টঙ্গীতে নতুন আতঙ্কের নাম কিশোর গ্যাং (ভিডিও)
গাজীপুরের টঙ্গীতে নতুন আতঙ্কের নাম কিশোর গ্যাং। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোররা কখনও খেলার ছলে, আবার কখনও জনপ্রিয়তা পেতে গড়ে তুলছে গ্রুপ। আর বিভিন্ন কারণে এমন ছোট ছোট গ্রুপগুলো জড়িয়ে যাচ্ছে অন্তর্কোন্দলে। ছেলেমানুষি আর দুষ্টুমিগুলো রূপ নিচ্ছে মাদক সেবন, খুন ও ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় গাজীপুর সদর, পূবাইল, টঙ্গী, গাছা, বাসন থানাসহ রাজধানীর উত্তরার পূর্ব ও পশ্চিম থানার বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন- ভাইস্তা গ্রুপ, বিগ বস, ম্যাড বয়েজসহ নানান গ্রুপ তৈরি করে ছোট হয়েও তারা জড়াচ্ছে বড় বড় অপরাধে। পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে গ্যাং কালচার তৈরি করে ছোটখাটো বিষয়েও দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে এসব কিশোররা।
টিকটক বানানো ব্যক্তিরা বলেন, বাংলাদেশের অনেকে এটি করছে। আর আমরা তো কোনও অপরাধ করছি না। অনেক সময় বন্ধুদের মাঝে এসব নিয়ে ঝগড়া হয়।
সম্প্রতি গাজীপুরের টঙ্গীতে টিকটক ভিডিও তৈরির কথা বলে থেকে সপ্তম শ্রেণীর কিশোরীকে ঢাকায় নিয়ে তিনদিন আটকে রেখে দলবেঁধে ধর্ষণ করে এক টিকটক কিশোর গ্রুপ। এ ঘটনায় ঢাকার পৃথক দুটি স্থান থেকে দুজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।
৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হোসেন বলেন, আমাদের যুবক ভাইদের সাথে নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি বখাটে ছেলেদের সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য। আর যারা অপরাধ করবে তাদের আইনের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হোক।
গাজীপুর কাজীবাড়ীর মোড়ে সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ছবিতে দেখা যায়, গভীর রাতে রিকশা আরোহীদের থামিয়ে এভাবেই ছিনতাই করে কিছু উঠতি বয়স্ক তরুণ।
আলোর মিছিল শিক্ষা পরিবার এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আখতার হোসেন বলেন, সন্তানের মোবাইল চেক করুণ মাঝে মাঝে। আর তারা ফেসবুকে কি করছে তা খেয়াল রাখুন। তাহলে আমরা সন্তানদের রক্ষা করতে পারবো।
এছাড়া গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং এর হাতে খুন চুরি-ছিনতাইসহ নানান অপরাধে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ।
গাজীপুর সিটি কপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের শিশু-কিশোররা যেন অন্যায় কাজে জড়িত না হতে পারে, এ জন্য বাবা-মা যারা আছেন তাদের সতর্ক থাকতে হবে। ১২ থেকে ২০ বছরের যারা তারা যাতে বাবা মার কথার বাইরে না যায়।
টঙ্গীতে কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম্য কমাতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে জানিয়ে জিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ বলেন, কি কারণে তারা এসব অপরাধ কাজে জড়িত হচ্ছে, তা আমরা জানার চেষ্টা করছি। তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য কাউন্সিলিং করানোর কাজ চলছে।
তবে শুধু আইন দিয়ে নয় এমন অপসংস্কৃতি থেকে তরুণদের রক্ষায় সমাজের পাশাপাশি পরিবারের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
জিএম/এমকে
মন্তব্য করুন