• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের প্রতীক মাটির গোলা (ভিডিও)

  ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ১৫:২৬
The symbol of the lost tradition is the clay ball
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের প্রতীক মাটির গোলা 

ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারা বহন করা মাটির তৈরী গোলাতে সারা বছর ধান সংরক্ষণ করা যায়। মোঘল ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এর ব্যবহার হয়ে আসছে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার দেওয়ানপাড়ায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীর জন্য শুকনা খাবার মজুদ থাকতো এবং রাজাকার আলবদর বাহিনীর সহযোগিতায় পাকহানাদার বাহিনী তা লুটপাট করে গ্রামের অনেক গোলাতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।

মাটির তৈরী এসব গোলা শেষ হতে হতে আর মাত্র ৬টি টিকে আছে। যেখানে এসকল গোলার একটি গোলাতে ৫০০-৬০০ মন অনায়াসে ১ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এখনও গোলাগুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছেন পরিবারটি।

নিয়ামতপুর উপজেলার দেওয়ানপাড়ায় সাবেক তিনবারের সাংসদ প্রয়াত আজিজুর রহমানের বাড়ির সামনে তাদের বংশীয় ধারার চিহ্ন এসকল গোলা চোখে পড়ে সকলের। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চাল চিড়া চিনি ইত্যাদি শুকনা খাবার সংগ্রহ করে এই গোলাতে রাখা হয়েছিল। তখন মজুদকৃত চাল ও চিড়া রাজশাহী ক্যান্টনমেন্টে পাঠিয়েছিলেন তারা।

প্রয়াত সংসদ সদস্যের ছেলে সাইদুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাক হানাদার বাহিনী তাদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পর গ্রামের রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গোলাতে রাখা শুকনা খাবারগুলো লুটপাট করে নেয়। গোডাউন বা বর্তমান পদ্ধতির থেকেও অধিক ভালো থাকে এমন মাটির তৈরী এমন গোলাতে। একটি গোলায় বছরের অধিক সময় পর্যন্ত ৫০০-৬০০ মন ধান খুব ভালোভাবে থাকে।

প্রয়াত সাংসদের ভাতিজা জাহিদ হাসান বিপ্লব জানান, তার নিজস্ব একটি গোলা রয়েছে। তাতে তিনি অনায়াসে ৪৫০-৫০০ মন ধান রাখতে পারেন। যখন প্রয়োজন মনে করেন সেখান থেকে ধান বিক্রি করে তার প্রয়োজন মেটাতে পারেন। এছাড়া মাটি থেকে গোলার মূল স্তম্ভ কিছুটা উঁচুতে থাকায় তাতে ইঁদুর ধান খেতে পারে না। এতে করে ধানটাও ভালো থাকে। একটি গোলা তৈরিতে সব মিলিয়ে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে।

স্থানীয়রা জানান, ছোটবেলা থেকে তারা এই গোলাগুলোকে দেখে আসছেন। এর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কথা তারা তাদের বাপ-দাদাদের কাছে থেকে শুনে আসছেন। গোলা ব্যবহার যদি পুনরায় চালু করা হয়, তাহলে ধান সংরক্ষণ করে কৃষক তা নিজে মজুদ করতে পারবে। এতে করে তারা লাভবান হবেন।

নিয়ামতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ মনে করেন, গোলা ও মটকা ব্যবহারের প্রথা বজায় রাখা দরকার। কৃষক নিজে ধান মজুদ করতে না পেরে দাম কমের সময় সকল ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন। যদি সকল কৃষক বাড়ির সামনে এমন মটকা বা গোলা বানিয়ে তাদের ধান সংরক্ষণ করে রাখতে পারতো তারা তাদের প্রয়োজনের সময় তা বিক্রি করতে পারত। এতে করে কৃষক লাভবান হতো।

এমন গোলা পারিবারিক ঐতিহ্যের ধারক বহনের পাশাপাশি কৃষকের চিন্তামুক্তির একটি বিষয় হতে পারে। এই প্রথা বজায় রাখার পাশাপাশি এর ব্যবহারে উপকৃত হবেন কৃষকরা।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
২৭ বছর পর বাড়ি ফিরলেন হারিয়ে যাওয়া শাহীদা
শঙ্কা-প্রতীক্ষায় দিন কাটাচ্ছে ২ নাবিকের পরিবার  
ঈদে ইত্যাদিতে দেখা যাবে ভিন্নধর্মী নাচ
জমে উঠেছে ৫১৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা
X
Fresh