• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ফলোআপ

ইরফান সেলিমের কক্ষে অস্ত্র রাখলো কে?

  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২২:১২
Who put the weapon in Irfan Selim's room?
ফাইল ছবি

এবার বিতর্ক শুরু হয়েছে পুরান ঢাকায় ইরফান সেলিমের বাসা থেকে উদ্ধারকৃত অস্ত্র নিয়ে। অস্ত্রটি দেশি নাকি বিদেশি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অন্যদিকে অস্ত্রটি কে বা কাহারা ইরফান সেলিমের বাসার ৪র্থ তলার ওই কক্ষে রেখেছে, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য জানাতে পারেনি পুলিশ! তবে মামলাটির চুড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্ত। এদিকে একই মামলা নিয়ে দু’টি দায়িত্বশীল জায়গা থেকে পাল্টাপাল্টি তথ্য পাওয়ায় তৈরি হয়েছে এক রকম জটিলতা।

রাজধানীর কলাবাগান সংলগ্ন ধানমন্ডিতে গাড়িতে ধাক্কা লাগা নিয়ে নৌবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সড়কে মারধরের সূত্র ধরে পুরান ঢাকার দাপুটে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম আলোচনায় উঠে আসেন। এরপরেই তার বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ওই অভিযানের পর রাজধানীর চকবাজার থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করে র‌্যাব। যে মামলার একমাত্র আসামি ছিলেন ইরফান সেলিম। মামলাটির এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) এর অভিযোগে উল্লেখ করা হয় ‘অবৈধ ভাবে বিদেশি পিস্তল নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধ’। মামলার আলামতে উল্লেখ করা হয় ‘১টি বিদেশি পিস্তল, যার ব্যারেলের একদিকে MADE IN USA ও অপর দিকে AUTO PISTAL লেখা রয়েছে।’

অন্যদিকে এই একই মামলা তদন্ত শেষে চকবাজার থানা পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। যে রিপোর্টে ‘ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের ধারার অপরাধ সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমাণে প্রমাণিত হয় নাই’ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট মামলা থেকে তার অব্যাহতি চায় পুলিশ। সিআইডি’র বরাত দিয়ে পুলিশ উল্লেখ করে ‘বর্ণিত আলামতটি (পিস্তল) স্থানীয়ভাবে তৈরি (Improvised) পিস্তল বর্তমানে সচল আছে।’

একই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ‘অত্র মামলার ঘটনাস্থল দেবীদাস ঘাট ২৬ নং চাঁন সর্দার দাদা বাড়ির মালিক বর্তমান ঢাকা-০৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম। অত্র মামলার এজাহারনামীয় একমাত্র গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্ত ইরফান সেলিম এই সংসদ সদস্যের ছেলে। অত্র মামলার বাদী এজাহার ও জব্দ তালিকায় মামলার ঘটনাস্থলটি ইরফান সেলিমের ব্যক্তিগত শয়ন কক্ষ উল্লেখ করলেও সরেজমিনে তদন্তকালে সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা যায়- অত্র মামলার ঘটনাস্থলটি ইরফান সেলিমের ব্যক্তিগত শয়ন কক্ষ নয়।’

রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘তাহার (ইরফান সেলিমের) রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট করার জন্য এবং সমাজে তার মান সম্মান ক্ষুণ্ণ করাসহ তাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে কে বা কাহারা জব্দকৃত অস্ত্র পিস্তলটি ইরফান সেলিমের বাসার ৪র্থ তলার অতিথি কক্ষে রেখেছেন তার কোন সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’

হাজী সেলিমপুত্র ইরফানের বিরুদ্ধে করা অস্ত্র আইনের র‌্যাবের মামলা ও পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে এমন ফারাক আকাশ-পাতাল। যে প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই মামলা থেকে অব্যাহতি পান ইরফান। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলছেন, ‘কোন প্রভাব নয় নিজেদের মতো কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সব সংস্থা স্বাধীনভাবেই তদন্ত কার্যক্রম চালায়।’

গত বছরের ২৫ অক্টোবর রাজধানীর কলাবাগানে সংসদ সদস্যের স্টিকার ব্যবহৃত গাড়ি থেকে নেমে হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমসহ আরও কয়েকজন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহম্মেদ খানকে মারধর করেন। পরে এই ঘটনায় ইরফান সেলিমকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ওই নৌ কর্মকর্তা। এরপরই অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় ইরফান সেলিমসহ তার সহযোগীদের। এরপর গত ২৮ অক্টোবর চকবাজার থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে র‌্যাব।

গত বছর ডিসেম্বরের শেষদিকে আদালতে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। সেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন বলা হয়, ‘ইরফান সেলিমের বাসায় অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমকে তদন্ত কর্মকর্তা নোটিশ দিলেও সাক্ষী দিতে আসেননি তিনি।’ ইরফানের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি পরীক্ষার জন্য সিআইডির ব্যালেস্টিক শাখায় পাঠানো হয়।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের পর গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) অস্ত্র মামলায় অব্যাহতি পান হাজী সেলিমপুত্র ইরফান সেলিম। তবে তার বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলাটি চলমান রয়েছে।

কেএফ/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২০ এপ্রিল)
বিদেশি শ্রমিকদের জন্য সুখবর দিল কুয়েত
পর্তুগালে বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমের স্থাপত্য প্রদর্শনী
X
Fresh