুফ, ইন্দু নন্দন দত্তের নির্দেশে ও পরামর্শে কাপ্তাই ছাত্রলীগের কার্যক্রম চলতো। ৭০-এর নির্বাচনের পরে যখন পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে পড়ছিল, তখন আমরাও কাপ্তাইয়ে আওয়ামীলীগের সাথে মিছিল মিটিং করতাম। ৭ মার্চের ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে যাওয়ার ব্যাপারে চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ নেতারা আমাদের সংগঠিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কাপ্তাই থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদশার নেতৃত্বে আমি, কাশেম, হিরা, রমজান আলীসহ আমরা বেশ কয়েকজন গিয়েছিলাম। চট্টগ্রাম থেকে রাতে ট্রেনে করে রওনা হলাম। সকালে কমলাপুর স্টেশনে নেমে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে রেসকোর্স ময়দানে গিয়েছিলাম। আমরা মঞ্চের কাছাকাছি বসেছিলাম। খুব কাছ থেকেই বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুনেছিলাম। বঙ্গবন্ধুর মত বিশ্ববরেণ্য নেতার ঐতিহাসিক সেই ভাষণ সরাসরি শোনা আমার জীবনের পরম সৌভাগ্য।’

এ এস এম হাসেম রাঙামাটির বাঘাইছড়ির বাসিন্দা। বাঘাইছড়ি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে দেখা প্রসঙ্গে এ এস এম হাসেম বলেন, ‘৭০-এর নির্বাচনের পরে মামার বাড়ি চাঁদপুরে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে মামাত ভাই আনোয়ার হোসেনের সাথে একদিন ঢাকা শহর দেখার জন্য ঢাকায় আসি। দেশের রাজনৈতিক উত্তাল পরিবেশ নিয়ে আমাদের তেমন কোনো মাথা ব্যথাই ছিল না। ঢাকা এসে শুনলাম বঙ্গবন্ধুর সমাবেশ আছে। কৌতূহল বশত আমি ও আমার মামাত ভাই আনোয়ার হোসেন সোহরাওয়ার্দীর মাঠে গেলাম। প্রচুর লোকের সমাগম। আমরা অনেক দূর থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনলাম। ওদিন রাতেই আমরা দুই ভাই চাঁদপুর ফিরে যায়। মূলত সেদিনের সমাবেশ ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণই ছিল ৭ই মার্চের ভাষণ। সেদিনই দূর থেকে প্রথম বঙ্গবন্ধুকে দেখা আমার।
জিএম

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বশেমুরবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে হিরা-মনিরুল
আওয়ামী লীগের আলোচনাসভা আজ
রোববার টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আ.লীগের কর্মসূচি
X
Fresh